বাংলাদেশে আসছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আইটি প্রতিষ্ঠান কেপিজিমিনি এবং আইটি খাতে বিনিয়োগ ও খ্যাতিমান আইটি পরামর্শক কোম্পানি অ্যাকসেঞ্চার। গ্রামীণফোনের সঙ্গে ভুলবোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে এবার বাংলাদেশে অফিস খুলতে পাারে অ্যাকসেঞ্চার। আগামী বছরের মাঝামাঝি তারা বাংলাদেশে অফিস খুলতে করতে পারে বলে জানা গেছে। এরপরই কেপিজিমিনিও আসতে পারে।
প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশে দুই বছরে এক লাখ কর্ম সংস্থান তৈরির লক্ষ নিয়ে এই উদ্যোগ নিয়েছে আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির (ডিএইচএস) প্রকল্পের সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) বিশেষজ্ঞ এবং অ্যাকসেঞ্চার এর গ্লোবাল ডেলিভারি প্রোগ্রাম ম্যানেজার শেখ গালিব রহমান।
তিনি জানান, এজন্য বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কনসাল্টিং ফার্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে লবি করছেন তিনি। এদের মধ্যে অ্যাকসেঞ্চার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের স্কিল ক্যাপাবালিটির ওপর বিশ্বের সেরা ৫টি কনসাল্টিং ফার্ম দেশের একটি সেমিনারে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। এগুলো হলো- অ্যাকসেঞ্চার, ডেলয়েট, কেপিজিমিনি, কেপিএমজি ও ইঅ্যান্ডওয়াই। বাংলাদেশে এই সেমিনারের আয়োজন করছে ট্রান্সফোটেক।
তিনি বলেন, গুগল-ফেসবুক’র পেছেনে না দৌড়ে সেবা ভিত্তি আউট সোর্সিং এর পেছনে আমাদের শ্রম দেয়া দরকার। তা না হলে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে আমরা পিছিয়ে পড়বো। সে কারণে আউটসোর্সিং নিয়মিত মানবসম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে শীর্ষ আউটসোর্সিং কোম্পানিকে দেশে আনা দরকার। এ জন্য আমি এবং আরো বেশ কয়েকজন আইটি উদ্যোক্তা কাজ করছি।
গালিব জানান, এ নিয়ে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফররত অবস্থায় বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীরও এ বিষয়ে বেসিস সর্বাত্মক সহায়তা করবে বলে জানিয়েছে। দেশের প্রযুক্তি খাতের জন্য দীর্ঘমেয়াদী উন্নতি কল্পে চলতি মাসে অ্যাকসেঞ্চারের সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদশে তাদের অফিস স্থাপনের লাভজনক বিষয়টি তাদেরকে অবহিত করেছেন। বাংলাদেশ থেকে আউটসোর্সিং করিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে তাদের মুনাফার বিষয়টি মাথায় রেখেই তারা এখানে অফিস স্থাপনে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে উচ্চশিক্ষার লক্ষ্যে আমেরিকায় যান গালিব রহমান । সেখান থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে সিটি কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে ২০১৭ সালে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রোগ্রাম উদ্যোক্তা হিসেবে ডিপ্লোমা করেন। বরিশাল শহরে বেড়ে ওঠা জনতা ব্যাংক কর্মকর্তা এস এম সিদ্দিকুর রহমানের বড় ছেলে গালিব। শিক্ষক মা মাহিনুর ইয়াসমিনের উৎসাহে আইটি ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জনের পথে হাঁটেন তিনি। আমেরিকার ওহাইওতে থাকাকালে অধ্যয়নের পাশাপাশি কিউ এনালিস্ট হিসেবে আইবিএমে প্রথম চাকরি শুরু করেন। এরপর আইটি কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি নেন চেজ ব্যাংক, ক্যাপিটাল ওয়ান ও ডিজনি ওয়ার্ল্ডে। তারপর খ্যাতিমান আইটি উদ্যোক্তা কেপজিমিনি’র প্রকল্প ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব শেষে তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ হিসেবে যোগ দেন আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির (ডিএইচএস) প্রকল্পে। ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ডিজিটাল সার্ভিস (ইউএসডিএস) প্রকল্পে আইটি কনসালটিং ডাইরেক্টর হিসেবে যোগ দেন ।
তবে চাকরির পাশাপাশি আমেরিকায় বাংলাদেশীদের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সম্পৃক্ত করতে ছয় বছর আগে গালিব রহমান ট্রান্সফোটেক নামে একটি আইটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খোলেন। সেখান থেকেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তিবিদের পাশাপামি উদ্যোক্তা গড়ে তোলার মিশনের লক্ষ্য হিসেবে বিপিও খাতের শীর্ষ কোম্পানিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।