ব্যান্ডউইথ সীমিতকরণ ও এনওসি (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) বন্ধের পর এবার লাইসেন্স হারানোর ঝুঁকিতে পড়ছে মোবাইলফোন অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবি। পাওনা টাকা আদায়ে এই দুই অপারেটরের ওপর লাইসেন্স বাতিলের মতো কঠোর শাস্তি আরোপের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।
লাইসেন্স বাতিলের আগে নিয়ম অনুযায়ী আগামী সপ্তাজে একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হচ্ছে। সূত্রমতে, ভুটানে সফররত বিটিআরসির চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক দেশে ফিরলেই অপারেটর দুটিকে নোটিশ পাঠানো হবে। লাইসেন্স বিধি অনুযায়ী, অপারেটরগুলোকে নির্দিষ্ট সময় দিয়ে (৩০ দিন হতে পারে) লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হতে পারে। এর জাবাব আশানুরুপ না হলে পরবর্তী কমিশন বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করে লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্তও হতে পারে।
এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানিয়েছেন, বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও রাষ্ট্রীয় বকেয়া পরিশোধ না করায় অপারেটর দুটি’র বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী অপারেটর দুটিকে নোটিশ দেয়া হবে। সেই নোটিশে লাইসেন্স বাতিলের কথাও থাকবে। এই নোটিশের জবাব বা প্রতিক্রিয়ার ওপর ভিত্তি করেই গ্রামীণফোন ও রবি’র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের এপ্রিলে প্রায় ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা বকেয়া দাবি করে গ্রামীণফোনকে এবং ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা দাবি করে রবিকে নোটিশ পাঠায় বিটিআরসি। টাকা পরিশোধের জন্য অপারেটর দুটিকে দুই সপ্তাহ সময়ও দেওয়া হয়। কিন্তু টাকা পরিশোধ না করায় গত ২২ মে বিটিআরসি ‘কমিশন বৈঠক’(২২৭তম বৈঠক) অপারেটর দুইটির বিরুদ্ধে ৮টি অপারেশনাল ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। এই ৮টি ব্যবস্থার মধ্যে ছিল—দুই অপারেটরের পক্ষে অনাপত্তি পত্র জারি বন্ধ করে দেওয়া, এমএনপি পোর্ট ইন বন্ধ বা সীমিত করা, নতুন গ্রাহক নেওয়া বন্ধ বা সীমিত করে দেওয়া, ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে বা আইজিডব্লিউ প্রান্ত থেকে ব্যান্ডউইথ বন্ধ বা সীমিত করা, আইজিডব্লিউ প্রান্ত থেকে ইনকামিং বা আউটগোয়িং কল বন্ধ বা সীমিতকরণ, ইন্টার কানেকশন এক্সচেঞ্জের (আইসিএক্স) মাধ্যমে বন্ধ বা সীমিত করে দেওয়া, নেটওয়ার্ক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বা এনএমএসের মাধ্যমে সারাদেশ বা নির্দিষ্ট এলাকায় থ্রিজি ও ফোরজি নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেওয়া। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ৪ জুলাই অপারেটর দুটির ব্যান্ডউইথ সীমিত করে দেওয়া হয়। এরপর এই আদেশ প্রত্যাহার করে এনওসি দেওয়া বন্ধ করা হয়।