বিগত সময় ৩টি শিল্পবিপ্লবে ব্যর্থ দেশগুলোর জন্য ৪র্থ শিল্পবিপ্লবের সময় বড় ‘বিপদ’ হয়ে উঠতে পারে বলে মন্তব্য করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন ‘ব্যবহারকারীদের সচেতনতা ও সতর্কতা গড়ে তোলা না হলে এই সুযোগ সবচেয়ে বড় গলার কাঁটা হয়ে উঠবে।’
শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত চতুর্দশ বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
অবশ্য এই ইন্টারনেট কাজে লাগিয়ে ৪র্থ শিল্প বিপ্লবে এগিয়ে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা আরো একটু বিস্ফোরণের অপেক্ষা করছে সরকার। কেননা এখন পর্যন্ত দেশে মোবাইলেই ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। শতকরা ৮০ ভাগের মতো। কিন্তু এটি হওয়া উচিত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট। দেশের প্রত্যন্ত ও ইন্টারনেটের সংযোগ পৌঁছতে না পারার জন্য তা হয়নি। আমরা আশাকরছি, আগামী ২০২১ সাল নাগাদ আমরা একটি সম্পূর্ণ কানেক্টেড বাংলাদেশ দেখতে পাবো। ইতিমধ্যে বিটিসিএল ১২০৯টি ইউনিয়নে ফাইবার অপটিক সংযোগ পৌঁছেছে। ২৬০০ ইউনিয়নে ইনফো সরকার ৩ এর অধীনে সংযোগ পৌঁছেছে। আরো ৭৭২টি ইউনিয়নে এসওএফ ফান্ডের মাধ্যমে সংযোগ পৌঁছাবে। ৪০টি দ্বীপ ও চরাঞ্চলে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের আওতায় ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছাবে।
সরকার ৫জি’র প্রস্তুতি নিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, পথনকশা তৈরি হয়েছে। এরমাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে মোবাইলে ৫জি সংযোগ যাত্রা শুরু করবে। ২০২৬ সালের মধ্যে ইউনিয়ন পর্যায়ে ৫জি সম্প্রসারণ করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সংখ্যা দেখে এতোদিন খুশি হলেও এখন আমরা যে বিপদ পেতে শুরু করেছি তা মোকাবেলা করা দুরূহ হয়ে পড়েছে। মুহূর্তের মধ্যে রামু, নাসিম নগর, বগুড়া, ভোলা, পদ্মাসেতুর কল্লার ঘটনা ও জিগাতলায় সেই চ্যালেঞ্জের দেখা পেয়েছি। আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে তা মোকাবেলার যে উদ্যোগ নিয়েছিলাম তাও এখন যথেষ্ট নয়। কেননা যাদের দ্বারা আমরা আক্রান্ত হই তাদের ওপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। বিশেষ করে আমেরিকায় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সারা পৃথিবীর জন্য এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে। তবে পরিস্থিতি কিছুটা বদলাতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই ইউরোপ ও আমেরিকার মতো দেশগুলো ইউটিউব ও ফেসবুককে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো শুরু করেছে।
একারণেই এক কোটি টাকা জরিমানার পরিবর্তে ফেসবকু, ইউটিউবের মতো প্রতিষ্ঠানকে বিলিয়ন ডলার জরিমানার বিধান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সংযোজনের পরামর্শ দেন মন্ত্রী।
বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের চেয়ারপর্সন হাসানুল হক ইনু’র সভাপতিত্বে প্রথম অধিবেশনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন এশিয়া প্যাসিফিক নেটওয়ার্ক ইনফরমেশন সেন্টার (অ্যাপনিক) ডিরেক্টর জেনারেল পল বায়রন উইলসন, আইএসপিএবি সভাপতি আমিনুল হাকিম, ফ্রেডরিক নোমান ফাউন্ডেশন ফর ফ্রিডম (এফএনএফ) কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. নাজমুল হোসাইন, বিআইজিএফ মহাসচিব মোহাম্মাদ আব্দুল হক অনু, প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অধিবেশনে সূচনা বক্তব্য দেন বিআইজিএফ পলিসি রিসার্চ ফেলো এএইচএম বজলুর রহমান। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিশেষজ্ঞ এস এম মোর্শেদ।