লাইসেন্স বাতিল নয়, প্রশাসক নিয়োগ করেই গ্রামীণফোন ও রবি আজিয়েটার কাছ থেকে পাওনা আদায় করবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এক্ষেত্রে আইনের সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করা হবে।
গ্রমাণ ও রবি-কে কেন লাইসেন্স বাতিল করা হবে না মর্মে দেয়া নির্দেশনার পর প্রতিষ্ঠান দু’টির আদালতে মামলা করার পরিপ্রেক্ষিতে এ কথা বলেছেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান। গত ২৫ ও ২৬ আগস্ট ঢাকার দেওয়ানী আদালতে রবি ও গ্রামীণফোন মামলা দু’টি করে।
এ বিষয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান জহুরুল হক জানিয়েছেন, রাষ্ট্রীয় পাওনা আদায়ে আইন অনুযায়ী চলবে বিটিআরসি। এই সংস্থার ওপর কোনো চাপ নেই। প্রশাসক নিয়োগ করে রাষ্ট্রীয় পাওনা আদায় করা হবে। তবে লাইসেন্স বাতিল করার কেনো সিদ্ধান্ত নেই।
তিনি বলেন, ২০০১ সালে সংসদে পাশ হওয়া আইনে ৪৬ ধারায় স্পষ্ট করে বলা হয়েছে কোনো অপারেটর যদি বিটিআরসি’র আইনসঙ্গত কথা-বার্তা না শোনে তবে বিটিআরসি সেই অপারেটরের কার্যক্রম বন্ধ করতে পারবে। লাইসেন্স বাতিল করতে পারবে। প্রশাসক নিয়োগ করতে পারবে। সেই প্রক্রিয়ায় এগুচ্ছে বিটিআরসি।
দুই অপারেটরের মামলায় পুরো প্রক্রিয়াটি ঝুলে পড়বে কিনা প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, মামলা যদি হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট এবং আপিল বিভাগ আমাদের কার্যক্রমকে স্টে করে দেয় তাহলে সেই স্থগিতাদেশটি মানবো। আর যতি অ্যাপিলেয়েড ডিভিশন স্টে না করে তবে আমাদের কার্যক্রম চলতে থাকবে। আর স্টে করতে পারাটা কিন্তু সহজ নয়। কেননা এই অডিট হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট ও আপিল বিভাগের নির্দেশে।
জহুরুল হক বলেন, এই অডিটটি বিটিআরসি করেনি। বিটিআরসি ১০ বছর আগে অডিট করেছিলো। তখন পাওনা ছিলো ৩ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। ওই সময় সেই টাকা না দিয়ে জিপি আদালতে গিয়েছিলো। তারপর আপিল বিভাগের নির্দেশনায় পুণঃ নিরীক্ষার নির্দেশ দেয়া হয়। আপিল বিভাগের সিদ্ধান্তে অডিট করা হয়েছে। তাই সেই আপিল বিভাগে গেলেই স্টে অর্ডার হয়ে যাবে এটা আমরা কিভাবে বলি। তারপরও সাংবিধানিক কোর্ট আপিল বিভাগ। কোর্ট যা করবে তা আমরা মানবো।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানিয়েছেন, গুণগত মানের বাংলাদেশী বা আন্তর্জাতিকমানের কোনো অডিট প্রতিষ্ঠান দিয়ে নতুন করে নিরীক্ষা করার কোনো সুযোগ আইনে নেই।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে জহুরুল হক বলেন, বিটিআরসি’র কাছে কোনো চাপ নেই। একটি রেগুলেটরি বডি হিসেবে আমরা আইন অনুযায়ী ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছি। প্রশাসক নিয়োগের আগে আমরা সরকারের অনুমোদন নিয়েছি। ৩০ দিনের নোটিশ দিতে হয়। তাও দিয়েছি। তাপররের প্রক্রিয়া অনুযায়ী আমরা প্রশাসক নিয়োগের দিকে যাচ্ছি। আমরা আইনের কোনো ব্যাত্যয় ঘটাচ্ছি না।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, প্রশাসক নিয়োগ করে রাষ্ট্রীয় পাওনা আদায় করা হবে। লাভ সরাসরি ভাগ না করে ঋণ পরিশোধ করে তা বন্টন করা হবে। এক্ষেত্রে প্রশাসক কোম্পানি পারিচলানা ও কর্মীদের বেতন-ভাতা দিয়ে মুনাফা বন্টন করবে। আর প্রশাসক নিয়োগের পর পাওনা আদায় না হওয়ার কোনো শঙ্কা নেই। একইভাবে কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাওয়া বা লাইসেন্স বাতিল হওয়ারও কোনো আশঙ্কা নেই।