ডিজিটাল বাংলাদেশ রূকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে নেয়ার কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশের মেধাবী প্রকৌশলীরা। তবে এর ভিত্তিটা রচনা করে গেছেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিলো বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম হবে বিজ্ঞান মনস্ক প্রজন্ম। আর ডিজিটাল বাংলাদেশের আর্কিটেক্ট হিসেবে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য দৌহিত্র প্রকৌশলী সজীব ওয়াজেদ জয় দেশের প্রকৌশল পরিবারের গর্ব; যার নেতৃত্বে আমরা প্রথম মহাকাশে বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন করতে পেরেছি।
শুক্রবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে “উদীয়মান ভবিষ্যতের জন্য চতুর্থ শিল্পবিপ্লব’ আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প উৎসর্গ করেছিলেন বাংলাদেশের ৭০ শতাংশ তরুণ প্রজন্মকে। মাত্র ১৩ বছরে প্রধানমন্ত্রীর অবৈতনিক আইসিটি উপদেষ্টা ২০ লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন এই প্রযুক্তি শিল্পে। সজীব ওয়াজেদ জয় ভাইয়ের তত্ত্বাবধানে আমরা একটি জ্ঞানভিত্তিক, উদ্ভাবনী, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মান করবো। স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট সিটিজেন গড়ে তুলতে মূল নেতৃত্ব দেবে আমাদের এই তরুন মেধাবী প্রকৌশলী ভাই ও বোনেরা।
আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটির আয়োজনে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে যাত্রা এবং ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়ন’ প্রত্যয়ে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশেকে ডিজিটাল দেশে রূপান্তর করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামীতে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব আমরা। ৫০তম পবিত্র সংবিধান দিবস মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে। এখন থেকে জাতীয়ভাবে দিবসটি পালন করা হবে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান মো. হোসেন মুনসুরের সভাপতিত্বে সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর।
তিনি বলেন, মানুষের দৈনন্দিন জীবন বদলে দিয়েছে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব। এই বিপ্লবকে সফলভাবে কাজে লাগিয়ে টেকসই অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে রোল মডেল হয়ে উঠেছে ডিজিটাল বাংলাদেশ।সম্মেলনে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রযুক্তিগত নানা বিষয়ে গবেষণাপত্র আহ্বান করা হয়েছিল জানিয়ে ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর বলেন, ২০টি ক্যাটাগরিতে ৬৬২টি পেপার ও পোস্টার জমা পড়েছে। বাংলাদেশের গবেষকদের পাশাপাশি ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা, ভারত, জাপান, চীন, অস্ট্রেলিয়া, তাইওয়ান, মালয়েশিয়া, ব্রাজিল, দক্ষিণ কোরিয়া, সিংগাপুর থেকে শতাধিক গবেষণা পেপার এসেছে।
বিদেশি যেসব প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা পেপার জমা দিয়েছেন, তার মধ্যে রয়েছে—সিলিকন ভ্যালির বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ, অস্ট্রেলিয়ার মোনাস বিশ্ববিদ্যালয়, কানাডার ম্যাকমাস্টার ও ক্যালগারি বিশ্ববিদ্যালয়, আমেরিকার টেক্সাস আর্লিংটন বিশ্ববিদ্যালয়, বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়, ফিনল্যান্ডের হেলসিংকি বিশ্ববিদ্যালয়, জাপানের কিউসু বিশ্ববিদ্যালয়, দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল ন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়, চায়না একাডেমি অব সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি।
এছাড়া বুয়েট, কুয়েট, চুয়েট, রুয়েট, ডুয়েট, আইইউটি, আইডব্লিউএম, সিইজিআইএস, নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, পানি উন্নয়ন বোর্ড ইত্যাদি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষকেরা সম্মেলনে পেপার জমা দিয়েছেন।
প্রথম দিনের সম্মেলনে উপস্থাপিত প্রথম মূল প্রবন্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে মাধ্যমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত বিজ্ঞান শিক্ষাকে নিয়ে গিয়েছে সরকার। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে তুলছি আমরা।
তিনি বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের ১০টি প্রযুক্তি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই বিষয়গুলোর ব্যাপারে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আরও মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ও চারটি বিষয়ে ফোকাস করার নির্দেশনা দিয়েছেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর আইইবি অডিটরিয়ামে কনফারেন্সের প্রথম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, দ্বিতীয় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন থাইল্যান্ডের এআইটি’র বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর ড. জয়শ্রী রায়। এছাড়া আলাদা আলাদা ১০টি ভেন্যুতে টেকনিক্যাল সেশন অনুষ্ঠিত হয়।