গ্রেফতার ও জরিমানার বিধান রেখে প্রণয়ন হচ্ছে ‘ড্রোন নিবন্ধন ও উড্ডয়ন নীতিমালা-২০১৯’। নিবন্ধন ছাড়া ড্রোন উড়ানো বন্ধে ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ গ্রহণ শুরু করেছে সরকার। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কাছ থেকে নিবন্ধন ও পূর্বানুমতি নেয়ার আইন প্রণীত হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালার খসড়া তৈরি করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। এর ওপর মতামত দেয়ার জন্য তা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো খোলা স্থানে যেকোনো শ্রেণীর ড্রোন উড্ডয়নের আগে ওই এলাকার পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ভিভিআইপি মুভমেন্ট রয়েছে কি না- এ বিষয়টি অপারেটরকে নিজ দায়িত্বে জেনে নিতে হবে এবং ভিভিআইপি মুভমেন্টের তারিখের এক ঘণ্টা আগে থেকে ভিভিআইপি মুভমেন্ট সম্পূর্ণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের ড্রোন উড্ডয়ন বন্ধ রাখতে হবে।
১৭টি ধারায় সাজানো নীতিমালা অনুযায়ী, ড্রোন উড্ডয়নের অনুমতি প্রদানের সুবিধার্থে চারটি ক্যাটাগরি তৈরি করা হয়েছে। এগুলো হলো- ক. বিনোদনের জন্য ব্যবহার, খ. শিক্ষা ও গবেষণার মত অ-বাণিজ্যিক কাজে সরকারি/বেসরকারি সংস্থার ব্যবহার, গ. সার্ভে, স্থির চিত্র, চলচ্চিত্র নির্মাণ, উন্নয়ন প্রকল্পের সম্ভ্যাব্যতা যাচাই ইত্যাদি বাণিজ্যিক পেশাদার কাজে ব্যবহার ও ঘ. রাষ্ট্রীয়/সামরিক প্রয়োজনে ব্যবহার।
খসড়া নীতিমালায় অনুযায়ী, নিবন্ধন ছাড়া ড্রোন উড়ালেই সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার হতে হবে। ড্রোন উড্ডয়নের কারণে জনসাধারণ ও প্রাণীর জীবন, জনসাধারণের সম্পত্তি ও গোপনীয়তা এবং রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগে দেশের প্রচলিত আইনে দায়ী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান বিচারযোগ্য এবং দণ্ডনীয় হবে এবং আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদানে বাধ্য থাকবে। এছাড়াও ১৫ কেজির বেশি ওজনের ড্রোন আমদানি করতে হলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে।
নীতিমালার খসড়ার ভূমিকায় বলা হয়েছে, ‘সরকারি, বেসরকারি, ব্যক্তিগত কাজে ড্রোনের ব্যবহার বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা/নিরাপত্তা ভঙ্গ এবং জনসাধারণ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতির মতো অনৈতিক, বেআইনি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে এ প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে বর্তমানে বাংলাদেশে এর আমদানি, ব্যবহার ও উড্ডয়ন অত্যন্ত সীমিত এবং কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত।’
‘অপর দিকে মানব কল্যাণ ও রাষ্ট্রীয় বহুবিধ উন্নয়ন/নিরাপত্তার কাজে ব্যবহারের প্রয়োজনে আনম্যান্ড এরিয়াল ভেহিক্যাল/আনম্যান্ড এয়ারক্রাফট সিস্টেম/রিমোটলি পাইলটেড এয়ারক্রাফট সিস্টেম/ড্রোনের আমদানি, ব্যবহার ও উড্ডয়নের সুনিয়ন্ত্রিত অনুমোদন প্রদান এখন সময়ের চাহিদা। এ জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে।’
ড্রোন উড্ডয়ন বা পরিচালনার জন্য তিনটি জোনে বিভক্ত করে দেয়ার কথা বলা হয়েছে নীতিমালায়। এই জোনগুলো হচ্ছে গ্রিন জোন, ইয়োলো জোন ও রেড জোন। গ্রিন জোনের (কোনো প্রকার অনুমতির প্রয়োজন হবে না) পরিধি হবে বিমানবন্দর/কেপিআইয়ের তিন কিলোমিটার বাইরে এবং ৫০ ফুটের অধিক উচ্চতায় নয়, বিমানবন্দর/কেপিআইয়ের পাঁচ কিলোমিটার বাইরে এবং ১০০ ফুটের অধিক উচ্চতায় নয় এবং বিমানবন্দর/কেপিআইয়ের ১০ কিলোমিটার বাইরে এবং ২০০ ফুটের অধিক উচ্চতায় নয়।
ইয়োলো জোন (অনুমতিসাপেক্ষে ব্যবহার) নিয়ন্ত্রিত এলাকা, সামরিক এলাকা, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। রেড জোন (বিশেষ অনুমতিসাপেক্ষে পরিচালনা) নিষিদ্ধ, বিপজ্জনক. বিমানবন্দর, কেপিআই এলাকা।