ইভিএম নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনো সংকোচ নেই, আমরা আত্মবিশ্বাসী বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়্যাল। তিনি বলেন, ইভিএমে প্রযুক্তিগত কোনো ত্রুটি আমরা দেখছি না। আমরা চাই সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক, এতে একটা ভারসাম্য তৈরি হবে। তখন আমাদের জন্য নির্বাচন পরিচালনা করতে সুবিধা হবে।
সোমবার জাতীয় পার্টি (জেপি) ও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সাথে সংলাপের পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, ইভিএম নিয়েও ইসি খুঁটিনাটি কাজ করছি। এখানে আমরা প্রযুক্তিগত কোন অসুবিধা দেখি না। ইভিএমের মধ্যে ওই ধরণের কারচুপি, কার্ডের মাধ্যমে ভোট সম্ভব কিনা খতিয়ে দেখছে কমিশন। কারচুপির বিষয় কিন্তু পাওয়া যায়নি। একজন ভোটার তার ফিঙ্গার (বায়োমেট্রিক) দেয়ার পর সেটি ম্যাচ করলে ইভিএমের স্ক্রিনে সবগুলো প্রার্থির প্রতীক ভেসে উঠবে। এরপর ব্যালট ওপেন হবে। ৪০ সেকেন্ড থাকবে। এর মধ্যেই ভোট দিতে হবে বলে জানান সিইসি।
তিনি বলেন,, ইভিএমে ভোট নেওয়ার ক্ষেত্রে একটা অসুবিধা কেউ কেউ লক্ষ্য করেছেন, যে একজন লোক বুথে যদি দাঁড়িয়ে থাকে। তিনি যদি ভোটারকে বলেন- আপনি যান, ভোটটা আমি দিয়ে দেব। সেই সঙ্কটের বিষয়টি আমাদের মাথায় আছে। এজন্য আমরা সিসিটিভি ক্যামেরা দেব। আমরা কঠিন দায়িত্ব অর্পণ করবো প্রিজাইডিং কর্মকর্তার ওপর। কেউ যদি বৈধ বা অবৈধভাবে ভোট বাধাগ্রস্ত করে তবে তাৎক্ষণিক ভোট বন্ধ করে ওই লোককে বের করে দেবেন। তিনি না পারলে পুলিশ ডেকে বের করে দেবেন। তিনিও পারলেন না, পুলিশও পারলেন না, তাহলে ভোট বন্ধ করে দেবেন। এছাড়া প্রিজাইডিং কর্মকর্তা যদি মাস্তানকে যদি অ্যালাউ করেন; তবে শাস্তির ব্যবস্থা রেখেছি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, যদি কোনো অফিসার পেশী শক্তির ভয়ে কাউকে ভেতরে অবস্থানের সুযোগ দেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে আমরা প্রিজাইডিং অফিসারদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে জাতীয় পার্টি (জেপি) প্রতিনিধি দলের প্রধান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোথাও ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট, আবার কোথাও ব্যালট এ ধরনের কোনো কোনো বৈষম্য চায় না জাতীয় পার্টি-জেপি। প্রয়োজনে ৩০০ আসনের পুরোটায় ইভিএমে কিংবা প্রতিটি আসনের একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক কেন্দ্রে মেশিনের সক্ষমতা অনুযায়ী ১০ শতাংশ অথবা ১৫ শতাংশ কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট করার জন্য সুপারিশ করেছি।
এদিকে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) কারচুপির প্রমাণ নিয়ে দুজন নির্বাচন কমিশনারের চ্যালেঞ্জের জবাব দিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন। বেসরকারি এ সংস্থাটি নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) জানিয়েছে, ‘ইভিএম ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযুক্ত নয় এবং কারো কাছে এ মেশিনের সোর্সকোড নেই। তাই কারো পক্ষে ইভিএম দিয়ে কারচুপির প্রমাণ উত্থাপন করা অসম্ভব।’
সুজন সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খান ও সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের সই করা ওই চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘বর্তমান ইভিএম দিয়ে যে প্রশ্নাতীতভাবে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা যাবে- তা প্রমাণের দায়িত্ব বা ‘বার্ডেন অব প্রুফ’ কমিশনের, অন্য কারো নয়। আর যেহেতু অন্য কারো কাছে ইভিএম এবং এর সোর্সকোড নেই, তাই তাদের পক্ষে ইভিএম দিয়ে কারচুপির প্রমাণ উত্থাপন করাও অসম্ভব।’