ঈদ একক কোনো আনন্দ নয়। এই আনন্দ সীমিত নয় নির্দিষ্ট সমাজ বা ভূখণ্ডের গন্ডিতে। ঈদ- মুসলিম উম্মাহর মহাসম্মিলন। কিন্তু অতিমারি করোনা এই মহাসম্মিলনে বেঁধে দিয়েছে সামাজিক দূরত্ব। তবে বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের এই বন্ধনে চির ধরাতে পারেনি।
সম্মিলনের অমলিন বার্তাকে করেছে আরো প্রবল। ঈদ-উল আজহার ‘বিলিয়ে দেয়ার আনন্দ’ এই সময়ে ঈদকে করেছে আরো তাৎপর্যময়। সঙ্কটের এই সময়ে উম্মাহর সম্মিলনের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে ‘অনলাইন’। সশরীরে উপস্থিত না থেকেও ঈদের আনন্দকে রঙিন রাখতে অনলাইনে কেনাকাটার পাশাপাশি ডিজিটাল ওয়ালেটের সহায্য যেমন নেয়া হচ্ছে, তেমনি ভার্চুয়াল সামাজিক মাধ্যমই এখন হয়ে উঠেছে কথোপকথন বা যোগাযোগের একমাত্র ভরসা। এন্টারটেইনমেন্ট থেকে এখন মৌলিক বা আবশ্যিক চাহিদায় রূপান্তরিত হয়েছে অনলাইন।
সরাসরি অংশ গ্রহণ না করতে পেরে লাইভ স্ট্রিমিং থেকে কাবার মোনাজাতে শরীক হয়েছেন অনেক ভগ্ন-হৃদয়ের হজ্জে অংশগ্রহণেচ্ছু মুসলিম। ডিজিটাল হাট থেকে কেরাবানির পশু কিনছেন নগরবাসী। গ্রামে বসেই পালা গরুটি বিক্রি করতে অনলাইন বেছে নিয়েছেন কেউ কেউ। কেউ অবার মোবাইল ওয়ালেট নিয়ে গোপনেই স্বজনের পাশে দাঁড়িয়েছেন। নিজ মহল্লা বা দেশেই পরবাসীর এই জীবনে ঈদের সম্মিলনের আনন্দ পুরোপুরি মেটাতে না পারলেও অনলাইনই এখন বিকল্প ভরসা হয়ে উঠছে এই জনপদে।
অতিমারি করোনা অফলাইনে পাঠিয়ে দিয়েছে বিমল আনন্দ
ঈদগাহে কোলাকুলিতে এখন ভয়। হাত মেলাতেও সঙ্কোচ। তবে ভার্চুয়াল দুনিয়ায় এসব ইমোজি ব্যবহার করেই এখন ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিচ্ছেন বয়স্করাও। এসএমএস, এমএমএস কমলেও হোয়াটসঅ্যাপ আর মেসেঞ্জারে ছড়িয়ে যাচ্ছে আতরের ঘ্রাণ; ঈদ মুবারাক। শেডিউল করে নেটিজেনদের অনেকেই বিভিন্ন ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে ঈদ আড্ডায় মিলিত হওয়ার আয়োজন শেষ করেছেন।
ইতোমধ্যেই মুঠোফোনে ভয়েস মেসেজ পাঠিয়ে দেশের মানুষকে ঈদের শুভেচ্ছা পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমন মুহূর্তে যারা ডিজিটাল মাধ্যমে সংযুক্ত নেই তাদেরকেও এই আনন্দে শরিক করার বিষয়টি এখন চলে এসেছে সবার সামনে। শুধু মুঠোফোন নয়, সবাইকে ইন্টারনেটে যুক্ত করার পাশাপাশি সামনে চলে এসেছে এখানে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন ও ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ। ইন্টারনেট সেবার পথে বাধা দূরকরার পাশাপাশি এই পথকে আরো কুসুমাস্তির্ণ করতে না পরালে আগামীতে সব উৎসব আনন্দতেই শঙ্কাকে সামাল দেয়া হয়ে পড়বে দূরুহ। আনন্দের পূর্ণতায় জায়গা করে নেবে রিক্তের বেদন।