ফাইভজি’র জন্য যে বাণিজ্যিক চাহিদা দরকার তা এখনো গড়ে ওঠেনি। তাই ২০২১ সালে দেশে পরীক্ষামূলক উন্মোচন করা হলেও বাণিজ্যিক ভাবে ৫জি উন্মোচনের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার প্রকৌশলী শেখ রিয়াজ আহমেদ। বলেছেন, বাণিজ্যিক চাহিদা পত্র পেলেই প্রতীক্ষিত ৫জি’র বাণিজ্যিক উন্মোচন করা হবে।
শুক্রবার বিটিআরসি সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের তৃতীয় বার্ষিক সম্মেলনের একটি অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।
ইন্টারনেট প্যাকেজে শৃঙ্খলা আনতে বিটিআরসি’র উদ্যোগ বাস্তবায়নে বিটিআরসি রেগুলেটর নয় ফ্যাসিলেটরের ভূমিকা পালন করছে মন্তব্য করে তিনি আরো বলেছেন, স্যাটেলাইটের সহযোগিতায় ও ভিস্যাটের মাধ্যমে ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করে হাওর-বাওর ও প্রান্তিক পর্যায়ে ইন্টারনেট পৌঁছে দিচ্ছে বিটিআরসি। ব্রডব্যান্ডে এক দেশ এক রেট বাস্তবায়ন করা হয়েছে। গ্রামে দাম আরেকটু কম হওয়া উচিত। কিন্তু তো শহরে তো বাড়ানো যাবে না। বাড়ালেই লোকজন ধরবে।
৩জিবি বাদ দেওয়ায় কোনো ক্ষতি হয়নি উল্লেখ করে শেখ রিয়াজ আহমেদ বলেন মোবাইল ডেটায় আমরা ৩০০ প্যাকেজ থেকে ৯৫টি এর পরের ধাপে কমিয়ে ৪০টি প্যাকেজ করেছি। তবে এখানেও স্কুল প্যাকেজ যেনো না আগের প্যাকেজ থেকে অসুবিধাজনক না হয়।
মিনিংফুল ইন্টারনেট সেবা দিতে তিনি বলেন, আমরা ৪জি থেকে ৫জি-তে চলে যাচ্ছি। এখন আমাদের দেশে স্মার্টফোন তৈরি হচ্ছে যা ৬০% এর বেশি চাহিদা পূরণ করে। এখন আইপিভি ৬ বাস্তবায়ন করিছি। এখন গ্রামীণ এলাকা থেকে যে কেউ পাসপোর্ট, ভর্তি, অর্থ স্থানান্তর ইত্যাদির মতো অনেক প্রয়োজনীয় পরিষেবার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে৷ ইন্টারনেটের স্থায়ীত্ব ও উন্নত সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে গণশুনানীতে আমরা আশানুরূম ফল পাইনা। সরকারি প্রতিষ্ঠানে বিপক্ষে ফাটিয়ে লেখা হলেও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিপক্ষে সেভাবে লেখা হয় না।
অধিবেশনটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোঃ মিজানুর রহমান। প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) ডিজিএম খান মোহাম্মদ কায়সার এবং এডিএন টেলিকম লিমিটেডে চিফ অপারেটিং অফিসার আজহার এইচ চৌধুরী। আলোচনায় ইন্টারনেটের খরচ শহরাঞ্চলের চেয়ে গ্রামীণ এলাকায় বেশি উল্লেখ করে বিটিআরসির নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠন করে বিষয়টি খতিয়ে দেখার প্রস্তাব দেন খান মোহাম্মদ কায়সার।
অপরদিকে আজহার এইচ চৌধুরী বলেন, এনটিটিএন খরচ প্রান্তিক পর্যায়ে এক দেশ এক রেটে ইন্টারনেট সেবা দেয়াকে চ্যালেঞ্জের পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। কেননা গ্রামে গ্রামে ৫০০ টাকায় ইন্টারনেট দিতে গিয়ে এর ৪০ শতাংশই এনটিটিএনকে দিতে হয়। এসময় তিনি ভালো মানের ইন্টারনেট সেবা দিতে নেটওয়ার্ক সক্ষমতা বাড়াতে তাদের সহজ অর্থায়নের প্রস্তাব দেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এক দেশ এক রেট উদ্যোগ ফের পর্যালোচনা করার আশ্বাস দেন বিটিআরসি’র প্রকৌশল ও অপারেশন বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার মো. জেনারেল মোঃ এহসানুল কবির। তিনি বলেন, ইন্টারনেট ব্রাউজিং দ্রুত ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করতে আমরা গুগল ও ফেসবুককে তাদের ডাটা স্টোর বাংলাদেশে করার জন্য খুব প্রেসারে রেখেছি। এক্ষেত্রে আমাদের বেশ অগ্রগতি হয়েছে। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে ২৭০০ এর মতো ক্যাশ সার্ভার স্থাপন করেছে তারা। আশা করছি ২-১ বছরের মধ্যেই তারা বাংলাদেশে ডেটা সেন্টার করবে।