গত বছর ৭ ডিসেম্বর সরকারি সব তথ্য বাধ্যতামূলকভাবে গাজীপুরের কালিয়াকৈর হাই টেক পার্কের জাতীয় ডেটা সেন্টারে সংরক্ষণের নির্দেশনা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই বাংলাদেশের গাজীপুরের কালিকৈরে স্থাপিত বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম ‘ফোর টিয়ার’ জাতীয় ডাটা সেন্টারের ওপর চাপ বাড়তে শুরু করেছে। এই চাপ সামাল দিতেই ডাটা সেন্টারটির সক্ষমতা বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি ওরাকলের কাছ থেকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ক্লাউড সেবা কিনতে মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন পেয়েছে আইসিটি বিভাগ।
এতে অর্থ সাশ্রয়, তথ্যের নিরাপত্তা ও জরুরি সময়ের মধ্যে ডেটা সেন্টারের প্রয়োজন মেটানো সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
ডেটা সেন্টারের জন্য সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ওরাকলকে বেছে নেওয়ার যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে তিনি গণমাধ্যমকে বলেছেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, ভূমিসহ সরকারের ১৪৫টি এজেন্সি যারা ডেটাবেইজগুলো ম্যানেজ করে তারা ওরাকলের এসকিউএল ডেটাবেজ সিস্টেম ব্যববহার করে। প্রতিবছর সার্ভিস চার্জ, লাইসেন্স ফি বাবদ প্রায় ৪৫ মিলিয়ন ডলার তাদেরকে দিতে হয়। আর কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কে এই ডেটা সেন্টার হচ্ছে। ফলে আমাদের দেশের ভূখণ্ডের মধ্যেই তথ্যগুলো থাকবে। তাতে ওই ৪৫ মিলিয়ন ডলার অর্থ সাশ্রয় হবে।”
আর এই হিসেবে আগামী চার বছরের মধ্যে জাতীয় ডেটা সেন্টারের আয়-ব্যয় সমান অবস্থানে চলে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী।
পলক আরো জানান, ‘বাংলাদেশ ডেটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেড’ এর মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন এবং আর্টিক্যাল অব অ্যাসোসিয়েশনের সংশোধিত খসড়ায় ভূতাপেক্ষ অনুমোদন দেওয়ার সময় দেশি-বিদেশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও ব্যক্তি পর্যায়ের ডেটাও সরকারি এই সেন্টারে টাকা দিয়ে সংরক্ষণের বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছিলো মন্ত্রিসভা। ওই সভায় প্রধানমন্ত্রী সরকারি সব তথ্য বাধ্যতামূলকভাবে গাজীপুরের কালিয়াকৈর হাই টেক পার্কের জাতীয় ডেটা সেন্টারে রাখার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। ইতোমধ্যেই ই-নথি, সুরক্ষা প্লাটফর্ম, ভার্চুয়াল কোর্ট, এনবিআর, ইলেকশন কমিশন থেকে শুরু করে বেশ কিছু বড় বড় সিস্টেম আমাদেরকে এখন হোস্ট করতে হচ্ছে। এর ফলে ডেটাসেন্টারের ক্লাউড সার্ভিসের সক্ষমতা বৃদ্ধি করাটা ‘ইমিডিয়েটলি’ দরকার হয়ে পড়ে। ক্লাউড ক্যাপাসিটি দ্রুত বৃদ্ধি না করলে এই কার্যক্রমগুলো বাধাগ্রস্ত হবে।
আর এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়েই অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত ও অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রস্তাবটিতে অনুমোদন দিয়েছে।