# ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা # ডাকঘরে ৫০০ স্মার্ট সার্ভিস পয়েন্ট # ডিজিটাল আইল্যান্ড হাওর ও বিল প্রকল্প প্রস্তাব
একটা ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, হাওয়ার ও দ্বীপে ফিক্সড ব্রডব্যান্ডের ডিজিটাল আইল্যান্ড স্থাপন ও দেশজুড়ে ৫০০০ স্মার্ট সার্ভিস পয়েন্ট স্থাপন এবং ইউরোপিয় ইউনিয়নভুক্ত দেশের সঙ্গে সাইবার ড্রিল করেতে চায় বাংলাদেশ। পাশাপাশি নাগরিক তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত কতে এক সপ্তাহের মধ্যে জন্মনিবন্ধনে সমস্যা কাটিয়ে উঠার উদ্যোগ নেয়া ও আগামী জুলাই মাস থেকে অবৈধ বা অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে আগাম সতর্ক বার্তা দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে সচিবালয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হুইটলির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য জানান তিনি।
বৈঠকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আইটি সেবা রফতানি বাড়াতে ও স্মার্ট ইমপ্লয়মেন্ট তৈরিতে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। স্মার্ট সরকার সেবা দিতে প্রতিমন্ত্রী ইউরোপীয় ইউনিয়নের আর্থিক সহায়তা, বিনিয়োগ ও তাদের প্রযুক্তি ও জ্ঞান সহায়তা পাওয়ার পাশাপাশি আইন-কানুন তৈরিতে সহায়তা নিয়ে আলোচনা করেছেন।
বৈঠক শেষে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হুইটলি বলেছেন, বাংলাদেশের ডিজিটাল থেকে স্মার্ট জার্নিতে ইউরোপিয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ কীভাবে বাংলাদেশের পাশে থাকবে বৈঠকে সেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমি আমার পক্ষ থেকে সম্ভব সমর্থনের কথা জানিয়েছি।
আলোচনার তিনটি বিষয়ে ইইউ রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলেয়া ইউরোপিয় ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক ইতিমধ্যেই ৫০০ মিলিয়ন ডলার আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে। আগামী অল্প কিছু দিনের মধ্যে তারা আরো এক বিলিয়ন আর্থিক সহায়তায় প্রস্তুত আছে। এর মধ্যে ২০০ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে একটা ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প স্থাপনের জন্য আমি একটি প্রস্তাবনা দিয়েছি। এছাড়াও দুর্গম অঞ্চলে ফিক্সড ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে বিভিন্ন দ্বীপ ও ১০০ মিলিয়ন ইউরো সহায়তায় হাওয়ারাঞ্চলে ‘ডিজিটাল আইল্যান্ড হাওর ও বিল প্রকল্প প্রস্তাব করেছি। যাতে ইইউ আমাদের হয়ে এখানে একটা অর্থায়নের ব্যবস্থা করে। এটাও ইআরডি’র মাধ্যমে যাবে। এ বিষয়ে তিনি আশ্বস্ত করেছেন। এর পাশাপাশি সারাদেশের জেলা-উপজেলার ৫০০ পোস্ট অফিসে স্মার্ট সার্ভিস পয়েন্ট করবো। যেটা মাত্র ৪৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প।
এছাড়াও সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জন্মনিবন্ধনে সমস্যা কাটিয়ে উঠতে স্থানীয় সরকার বিভাগকে বিভিন্ন প্রস্তাব ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে পলক বলেন, ‘এখন যেহেতু নতুন করে সরকার গঠন করা হয়েছে, আমরা স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের সঙ্গে বসবো। আমাদের প্রস্তাব ও পরামর্শের ফলোআপ করে আবার চেষ্টা করবো।’
অবৈধ বা অনিবন্ধিত ফোন কবে থেকে বন্ধ হবে- প্রশ্নের জবাবে পলক বলেন, ‘আমরা আশা করছি যে, আমাদের ৫ মাস সময় লাগবে টেকনোলজি ডেভেলপ করা, টেস্টিং করা এবং এটা অপারেশন করতে। হঠাৎ করে আমরা এমন কোনো নীতি চাপিয়ে দিতে চাই না, যাতে করে একটা অস্থিরতা তৈরি হয়।’
তিনি বলেন, ‘এ কারণে আমরা প্রথম থেকে বলছি যে, অবৈধ পথে কেউ যেন ফোন না নিয়ে আসে। অবৈধ পথে কেউ যেন ফোন ক্রয় না করে, যাতে করে পরে তারা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। সেজন্য আমরা একটা রিজেনেবল টাইম দিচ্ছি, আগামী তিন মাসে আমরা টেকনোলজি ডেভেলপ করবো, পরে দুই মাসে টেস্টিং করবো। আমাদের প্রত্যাশা জুলাই মাসের মধ্যে এটা অপারেশনাল করবো। সুতরাং এসময়ের মধ্যে যাতে সবাই সতর্ক থাকে এবং এ অবৈধ পথ পরিহার করে সঠিক পথে কেনেন।’
অনিবন্ধিত ফোনগুলো রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ থাকবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এজন্যই দেরি হচ্ছে যে, নতুন ফোনের রেজিস্ট্রেশন করা আর সেকেন্ড হ্যান্ড ফোনের নাম ট্রান্সফার করা।
তিনি বলেন, ‘বিটিআরসি খুব আন্তরিকতার সঙ্গে চেষ্টা করছে অনিবন্ধিত ফোন যাতে মার্কেটে না আসে, চোরাই পথে না আসে, স্মাগলিং হয়ে না আসে। আমরা চেষ্টা করছি, প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার করে আমাদের স্থানীয় শিল্পের প্রটেকশন দেওয়া এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করতে।’
স্মার্ট সার্ভিস পয়েন্ট নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে জেলা ও উপজেলা সদরে আমাদের ৫০০ পোস্ট অফিস আছে, যেগুলো খুবই চমৎকার অবস্থানে। সেখানে সরকারের পোস্ট অফিসের সেবার পাশাপাশি আমরা স্মার্ট পয়েন্ট স্থাপন করবো। সেখানে সরকারি ও বেসরকারি সেবাদানকারী হিসেবে স্মার্ট সার্ভিস পয়েন্ট করতে চাই। ৫০০টি পয়েন্টে এ সেবা দেওয়া হবে। এখান থেকে একজন ছেলে ও একজন মেয়ে উদ্যোক্তা স্মার্ট গভঃ সেবাসহ ই-কমার্স সেবা দেবে’।
সাইবার ড্রিল নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং সারাবিশ্বের সাইবার নিরাপত্তায় আমরা একসাথে কিছু ওয়ার্কশপ ও ট্রেনিং প্রোগ্রাম করবো। পাশাপাশি ইইউ-বাংলাদেশ একসাথে সাইবার ড্রিল পরিচালনা করতে উনিও (চার্লস হুইটলি) সম্মত হয়েছেন‘।