আগামী দুই-এক দিনের মধ্যেই বাংলা লেবেল জেনারেশন নিয়মাবলীর (এলজিআর) ৪.৪ সংস্করণ প্রকাশিত হবে। সেখানে ইউনিকোডের জটিলতার জন্য নোকতা যুক্ত ড়, ঢ় ও য় বর্ণ-কে বাংলা লিপি হিসেবে ব্যবহার করার জন্য একটি ফুট নোট প্রকাশ করা হবে। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে ইউনিকোডের জটিলতা দূর করতে পারলে স্বতন্ত্র লিপি হিসেবে ড়, ঢ় ও য় বর্ণ প্রকাশ করার বিষয়টিও ফুট নোটে উল্লেখ থাকবে। উল্লেখিত তিনটি বর্ণ ছাড়া স্বতন্ত্র বা অন্য কোনো লিপিতে টপ লেভেল ডোমেনে নোকতা ব্যবহার হবে না।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) আইকান কর্তৃক গঠিত নিও ব্রাক্ষ্মি জেনারেশন প্যানেলের (এনবিজিপি) সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বাংলাদেশ থেকে এই বৈঠকে যোগ দেন বিটিআরসি’র ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন বিভাগের মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মাহ্ফুজুল করিম মজুমদার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) পরামর্শক মামুন অর রশীদ, বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের মহাসচিব মোহাম্মাদ আব্দুল হক অনু এবং ভাষা প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও প্রফেশনালস সিস্টেমসের প্রধান নির্বাহী হাসিব রহমান।
অন্যদিকে দিল্লী থেকে এনবিজিপি কো চেয়ারম্যান উদয় নারায়ণ সিংহ এবং কোলকাতা থেকে রাজীব চক্রবর্তী অনলাইন বৈঠকে যোগ দেন। ব্যাংকক থেকে এতে অংশ নেন আইকান এর গবেষণা পরামর্শক পিটিনান কোআর্মর্পনপাটানা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের মহাসচিব মোহাম্মদ আব্দুল হক অনু বলেন, এটা আমাদের ১৫ মাস আন্দোলনের ফসল। ইউনিকোডে সমস্যা থাকায় বাংলালিপিতে নোকতা বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছিলাম আমরা। আজ আমরা ভারত-বাংলাদেশ বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের বৈঠকে আমাদের দাবি প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছি। অগামীতে ইউনিকোডে স্বতন্ত্র অক্ষর হিসেবে ড়, ঢ় ও য়-তে নোকতা ব্যবহার করতে হবে। অন্যকোনো লিপিতে নোকতা ব্যবহৃত হবে না। তবে এই ফসল ঘরে তুলতে এখন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলকে (বিসিসি) ইউনিকোডের পেছনে লেগে থাকতে হবে। এটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। হাল ছাড়া যাবে না।
তিনি বলেন, আমরা যদি রক্তে কেনা রাষ্ট্রভাষা বাংলা-কে ডিজিটাল দুনিয়ায় বাংলাদেশের গৌরব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই তাহলে আমাদের লিপির স্বাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। বিষয়টি নিয়ে যাদের কাজ করার কথা তারা যদি সময় মতো এই উদ্যোগ নিতো তাহলে আজকের এই জটিল পরিস্থিতির উদ্ভব হতো না।
মোহাম্মাদ অনু বলেন, ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামে যখন আমি বিষয়টি বুঝতে পারি তখন এ বিষয়টির সমাধানে বাংলা একাডেমি-কে যুক্তকরি। কিন্তু একটি বৈঠকের পর রহস্যজনক কারণে তারা এই বিষয়ে আর আগ্রহ দেখায়নি। অথচ তারা যদি প্রকৃত অর্থেই বাংলা ভাষার প্রযুক্তি উন্নয়ন নিয়ে কাজ করতো তবে ৩০ বছর আগেই এই সমস্যা কেটে যেতো। যা হোক দেরিতে হলেও ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সহযোগিতায় এখন এর সঙ্গে বিটিআরসি-কে যুক্ত করা হয়েছে। এখন এই কাজের জন্য বাজেট বরাদ্দ দেয়া হলে ভবিষ্যত গবেষণার মাধ্যমে এই কাজ সহজতর হবে।