বিধি বহির্ভূতভাবে গঠন করা হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটি। এমন অভিযোগের বিষয়ে বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সৈয়দা নাহিদা হাবিবা স্বাক্ষরিত একপত্রে এ তথ্য জানানো হয়।
সূত্রমতে, বিসিএস-এর অগঠনতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড এবং বিভিন্ন অনিয়ম বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে চারটি লিখিত অভিযোগ করেন সংগঠনের সদস্য (সদস্য নং ৫৮) এটিএম শফিক উদ্দিন আহমেদ। তার অভিযোগের প্রেক্ষিতেই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং সে কমিটির পক্ষ থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন স্বাক্ষরিত প্রতিবেদন গত ১৯ আগস্ট জমা দেয়া হয়।
তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ৮ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সৈয়দা নাহিদা হাবিবা স্বাক্ষরিত একপত্রে সংশ্লিষ্টদের ১২ সেপ্টেম্বর শুনানিতে উপস্থিত হওয়ার জন্য নির্দেশনা দেন।
সূত্রমতে, ২০১৮ সালের ১০ মার্চ ২০১৮-২০ মেয়াদকালে বিসিএস নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সভাপতি হন ইঞ্জি. সুব্রত সরকার। দুই বছর মেয়াদী এই দায়িত্ব নিলেও গত ২ এপ্রিল নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন মো. শাহিদ-উল-মুনীর। অবশ্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এক মেয়াদে দুই সভাপতি আইন বহির্ভূত।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযোগকারী লিখিত অভিযোগে বলেছেন, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সংঘবিধির বিধি ১৯(খ) অনুযায়ী ২০১৮ সালের ১০ মার্চ অনুষ্ঠিত কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনের ভোট গণনা শেষে ফলাফল প্রকাশের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তফসিল অনুযায়ী নির্বাচন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে নবনির্বাচিত সদস্যরা তাদের মধ্য হতে সভাপতি, সহ-সভাপতি, মহাসচিব, যুগ্ম মহাসচিব এবং কোষাধ্যক্ষ দুই বছরের জন্য নির্বাচন করার কথা।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ২০১৮ সালের ১২ মার্চ নির্বাচন কমিশন দুই বছর মেয়াদী কমিটির পরিবর্তে এক বছর মেয়াদী দুটি কমিটি ঘোষণা করে; যা আইনত অবৈধ।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে গঠিত তদন্ত কমিটির লিখিত প্রতিবেদনে ‘সাক্ষ্য এবং সংশ্লিষ্ট বিধি পর্যালোচনা’ অংশে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির ২০১৮-২০২০ মেয়াদকালের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠনের জন্য স্বদেশ রঞ্জন সাহা নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং খন্দকার আতিক-ই-রাব্বানী ও কামরুল ইসলাম নির্বাচন বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।’
‘বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা ১৯৯৪ এর বিধি ২১(১) অনুযায়ী ফেডারেশন ব্যতীত অন্য বাণিজ্য সংগঠনের মেয়াদ হবে দুই বছর অথবা বিকল্প হিসেবে উক্ত সংগঠন, উপবিধি (৩) এর বিধান সাপেক্ষে এর কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদ তিন বছর নির্ধারণ করতে পারবে।’
এসব বিষয় উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদনের শেষ দিকে বলা হয়েছে, ‘অভিযোগটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, বাণিজ্য সংগঠন ১৯৯৪ এর ২১(১) বিধি এবং বিসিএস-এর সংঘবিধির ১৯(খ) বিধি অনুযায়ী এক বছর মেয়াদী দুই কমিটি গঠন করার কোনো সুযোগ নেই। বিধি ভঙ্গ করে কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়েছে।’