টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি’র পাওনা নিয়ে দ্বন্দ্বের গ্রাহক সংখ্যায় দেশের দ্বিতীয় অপারেটর রবি ছাড়তে যাচ্ছে শতাধিক কর্মী। এনওসি (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) বন্ধ থাকা, নতুন প্যাকেজ চালু করতে না পারা এবং ৪জি সম্প্রসারণ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় টানা ৫ মাস অলস সময় কাটানো এসব কর্মী চাকরিচ্যুত হওয়ার আগেই স্বেচ্ছা পৃথকীকরণ স্কিমের (ভিএসএস)-এর আওতায় অবসরে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ৈ অপারেটরটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, কাউকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করা হবে না, এটি পুরোপুরি স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কর্মসূচি। তাই শেষ পর্যন্ত কয়জন এই স্কিম গ্রহণ করবেন তা অনির্দিষ্ট।
অপারেটরটির একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, এটি একটি ঐচ্ছিক পদ্ধতি। বিটিআরসি ইস্যুতে ব্যবসায় মন্দাবস্থা এবং ৫ মাসের মতো বেশ কয়েকটি ডিপার্টমেন্টে অনেকেরই কার্যত কোনো কাজ না থাকায় গতকাল (১২ নভেম্বর) থেকে এই ভিএসএস স্কিম চালু করা হয়েছে। যারা রবি-তে থাকতে চাইবেন না তারা এই স্কিম নিয়ে অবসরে চলে যেতে পারবেন। স্কিমের আওতায় কর্মীদের গ্র্যাচুইটি, প্রভিডেন্ট ফান্ডসহ অন্যান্য সুবিধা চাকরীর সময়কাল অনুযায়ী ইনসেন্টিভ দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে পুরোনো কর্মীরাই বেশি লাভবান হবেন।
নভেম্বর মাস জুড়েই এই স্বেচ্ছা অবসর নেয়ার সুযোগ থাকবে বলেও তিনি জানান। কাজ না থাকায় এভাবে কর্মীদের অনির্দিষ্টকালের জন্য বসিয়ে রাখলে শিগগিরই এই পরিস্থিতি কোম্পানির ওপর একটি বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। সেই অবস্থা থেকে বেঁচে থাকতেই এই স্বেচ্ছা অবসরের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। বিটিআরসি-কে অবহিত করেই এই প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে।
জানাগেছে, নেটওয়ার্কিং, মার্কেটিং ও ব্র্যান্ড প্রোমশন বিভাগে কাজ অনেক কমে গেছে। এসব বিভাগ থেকেই বেশি কর্মী স্বেচ্ছা অবসরে যেতে পারেন। এই সুযোগ না নিলে আগামী মাস থেকে ছাঁটাই প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। তাই আগে ভাগেই এসব বিভাগের অন্তত শতাধিক কর্মী আগে ভাগেই চাকরি ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে রবি’র চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বলেন, রবি তার কর্মীদের জন্য প্রথমবারের মতো ভলান্টারি সেপারেশন স্কিম (ভিএসএস) ঘোষণা করেছে। টেলিযোগাযোগ খাতে ভিএসএস একটি সাধারণ ঘটনা। রবি কর্মীদের মধ্যে যারা সুযোগটি নিতে চান, শুধুমাত্র তাঁদের জন্য এটি প্রযোজ্য হবে। কোনো কর্মীই এতে অংশ নিতে কোনোভাবেই বাধ্য নন। টেলিযোগাযোগের মতো প্রতিযোগিতামূলক খাতে টিকে থাকতে হলে দক্ষ ব্যয় কাঠামো থাকা দরকার। এ খাতে প্রতিনিয়তই নিয়ন্ত্রণগত বাধা বাড়ছে, প্রতিযোগিতা বাড়ছে। এ অবস্থায় সনাতন টেলিযোগাযোগ কোম্পানি থেকে রবিকে ডিজিটাল সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে রুপান্তর করতে ব্যয় কাঠামো একটি জরুরি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রসঙ্গত, এই একই ধরনের ভিএসএস স্কিমে অন্তত পাঁচ দফায় গ্রামীণফোন এবং তিন দফায় বাংলালিংক কর্মী ছাঁটাই করেছে। গ্রামীণফোন তাদের কর্মী সংখ্যা পাঁচ হাজার থেকে ১৮০০-তে নামিয়ে এনেছে। আর বাংলালিংক তাদের কর্মী সংখ্যা ২৫০০ থেকে ১১০০-তে নামিয়ে এনেছে। অপরদিকে রবি’তে মোট ১ হাজার ৬৫০ কর্মী কর্মরত রয়েছেন।
ডিজিবাংলা/আএইচ