বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -১ এর মাধ্যমে প্রত্যন্ত দ্বীপ, চর ও হাওরসহ দুর্গম অঞ্চলের সাথে ডিজিটাল বৈষম্য দূর করতে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানির সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সেনাসদর সিগন্যালস্ পরিদপ্তর ও আইটি পরিদপ্তর।
রোববার ওয়েবিনারে এই চুক্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো: আফজাল হোসেন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ লেঃ জেনারেল মো. সফিকুর রহমান, ওএসপি(বার), এসপিপি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড এর চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ প্রমুখ বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সিগন্যাল পরিদপ্তর এবং আইটি পরিদপ্তরের পদস্থ কর্মকর্তাগণ এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ও অধীন সংস্থাসমূহের প্রধানগণ সংযু্ক্ত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে দেয়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেছেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -১ এর মাধ্যমে প্রত্যন্ত দ্বীপ, চর ও হাওরসহ দুর্গম অঞ্চলের সাথে ডিজিটাল বৈষম্য দূর করার কাজ শুরু হয়েছে। তিনি স্যাটেলাইট যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, সম্প্রসারণ এবং ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি (বিএসসিএল) এই উভয় সংগঠনই যথাযথ অবদানের ক্ষেত্র সৃষ্টির মাধ্যমে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ ’বিনির্মাণের অগ্রযাত্রায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, এর মধ্য দিয়ে স্যাটেলাইট পরিচালনায় আমরা এক উত্তম সহযোগীকে সাথে পেলাম।
সেনাসদর, সিগন্যালস্ পরিদপ্তর ও আইটি পরিদপ্তরের সাথে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানির মথ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারককে ঐতিহাসিক মাইল ফলক আখ্যায়িত করে মন্ত্রী মোস্তাফ জব্বার বলেন, এটি আমাদের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে। দেশে কম্পিউটার বিপ্লবের অগ্রদূত জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -১ মহাকাশে উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ পৃথিবীর ৫৭তম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণকারি দেশ হিসেবে বিশ্বসভায় বাংলাদেশকে তুলে ধরেছেন। শুধু তাই নয় আমাদের মেধাবি ছেলেরাই দক্ষতার সাথে স্যাটেলাইট পরিচালনা করছে। উৎক্ষেপণের পর একটি বারের জন্যও সমস্যা হয়নি, সম্প্রচার বিঘ্নিত হয়নি বলে উল্লেখ করেন টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী।
মোস্তাফা জব্বার বলেন,, বিটিসিএল ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ডিজিটাল মহাসড়ক তৈরি করতে, ওয়ারল্যাস নেটওয়ার্ক তৈরিতে টেলিটক, দূর্গম এলাকায় নেটওয়ার্ক তৈরির জন্য স্যাটেলাইট এবং ব্যান্ডউডথ সরবরাহের জন্য সাবমেরিন ক্যাবল সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় করোনা ক্রান্তিকালে আমরা ঘরে বসে কাজ করতে পারছি। চিকিৎসা সেবা ডিজিটাল কানেকটিভিটির মাধ্যমে হচ্ছে। একমূহুর্তের জন্য সার্ভিস বিঘ্নিত হয়নি।
প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ এর দিকনির্দেশনায় ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে বাংলাদেশ বিশ্বে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, সমঝোতা স্মারকের আওতায় সেনাবাহিনীর সিগন্যাল কোরের কারিগরি জনবল উন্নত প্রযুক্তি সম্পর্কে ব্যবহারিক ক্ষেত্রে কাজ করার সুযোগ পাবে। একই সঙ্গে প্রশিক্ষণ, সেমিনার, কর্মশালার মাধ্যমে লব্ধ জ্ঞান আদান প্রদান সম্ভব হবে। এ সংক্রান্ত যাবতীয় গবেষণা ও উন্নয়নে সমন্বিত প্রচেষ্টার প্রতিফলন ঘটবে। উল্লেখ্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি স্যাটেলাইট হাব স্টেশন স্থাপন এবং নয়টি অটোট্রাকিং টার্মিনালস্টেশন স্থাপন প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন করেছে। যা পরিচালনার জন্য বিএসসিএল হতে প্রয়োজনীয়তরঙ্গ গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে। এই সমঝোতা স্মারকের আওতায় সেনাসদর, সিগন্যালস্ ও আইট পরিদপ্তর, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং বিএসসিএল তাদের নিজেদের দক্ষ জনবল কাজে লাগিয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে অত্যাধুনিক স্যাটেলাইট যোগাযোগ ব্যবস্থা দ্বারা উন্নত টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো বিনির্মাণে বিশেষ ভূমিকা সমঝোতা স্মারকের আওতায় সেনাবাহিনীর সিগন্যাল কোরের কারিগরি জনবল উন্নত প্রযুক্তি সম্পর্কে ব্যবহারিক ক্ষেত্রে কাজ করার সুযোগ পাবে। একই সঙ্গে প্রশিক্ষণ, সেমিনার, কর্মশালার মাধ্যমে লব্ধ জ্ঞান আদান প্রদান সম্ভব হবে। এ সংক্রান্ত যাবতীয় গবেষণা ও উন্নয়নে সমন্বিত প্রচেষ্টার প্রতিফলন ঘটবে।