আইনি লড়াই নয়; উভয় পক্ষের বিজয়ী অবস্থার মধ্য দিয়ে গ্রামীণ ও রবি’র পাওনা বিষয়ক বিরোধের নিষ্পত্তি হবে। বিটিআরসি কঠোর অবস্থা থেকে ফিরে আসবে। অন্যদিকে অপারেটরার মামলা প্রত্যাহার করবে। স্বচ্ছতার মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য উপায়ে দ্রুততম সময়ে আলোচনার মাধ্যমে পাওনা আদায় হবে।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সচিবালায়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বেসরকারি মোবাইল অপারেটর গ্রামীনফোন এবং রবি এর নিকট সরকারের বকেয়া পাওনা টাকা আদায় বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, গ্রামীণফোন সিইও মাইকেল ফোলি ও এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস এবং বিটিআরসির চেয়ারম্যান মো: জহুরুল হক ও রবির সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেন, পাওনা নিয়ে বিটিআরসি ও অপারেটরদের মধ্যে ভুলবোঝাবুঝি ছিলো এবং আছে। আলোচনার মাধ্যমে এর সমাধান হবে। আশা করি, দুই-তিন সপ্তাহের মধ্যে এটি সমাধান হবে। আমরা এর জন্য আদালতে যাব না, নিজেরা বসেই সিদ্ধান্ত নেব।
সরকার পাওনা আদায়ে ছাড় দেবে কি না প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এতে কে লাভবান হবে কে ক্ষতির মুখে পড়বে জানি না। তবে আমরাই বেশি ক্ষতির মুখে পড়বো। তাই কঠোর অবস্থায় না গিয়ে আলোচনার মধ্যদিয়ে স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য উপায়ে সমাধান হবে। আমরা অন্য কোনো রাস্তায় যাবো না। একদিন আগে বা পড়ে টাকা দেবে। অপারেটররা তাদের মাদার কোম্পানির সঙ্গে কথা বলে পাওনা বুঝিয়ে দেবে। আমরা তাদেরকে সাহায্য করবো। যেটুকু সাহায্য দরকার পূর্ণাঙ্গভাবে করবো।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বিটিআরসি’র পাওনা এবং সুদ নিয়ে অংকটা বড় হয়েছে। এই পাওনা আদায়ে কাকতালীয় ভাবে বড় দুইটি অপারেটরের সঙ্গে বিটিআরসি’র একটি বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। গত রাত থেকে পরিস্থিতি পাল্টেছে।
তিনি বলেন, যেহেতু আইনে আরবিট্রেশনের কোনো সুযোগ নেই তাই টেবিল আলোচনার মাধ্যমে সেই সমস্যার সমাধান হবে। জাতীয় অর্থ ও রাজস্ব আদায়ে উইন উইন পরিবেশ সৃষ্টি হবে।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, মোবাইল অপারেটররা রাজস্বে বড় অবদান রাখে। ডিজিটাল বিপ্লবের পেছনে অপারেটরদের ভূমিকা বেশি। মাইকেল স্বীকার করবে, এটা সদিচ্ছার বিষয় নেয়। এটি আপত্তি অনাপত্তির বিষয়। আমরা আশাবাদী আলোচনার মাধ্যমে বিরোধের নষ্পত্তি ঘটবে। এমন কোনো কিছুর উদ্ভব ঘটবে না যেন সুপরিবেশ বিনষ্ট হয়।
জিপি সিইও মাইকেল ফোলি বলেন, আপনারা জানেন গত ২২ বছর ধরে বাংলাদেশের উন্নয়নে গ্রামীণফোন পাশে থেকেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ স্বচ্ছতার সঙ্গে ও দ্রুত উদ্ভূত পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটবে।
এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, বিটিআরসি পাওনা ৮ হাজার কোটি টাকার ভিতরে ৬০-৭০ শতাংশ সুদ। আর এনবিআর সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার মধ্যে কোনো সুদ নেই। আলোচনার মাধ্যমেই এই পাওনা আদায় হবে।
তিনি আরো বলেন, গ্রামীণফোন চেয়েছিল আরবিট্রেশনের মাধ্যমে বিরোধ মীমাংসা করতে। তবে বিটিআরসির আইনে আরবিট্রেশনের কোনও সুযোগ না থাকায়, তাদের প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়নি। আমরা তাদের পরামর্শ দিয়েছি, বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য অতিদ্রুত টেলিনরের সঙ্গে কথা বলতে। তারা আমাদের পরামর্শ গ্রহণ করেছে।