অনলাইনে যুক্ত হবার দায় শিশুদের ওপর না চাপিয়ে ডিজিটাল যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় শিক্ষক ও অভিভাবকদেরকেও ডিজিটাল ডিভাইস বিষয়ে দক্ষতা অর্জনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারে প্যারেন্টাল গাইডেন্স প্রয়োগে অভিভাকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, দেশ যত ডিজিটাল হচ্ছে ডিজিটাল অপরাধ তত বাড়ছে ও ডিজিটাল নিরাপত্তার গুরুত্ব তত বাড়ছে। তবে শিশুদেরকে ডিজিটাল যন্ত্র থেকে বা ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন করা যাবে না। তাদের নিরাপত্তার জন্য প্যারেন্টাল গাইডেন্স অনুসরণের মাধ্যমে শিশুকে ডিজিটাল ডিভাইসে সম্পৃক্ত করতে হবে।
রবিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বেসরকারি সংস্থা ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স আয়োজিত শিশু সুরক্ষা প্রেক্ষাপট ও করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স সভাপতি ও দৈনিক ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমিমা হোসেন-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিটিঅরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, সমাজ সেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শেখ রফিকুল ইসলাম, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আনম আজিজুল হক, সেভ দ্য চিলড্রেন- এর পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন, এনসিটিবি সদস্য প্রফেসর মশিউজ্জামান ও প্রফেসর রিয়াজুল হাসান এবং ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স-এর নির্বাহী পরিচালক রোকসানা সুলতানা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
সংস্থার উপদেষ্টা আনোয়ারুল ইসলাম সিকদার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠান ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ইন্টারনেট নিরাপদ রাখতে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি ও উদ্যোগ তুলে ধরে বলেন, যত বেশি ডিজিটাল হচ্ছি ডিজিটাল নিরাপত্তা ঝুকি তত বাড়ছে। এই ব্যাপারে ইতোমধ্যে আমরা প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। এরই ধারাবাহিকতায় ২৬ হাজার পর্নসাইট ও ৬ হাজার জুয়ার সাইটসহ বিপদজনক সাইট গুলো বন্ধ করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমাদের কৃষ্টি ও সংস্কৃতি যাতে বিনষ্ট না হয় তা তাদেরকে মেনে চলতে অনেকটা সফল হয়েছি এবং ভবিষ্যতে এই ব্যাপারে আরও সুফল পাব বলে আশা করি।
সভাপতির বক্তৃতায় তাসমিমা হোসেন সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শিশুদের সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, নীরবতা আমাদের ভংগ করতে হবে। ইতোমধ্যে নীরবতা ভাংতে শুরু করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যম সুন্দর সিকদার শিশুদের নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে অভিভাবকদের সচেতনার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি সরকার, বিশেষত বিটিআরসি এবং ডাক ও টেলি যোগাযোগ বিভাগ ডিজিটাল নিরাপত্তা বিষয়ে যেসব কর্মকাণ্ড করছে তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরেন। তিনি জানান যে বিটিআরসি নিজেরা ডিজিটাল নিরাপত্তা সেল গঠন করেছে। বিটিআরসি ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর সাথে সর্বাত্মক যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। সিটিডিআর এর মাধ্যমে বিটিআরসি যেসব সাইট সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচার করছে সেইসব বন্ধ করছে। তিনি বলেন, সরকার শিশুদের নিরাপত্তা ও সচেনতা গড়ে তোলার জন্য সকল প্রকারের কাজ করে যাচ্ছে।
সংস্থার নির্বাহী পরিচালক রোকসানা সুলতানা ১৯৯৪ সাল থেকে শিশু সুরক্ষায় ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স-এর কর্মসূচি তুলে ধরে বলেন, আমরা নীরবতা ভাংগার সংস্কৃতি চাই । তিনি বলেন যে এই আলোচনা সভাটি সেই নীরবতা ভাঙ্গার জন্য আয়োজিত হয়েছে। এই জন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে তিনি উল্লেখ করেন।সভায় ব্রেকিং দ্য লাইলেন্সের পক্ষ থেকে একটি জরীপের তথাদি উপস্থাপন করা হয়।