বারবার ডিও লেটার দেয়ার পরও আইএসপিএবি-কে আইটিইএস এর অন্তর্ভূক্ত না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বের সিদ্ধান্ত হওয়ার পরও এটা বাস্তবায়িত হয়নি। তাই আইএসপিএবি সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে সব ধরনের তদবির করার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী আরো বলেছেন, আমি আপনাদের সঙ্গেই লড়াই করবো।
ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সংগঠন আইএসপিএবি’র আয়োজনে বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানীর সারিনা হোটেলে শুরু হওয়া তিন দিনের কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার।
ডিজিটাল নিরাপত্তায় নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা অত্যাবশ্যক
আইএসপি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, প্রতিদিন ভয়েসের ব্যবহার কমে ডেটার ব্যবহার বাড়ছে। আমরা এখন ডেটা ওয়ার্ল্ডের দিকে চাচ্ছি। এইখানে নেতৃত্ব আপনাদের। তাই অস্তিত্বের লড়াইয়ের জন্য আপনাদেরকেই আইপিভি ৬ বাস্তবায়ন করতে হবে। নেটওয়ার্কের সুরক্ষাও নিশ্চিত করতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা অত্যাবশ্যক। এ বিষয়ে সরকার অত্যন্ত মনোযোগী। ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইন্টারনেট প্রটোকল ভার্সন (আইপিভি)–৬ প্রযুক্তি অপরিহার্য। ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইপিভি-৪ ভার্সনের রাউটার আমদানি রহিত করা হয়েছে। আইপিভি-৬ বাস্তবায়নে পরিকল্পনা মাফিক কাজ চলছে। তাছাড়া জনগণ যেমন রাষ্ট্রের উৎস তেমনি তৃণমূলের গ্রাহকেরাই আপনাদের শক্তি। তাদের ইন্টারনেটের নিরপাদ ও ফলপ্রসু ব্যবহার শেখাতে হবে।
‘কর্মজীবন থেকেই কর্মজীবনের শিক্ষা নিতে হয়’ উল্লেখ করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, দক্ষতা অর্জনে প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। আর মোবাইল ইন্টারনেটের সীমাবদ্ধতা কাটাতেই ফিক্সড ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট লাগবেই। তাই স্মার্ট বাংলাদেশের সবচেয়ে অগ্রসেনা হবে ইন্টারনেট সেবাদাতারাই।
আইএসপিএবি সভাপতি ইমদাদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিটিআরসি’র মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এহসানুল কবির, আইবিপিসি’র সমন্বয়ক মোঃ আব্দুর রহিম খান, অস্ট্রেলিয়া থেকে আগত এপনিক প্রশিক্ষক ডেভিড মিচেল পালান এবং বাংলাদেশের এপনিক প্রশিক্ষক আব্দুল আওয়াল। স্বাগত বক্তব্য দেন আইএসপিএবি সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম ভূঁইয়া।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্র’র নিরাপত্তা এখন আর অস্ত্রের ওপর নয়; নেটওয়ার্কের সুরক্ষার ওপরই নির্ভর করে বলে মন্তব্য করে বলে মন্তব্য করেন আইবিপিসি’র সমন্বয়ক মোঃ আব্দুর রহিম খান।
তিনি বলেন, ল্যাব স্থাপনে আমাদের সহযোগী হিসেবে থাকার মাধ্যমে আইএসপিএবি আমাদের ভালো কাজের সুযোগ করে দিয়েছে। তাই আগামীতেও বিভিন্ন বিভাগে নিক্স এর পপ তৈরিতে সাধ্য মতো সহযোগিতা করবো। এ বছরের মধ্যেই ৩ বিভাগে নিক্স স্থাপন করা হবে।
দেশে ইন্টারনেটের ব্যবহার বছরে ৩৫ শতাংশ হারে বাড়ছে উল্লেখ করে বিটিআরসি’র মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এহসানুল কবির বলেন, ২০২৩ সালে দেশে ইন্টারনেটের ব্যবহার হবে ৬০০০ জিবিপিএস। ২৫ সাল নাগাদ প্রয়োজন হবে সাড়ে ৮ হাজার এবং ৩০ সালের মধ্যে ১৯ হাজার জিবিপিএস। আপনারাই এই ব্যান্ডউইথ রাটিং করেন। তাই তাদের দক্ষতা উন্নয়নে এ ধরণের প্রশিক্ষণ চালিয়ে যাবে বলে আশা করি।
‘ইন্টারনেট এখন ষষ্ঠ মৌলিক চাহিদা’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, দেশের এখন ১০ শতাংশই আইপিভি ৬। ২০১৯ সালে অ্যাক্টিভ শেয়ারিং ইস্যুটি স্থগিত হয়েছিলো। সেই স্থহিতাদেশ এখন নেই। এটি নিয়ে কাজ হচ্ছে। শিগগিরই বাস্তাবায়িত হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স আপডেটে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে ইমদাদুল হক মোবাইল অপারেটরদের মতো আইএসপিএ-দের জন্য অ্যাক্টিভ শেয়ারিং সুযোগ করে দিতে আমি জব্বার ভাই ও বিটিআরসি’র প্রতি আহ্বান জানাই।
এসময় বনানীতেই ১০ হাজার বর্গফুট স্থানেই আইএসপিএবি’র নিজস্ব কার্যালয় স্থাপন করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি জানান, আগামীতে মাস জুড়েই প্রকৌশলীদের দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পালন করবে আইএসপিএবি। পাশাপাশি এ মাসেই নতুন করে দুই বিভাগে নিক্স সেবা চালু করা হবে। তিন দিনের এই কর্মশালায় আইএসপিএবি’র ৮০জন প্রকৌশলীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন এপনিক প্রশিক্ষক আব্দুল আওয়াল, নাসির উদ্দিন ও দেব পালান।