স্ট্যানফোর্ড, হার্ভার্ডও এমআইটির দৃষ্টান্ত তুলে ধরে একাডেমিয়া-ইন্ডাস্ট্রি পর্যায়ে টেকসই ও মজবুত আন্তঃসম্পর্কের ওপর নির্ভর করছে স্মার্ট-বাংলাদেশের ভবিষ্যত বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
শনিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ মাল্টিপারপাস অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সপ্তম বেসিস আউটসোর্সিং অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন তিনি।
আর সেই সুদিনের জন্যই আগেভাগেই বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ইউনিবেটর স্থাপনের শুরুতেই দেশের ১৫০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের কাছে আইসিটি বিভাগ এক খণ্ড জমির জন্য অনুরোধ করেছিলো বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন সেসময় শুরুতে কুয়েট ও চুয়েট সাড়া দেয়। তখন এজন্য প্রধানমন্ত্রী ১০০ কোটি টাকার ওপর বরাদ্দ দিয়েছেন। আগামীকালই কুয়েটের ইউনিবেটর উদ্বোধন হবে।
আর যারা ওই সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব্যাবসায় প্রতিষ্ঠান ঢুকবে কেনো যুক্তিতে জায়গা দেননি তাদের উদ্দেশ্যে পলক বলেন, “আগামীতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোই ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ার সূতিকাগার।”
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, বিশ্বের ট্রিলয়ন ডলার কোম্পানিগুলোর উদ্ভাবনী আইডিয়াগুলো এসেছে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আজকে যেমন কুয়েট ও বুয়েট থেকে এসেছে নাসা’র বিশ্বজয়ী ‘মহাকাশ’ ধারণা। এমন করেই ছাত্রজীবন থেকে উদ্ভাবনী চিন্তা ভাবনা আসে। এই ধারাণাগুলোর বাণিজ্যিকীকরণের জন্য প্রয়োজন হয় পৃষ্ঠপোষকতার। এই গ্যাপ রিডিউস করতে আমরা ইউনিভার্সিটি ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছি।
বক্তব্যে ফ্রিল্যান্সারদের পেছনে বিনিয়োগে ব্যাংকগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান পলক। প্রথাগত অর্থায়নে ঋণ ব্যাবস্থায় না গিয়ে ইক্যুইটি শেয়ার মডেল চালু করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে পলক বলেন, আমি প্রত্যাশা করছি ব্যাংক এশিয়া আগামীতে ফ্রিল্যান্সারদের জন্য একটি স্টার্টআপ ফান্ড গঠন করবে। যার মাধ্যমে ইক্যুইটি শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে প্রথাগত ঋণের মধ্যে না গিয়ে তাদের ব্যবসায় মডেল পর্যালোচনা করে তাদেরকে অর্থায়ন করবে।
দেশের সাড়ে ছয় লাখ ফ্রিল্যান্সারের মধ্যে এক লাখ ফ্রিল্যান্সারের সাফল্যের গল্প পড়ে এখন আইসিটি বিভাগ এবার একটি সেল্ফ এমপ্লয়মেন্ট ইকোসিস্টেম ডেভেলপমন্ট প্রকল্প প্রণয়ন করছে বলে জানিয়েছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২০২৫ সালের মধ্যে অন্তত এক লাখ ফ্রিল্যান্সারকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আরফান আলী, মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ সৈয়দ মাকসুদ কামাল, বেসিস আউটসোর্সিং অ্যাওয়ার্ড ২০২১ বিচারক প্যানেলের প্রধান রফিকুল ইসলাম রাউলি এবং বেসিস এর জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ফারহানা এ রহমান।
অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে ২০ টি এবং ব্যক্তি পর্যায়ে ৭৯টি অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে, আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠান বিভাগে ৫টি, স্টার্টআপ বিভাগে ৫টি এবং এক্সপোর্ট এক্সিলেন্স বিভাগে ১০টি অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। আর ব্যাক্তি পর্যায়ে ৬৩ জেলায় ৬৩ জনকে, ব্যক্তি নারী বিভাগে ৫ জনকে, জাতীয় শীর্ষ ১০ জন আউটসোর্সারকে এবং বিশেষভাবে সক্ষম ১ জনকে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।