ক্ষতির শঙ্কা নেই
দেশে মোবাইল টাওয়ার থেকে ছড়ানো রেডিয়েশন নিরাপদ মানের অনেক নিচে রয়েছে। ফলে, জনমনে আতঙ্ক থাকলেও মোবাইল টাওয়ারগুলো মানবদেহ ও পরিবেশের জন্য ক্ষতি করছে না বলে প্রতীয়মান হয়েছে তেজষ্ক্রিয় মান পরিমাপক পরীক্ষায়। দেশজুড়ে চারটি বিভাগের প্রায় এক ডজন জেলায় পরীক্ষা চালিয়ে এমন তথ্যই মিলেছে বলে জানিয়েছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির প্রকৌশল ও প্রতিপালন বিভাগের উপ-পরিচালক ড: শামসুজ্জোহা।
তিনি জানিয়েছেন, মোবাইল রেডিয়েশন নন-আয়োনাইজিং। এর শক্তি খুব কম, ফলে এর কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি নেই। তারপরও দেশজুড়ে স্থাপিত টাওয়ারগুলো যথাযথ মান মেনে স্থাপন করা হয়েছে কি না বিটআরসি তা নিয়মিত পরীক্ষা করছে। সম্প্রতি ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা ও রংপুরের ১১টি জেলায় এই পরীক্ষায় আমরা দেখতে পেয়েছি সেখানে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির ইএমএফ রেডিয়েশন গ্রহণযোগ্য সীমার চেয়ে অনেক কম রয়েছে।
ইতিমধ্যেই এই পরীক্ষার ফলাফলও প্রকাশ করতে শুরু করেছে। এরমধ্যে ময়মনসিংহের সার্কিট হাউজ, টাউন হল, আনন্দমোহন কলেজ , মেডিকেল কলেজ, পাসপোর্ট অফিস ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং তার আশেপাশের এলাকার টাওয়ার; জামালপুরের বেলতিয়া বাজার, নন্দিনা বাজার, ইউনাইটেড স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ফেরিঘাট বাস স্ট্যান্ড, ডিসি অফিস, অশোক মাহমদু সরকারি কলেজ, পাঁচরাস্তা মোড়, শেখ ফজিলাতুন্নেসা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ও তার আশেপাশে পরীক্ষা চালানো হয়। প্রকাশিত এই ৮টি স্পটের ফলাফল অনুযায়ী, ইএমএফ রেডিয়েশনের নিরাপদ মাত্রা সর্বোচ্চ ২.১০৬ হলেও পরীক্ষা চালিয়ে তা পাওয়া গেছে ০.২৩ শতাংশ থেকে ০.৮৭ শতাংশের মধ্যে। অন্যান্য বিভাগগুলোতেই পরীক্ষায় একই ধরণের স্বস্তির ফল পাওয়া গেছে।
চলতি সপ্তাহেই আরো একটি প্রতিবেদন এবং এর পরের সপ্তাহে আরেকটি বিভাগের প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন বিটিআরসি’র এই কর্মকর্তা। জানাগেছে, এই পরীক্ষণ প্রক্রিয়ায় ড. শামসুজ্জোহার সঙ্গী ছিলেন ইএণ্ডও বিভাগের সহকারী পরিচালক আবুল হাসান আনয় এবং মোঃ শাকুরুল হাসান আমিন। দেশে নিয়মিত রেডিয়েশন পরীক্ষা চালানো হচ্ছে জানিয়ে ড. শামসুজ্জোহা বললেন, বিটিআরসি এই রেডিয়েশন পরীক্ষায় যে যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেছে তা মিলিটারি গ্রেডের। এরআগেও দেশে এমন পরীক্ষা করেছে বিটিআরসি তখনও কোথাও নির্ধারিত সীমার বেশি রেডিয়েশন নেই পাওয়া যায়নি। ফলে মোবাইল টাওয়ারে ব্যবহার করা যন্ত্রপাতির ইএমএফ রেডিয়েশন আইটিইউ, ডব্লিউএইচও ও আইসিএনআইআরপি অনুযায়ী জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে নির্দিষ্ট মানদণ্ড আছে। ফলে এটা মোটেও জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক নয়। আর তাই এ বিষয়ে জনগণের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলা দরকার।