গ্রাহকের স্বার্থে নয়, নিজেদের রাজস্ব স্বার্থে টেলিকমিউনিকেশন ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস (টিভ্যাস) ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। রবিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এমন দাবি করেছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন বা বামুগ্রাএ।
বিবৃতিতে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, গ্রাহকদের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে টিভ্যাস প্রতিষ্ঠান অনৈতিকভাবে অর্থ আদায়ের দায় বিটিআরসি কিছুতেই এড়িয়ে যেতে পারে না।
সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গতকাল কমিশন থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হলো তিনটি প্রতিষ্ঠানের (টিভ্যাস) বিরুদ্ধে কমিশন জরিমানা করেছে এবং আরো ১১টি প্রতিষ্ঠান বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা নেয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। হঠাৎ করে কমিশন কেন এ ব্যবস্থা নিল সেটি পর্যালোচনা করলেই দেখা যায় যে এসকল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কমিশন ৬.৫% রাজস্ব ভাগাভাগি এর অর্থ পেয়ে থাকে। অডিট রিপোর্ট জমা না দেওয়া ও ভাগাভাগি অর্থ না দেওয়ার কারণেই কমিশন মূলত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। অথচ গ্রাহকদের অভিযোগের বিষয়টি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়নি। এতে প্রতীয়মান হয় যে কমিশন তাদের রাজস্ব সংগ্রহ বিষয়টি মাথায় রেখে তদন্ত ও শাস্তির ব্যবস্থা নিয়েছে।’
কমিশনের সঙ্গে টিভ্যাস প্রতিষ্ঠানগুলোর অনৈতিক আর্থিক লেনদেনের সম্পর্ক রয়েছে। ফলে গ্রাহকদের অর্থ লুটপাটের দায় কমিশনেরা নিতে পারে না, এমন মন্তব্য করে বিবৃতিতে মহিউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে দাবি করতে চাই এসকল অনৈতিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের সাথে কমিশনের ভেতরে কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী জড়িত আছে কিনা সে বিষয়টিও তদন্ত করে দেখার। এবং আজ আবারো দাবি করে বলতে চাই গ্রাহকদের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে আদায়কৃত অর্থ গ্রাহকদের ফেরত দেয়া হোক। না হলে ভবিষ্যতে আমরা মহামান্য আদালত শরণাপন্ন হতে বাধ্য হবো।’
বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের এই নেতা আরও বলেন, ‘গ্রাহকদের দীর্ঘদিন যাবৎ অভিযোগ ছিল তার অজান্তেই কিংবা তার অনুমতি ছাড়াই তার মুঠোফোন থেকে টাকা কেটে নেয়া হচ্ছে। আমরাও এ বিষয়ে গ্রাহকদের তথ্য-উপাত্তসহ কমিশনের বিগত চেয়ারম্যান এবং বর্তমান চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করে বলেছিলাম অনৈতিক কার্যক্রম এর সাথে যুক্ত হয়েছে টেলিকমিউনিকেশন ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস। এ সকল প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের কোন প্রয়োজন নেই এমন দাবি করেছিলাম চেয়ারম্যানের কাছে। আমরা এও বলেছিলাম যে যদি কোনো গ্রাহকের এই ধরনের সার্ভিস এর প্রয়োজন হয় তাহলে স্বয়ং গ্রাহক নিজেই মোটো ফোন অপারেটরের কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করে সার্ভিস গ্রহণ করবেন।’
‘কিন্তু কমিশন তাদের কথার কোন মূল্য দেয়নি অভিযোগ করে তিনি বলেন, এমনকি কমিশন থেকে যখন বলা হল দুটি প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের অজান্তে ৪৫ও ৩০লক্ষ টাকা লুটপাট করেছে। আমরা কমিশনের কাছে আবেদন করলাম যে গ্রাহকদের টাকা গ্রাহকদেরকে ফেরত দেয়া হোক। এ ব্যাপারে আজ পর্যন্ত কমিশন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে আমাদের জানা নেই’, যোগ করেন তিনি।