দুইবার সংশোধনী হওয়ার পর বিটিআরসি আইন নিয়ে খোলামত না দিয়ে মন্ত্রণালয়ের অধিনস্ত থেকেও বিটিআরসি’ ‘স্বাধীন’ না হয়েও কমিশন হিসেবে ‘কোম্পানি’ থেকে স্বাতন্ত্র্যতার সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোঃ মহিউদ্দিন আহমেদ।
সোমবার আগারগাঁওয়ের বিটিআরসি ভবনের সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক মত বিনিময় সভায় এমন মন্তব্য করেছেন তিনি। বলেছেন, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে বাংলাদেশ। প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের সঙ্গে আমাদেরও সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তাই যারা প্রযুক্তিতে নির্ভর করে এগিয়ে নিতে চান; তারা একটি পরিবার। আমরা সবাই একটি লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে এগুচ্ছি। আমাদের চলার পথ অবিচ্ছেদ্য।
খুব দ্রুততর সময়ে সাংবাদিকদেরকে তথ্য সরবারহ করবে বিটিআরসি। নিরবিচ্ছন্ন টেলিক সেবা নিশ্চিত করেই স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা হবে।
প্রকৌশলী মোঃ মহিউদ্দিন আহমেদ, চেয়ারম্যান, বিটিআরসি
তথ্য প্রাপ্তি দ্রুততার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান। নতুন কোনো নীতি বাস্তবায়নের আগে খসড়া তৈরির পর বিষয়টি নিয়ে আগামীতে গণমাধ্যম কর্মীদের ব্রিফ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
বক্তব্যে স্মার্টবাংলাদেশ গঠনে সাংবাদিকরা আমাদের সঙ্গী থাকবেন। নেগেটিভ নিউজে পপুলারিটি থাকলেও দেশ, মানুষের পক্ষে বিবেচনা কাজিয়ে লাগিয়ে সংবাদ পরিবেশনের আহ্বান জানান তিনি।
প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের ভুল ভ্রান্তি বিষয়ে আপনাদের পরামর্শ কামনা করি। পাশাপাশি হালনাগাদ প্রযুক্তি বিষয়ে জানাতে ও পেশাদারিত্ব তুলে ধরতে আমরা সচেষ্ট থাকবো। ’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন ‘আমরা পরিকল্পনা করেছি, আমরা মার্চের মাঝামাঝি সময়ে, গত এক বছরে কল সেন্টারে যত অভিযোগ পেয়েছি, সবগুলো একুমুলেট করে অপারেটরদের সাথে বসব। এক বছরে আমরা কোন কোন ডাইমেনশনের অভিযোগ পেয়েছি এবং আমাদের স্ট্র্যাটেজি কী হওয়া উচিত, যাতে এই জাতীয় অভিযোগ অনেক কম হয় এবং আরও উন্নত সব সেবা দিতে পারি। ’
বিটিআরসি সচিব নূরুল হাফিজের সঞ্চালনায় স্পেক্ট্রাম ম্যানেজমেন্ট বিভাগের কমিশনার শেখ রিয়াজ আহমেদ, সদ্য যোগদানকৃত লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগের কমিশনার আমিনুল হক, অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব বিভাগের কমিশনার প্রফেসর ড. মুশফিক মান্নান চৌধুরী, প্রশাসন বিভাগের মহাপরিচালক মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন, লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগের আশীষ কুমার কুণ্ড, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী মুস্তাফিজুর রহমান, স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মাদ মনিরুজ্জামান জুয়েল এবং সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খলিল উর রহমান এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বেটিং সাইড, বেটিং অ্যাপ এবং পর্ণ সাইট বন্ধে সবচেয়ে বেশী জোর দিচ্ছে বিটিআরসি। ফেসবুকের সাথে বিটিআরসি সার্বোক্ষনিক যোগাযোগ আছে। এই মাধ্যমে উষ্কানি, গুজব ঠেকাতে অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খলিল উর রহমান, মহাপরিচালক, সিস্টেম এন্ড সার্ভিসেস, বিটিআরসি
প্রশ্নোত্তর পর্বে বিটিআরসির সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস (এসএস) বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খলিল-উর-রহমান জানিয়েছেন, জনপ্রিয় সব প্যাকেজের দাম অপারেটররা কমিয়েছে। এরই মধ্যে ক্যাশ সার্ভার ও ব্যান্ডউইথ এর দাম কমার সুযোগ তৈরি হওয়ায় আগামীতে আবারও মোবাইল ফোনের খরচ কমানো হবে। নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে উস্কানি মূলক কন্টেন্ট বন্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা রিপোর্ট করি। কিন্তু ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটি গাইড লাইনের জন্য এক্ষেত্রে শতভাগ সফল হয় না।
মোবাইল টাওয়ার থেকে যে মাত্রার রেডিয়েশন বর্তমানে হচ্ছে সেটা মানব দেহের জন্য ক্ষতিকারক নয়। অনেকেই নানা শংকায় টাওয়ার বসাতে দিচ্ছে না। বিটিআরসির কাছে সেই তালিকা আছে। এ অবস্থার অবসানে ব্যাবস্থা নেয়া হচ্ছে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী মুস্তাফিজুর রহমান, মহাপরিচালক, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন, বিটিআরসি
বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মাদ মনিরুজ্জামান জুয়েল বলেন, ৮৫০ মেগাহার্জের ব্যান্ডইউথ থেকে ১০ মেগাহার্জ, ইজিএসএম ও ৮৫০ ব্যান্ডউথ থেকে দুইটি অপারেটর ৫ মেগাহার্জ ব্যান্ডউইথ চেয়েছে। এজন্য একটি একটি কমিটি করা হয়েছে। শিগগিররই এ নিয়ে পিওসি দেয়া হবে। অপারেটরদের প্রস্তাবানা অনুযায়ী, ভেন্ডরদের নিয়ে এমটবে ব্যানারে দেশের জন্য ভালো হয় সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। জিএসএম ও আইটিইউ এর তথ্য অনুযায়ী, একটি দেশের জন্য ২০০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডইথ লাগে। তাই আমাদের পর্যাপ্ত ব্যান্ডউইথের সংস্থান আমাদের আছে।
ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী মুস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, টাওয়ারের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে না পারলে কল ড্রপ বা কোয়ালিটি অব সার্ভিস ঠিক রাখা সম্ভব নয়। তাই টাওয়ারের সংখ্যা বাড়াতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।