প্রযুক্তি নির্ভর গবেষণা বাড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন। তিনি বলেছেন, পৃথিবী বদলে গেছে। এই গ্লোবাল ভিলেজে এখন সব কিছুই ইন্টার-কানেক্টিং। এই কানেক্টেড পৃথিবীতে আমাদের রিসার্চ কোলাবরেশন সোসাইটি গড়ে তুলতে হবে।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের (এআইইউবি) কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে আয়োজিত ‘ভিআর কন’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ ইনোভেশন ফোরামের আয়োজনে ‘ফার্স্ট ভার্চুয়াল কনফারেন্স ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন এআইইউবির উপাচার্য ড. কারমেন জেড ল্যামাঙ্গার। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন সরকারের আইসিটি বিভাগের প্রকল্প পরিচালক আবদুল হাই।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন এআইইউবির উপ-উপাচার্য প্রফেসর অধ্যাপক ড. তফাজ্জল হোসেন, ইনোভেশন ফোরামের আরিফুল ইসলাম অপু এবং সম্মেলনের টাইটেল স্পন্সর রাইজ আপ ল্যাবসের প্রধান নির্বাহী এরশাদুল হক।
সেমিনারের বিভিন্ন সেশনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির নানা বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট খাতের বিশেষজ্ঞ ও উদ্যোক্তারা বক্তব্য দেন।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আমি অনুরোধ করবো দেশের পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে, তারা যাতে আইসিটি বেজড রিসার্চ বাড়ায়। আর তা অবশ্যই মানসম্মত। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে।
এক্ষেত্রে বেশি বেশি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের ওপরও জোর দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের এই গবেষক।
বাংলা ভাষায় গবেষণাপত্র প্রকাশের উপর গুরুত্বারোপ করে অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বলেন, পৃথিবীর প্রত্যেক উন্নত দেশই নিজেদের ভাষায় সব কিছু করে। এক্ষেত্রে আমাদেরও বাংলা ভাষায় গবেষণা পেপার প্রকাশ করতে হবে।
‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিজের দেশের যত সমস্যা রয়েছে তা গবেষণার মাধ্যমে চিহ্নিত করে সমাধানের পথ বাতলে দিতে হবে। পাশাপাশি নতুন নতুন উদ্ভাবন করবে যা মানুষের কল্যাণ হয়, দেশের উন্নয়ন হয়। আর ব্যাপ্তি ছড়িয়ে পড়বে বিদেশেও।’
তিনি বলেন, আমাদের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভালো করছে। দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে তারা নিত্যনতুন গবেষণা করে যাচ্ছে। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও মানসম্পন্ন রিসার্চ করবে, ইনোভেশন করবে এবং ওয়েলথ জেনারেট করবে। আমরা সে বিশ্বাস করি। এভাবে সবার অবদানেই গড়ে উঠবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা।
তিনি আরো বলেন, ‘সমসাময়িককালে আমাদের ছেলে-মেয়েরা প্রযুক্তিখাতে বেশ ভালো করছে। চতুর্থশিল্পব সামনে, যা হবে ইন্টারনেট অব থিংসকে কেন্দ্র করে। বিশ্বজুড়ে অর্থনীতির চিত্র পাল্টে দেবে। এক্ষেত্রে আমাদের আট কোটি তরুণকে তৈরি করতে পারে কেবল বিশ্ববিদ্যালয়গুলো-ই। তাদের সে সুযোগ আছে। কারণ তরুণদের দক্ষ করে তোলার মাধ্যমে আমরা দেশে-বিদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নেতৃত্ব দিতে পারবো।’
অধ্যাপক সাজ্জাদ বলেন, ‘এখন আমরা ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, অটোমেটেড রিয়েলিটি, মিক্সড রিয়েলিটি, কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের কথা বলছি। আমরা কাজ করছি ডাটা অ্যানালাইসিস, রোবটিক্স, ইন্টারনেট অব থিংসসহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অত্যাধুনিক বিষয় নিয়ে। কারণ আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে এই শিক্ষাবিদ বলেন, পৃথিবীতে যা কিছু ভালো তরুণরাই করে দেখিয়েছে। আমাদের জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ যুবক, তাদের দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে ওঠতে হবে। কারণ আমাদের এখন প্রচুর সুযোগ রয়েছে তা কাজে লাগাতে হবে। শিক্ষকরা যেমন তাদের নির্দেশনা দেবেন, শিক্ষার্থীদেরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। কী করতে চাও- সে বিষয়টাকে ফোকাস করে এগিয়ে যেতে হবে।