কোম্পানি নয়, দাতব্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হয়েছে গ্রামীণ টেলিকম। এছাড়াও ২০১৩ সালে সংশোধনের আগে শ্রম আইনে টেলিকম খাত যুক্ত ছিলো না। এ কারণে ওই সময়ে লাভের পুরো টাকা জনকল্যাণে খরচ করা হয়। তাই ২০০৬-১২ সাল পর্যন্ত এখানে কর্মরত কোনো শ্রমিক শ্রম আইনের ২৩৪ ধারা অনুযায়ী নিট মুনাফার ৫ শতাংশ লভ্যাংশ পাওয়ার অধিকার রাখেন না।
সোমবার ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে দেয়া সাক্ষে এমন যুক্তি দিয়েছেন গ্রামীণ টেলিকম লিমিটেড চেয়ারম্যান নোবল বিজয়ী ড. মুহাম্মাদ ইউনুস।
মামলার প্রথম পক্ষ এক তরফা শুনানি চাইলেও দ্বিতীফ পক্ষ হিসেবে জাবাব দিয়েছেন তিনি। তাতে বলা হয়েছে, গ্রামীণ টেলিকম লিমিটেডের যেসব শ্রমিকরা মামলা দায়ের করেছেন, তারা শ্রম আইন অনুযায়ী এ সুযোগ-সুবিধা পাবেন না। এ অর্থ মালিকরাও খরচ করেন না। লভ্যাংশের সম্পূর্ণ অর্থ শ্রমিকের কল্যাণে খরচ করা হয়। তবে ২০১৩ সালের পরে যোগদান করেছেন তাদের এ সুবিধা দেওয়া হবে।
আদালতে তার পক্ষে এই জবাব দাখিল করেছেন আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আলম মামুন। আর শ্রমিকদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এ এইচ এম সানজিদ সিদ্দিকী।
এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আাগামী আগামী ৩০ এপ্রিল শুনানি ও আদেশের জন্য ঠিক করেছেন আদালত।
তবে এর পর আরো দুই মামলায় আগামী ৯ মে পরবর্তী শুনানি করবেন ডা. ইউনুস।
এর আগে গত ৯ নভেম্বর শ্রম আইন অনুযায়ী কোম্পানির লভ্যাংশ দাবি করে গ্রামীণ টেলিকম লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল হাসানের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে মামলা দায়ের করা হয়।
শ্রম আইন অনুযায়ী কোম্পানির লভ্যাংশ দাবি করে ‘গ্রামীণ টেলিকম’র সাবেক ৮ কর্মকর্তা বাদী হয়ে এ মামলা করেন। ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে গত ৯ নভেম্বর মামলাগুলো দায়ের করা হয়। ওইদিন মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার এইচএম সানজিদ সিদ্দিকী জানিয়েছিলেন সাত কর্মকর্তা ও একজন কর্মচারী ২০০৬ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ টেলিকমে কর্মরত ছিলেন। ২০০৬-২০০৯ অর্থ বছরে কোম্পানির লভ্যাংশ থেকে তাদের বঞ্চিত করা হয়।
এদিকে ৪৩৭ কোটি টাকা দাবি করে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অর্থনীতিবিদ ও নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে ১১০টি মামলা হয়। ২০১৭ সালে ১৭৬ জন কর্মচারি বাদী হয়ে এসব মামলা দায়ের করেন। তবে তাদের দাবিকৃত অর্থ পরিশোধের প্রেক্ষিতে মামলাগুলো প্রত্যাহার হয়ে যায়। কিন্তু এ মামলার মধ্যস্থতাকারী আইনজীবী ইউসুফ আলী আকন্দকে অস্বাভাবিক অংকের ফি নিয়েছেন-দাবি করে তার বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ওই অনুসন্ধানে ড. মুহাম্মদ ইউনুসের প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে-মর্মে ইঙ্গিত দিয়েছে সংস্থাটি।