টুইটার বাগিয়ে নেয়ার নাটকীয়তা থেকে লাগাতার কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণে নিয়মিত খবরের শিরোনামে আসছেন টেসলা ও স্পেসএক্সের সিইও ইলন মাস্ক। কিন্তু এবার তিনি এক আশ্চর্য দাবি করে চমকে দিয়েছেন সকলকে।
জানিয়েছেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যেই মানুষের মস্তিষ্কে ব্রেন চিপ প্রতিস্থাপনের ক্লিনিকাল ট্রায়াল শুরু করবে নিউরোলিংক। মূলত অন্ধ ও পক্ষাঘাতে অসুস্থ রোগীদের মস্তিষ্কেই কয়েনের আকারের এই চিপ প্রতিস্থাপন করে দেবে মাস্কের প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে মানব মস্তিষ্ককে কম্পিউটারের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া যাবে।
অবশ্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তিটি এখনও তৈরির কাজ চলছে। প্রস্তুত করা হচ্ছে ‘সার্জিক্যাল রোবট’ নামে একটি নতুন ধরনের রোবট। এই রোবটটি এন১ চিপ বসানোর জন্য দ্রুত মানুষের মাথার খুলির একটি অংশ কেটে ফেলবে।
নিউরোলিংকের সদর দপ্তরে প্রযুক্তিটির অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ অনুষ্ঠানে ইলন মাস্ক বলেছেন, এই প্রযুক্তির সাহায্যে যাদের আংশিক দৃষ্টিশক্তি নেই, তাদের দৃষ্টি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। পক্ষাঘাতগ্রস্তদের চিকিৎসা করার পাশাপাশি জন্মান্ধদেরও এই প্রযুক্তির সাহায্যে দৃষ্টি ফিরিয়ে দেওয়া যাবে। প্রতিবন্ধী রোগীরা আবার সহজে চলাফেরা করতে পারবেন।
বুধবার সন্ধ্যায় ওই অনুষ্ঠানে এই প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে কিছুটা সতর্ক থাকার কথাও জানিয়েছেন মাস্ক। বলেছেন, ‘‘মানুষের মস্তিষ্কে প্রতিস্থাপন করার আগে আমাদের ভীষণ সতর্ক হতে হবে এন১ চিপ নিয়ে। কোনও ক্ষেত্রে যেন কোনও রকম খামতি না থাকে সে বিষয় বিশেষ নজর দিতে হবে।’’
এন১ চিপ হল একটি ছোট মাইক্রো-প্রসেসর যা এক জন ব্যক্তির মস্তিষ্কের মধ্যে দৃঢ় ভাবে প্রতিস্থাপন করা হবে। এই চিপটি মানুষের মস্তিষ্ককের কার্যকলাপ রেকর্ড করার ও মস্তিষ্ককে উদ্দীপিত করার ক্ষমতা রাখে। রিপোর্ট অনুসারে, এ ক্ষেত্রে কানের চার পাশে পাতলা ইলেক্ট্রোড বসানো হবে যা সরাসরি মস্তিষ্কের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। এই ইলেক্ট্রোড দ্বারা প্রেরিত বৈদ্যুতিক তরঙ্গ মস্তিষ্ককে উদ্দীপিত করবে।
মানুষের মস্তিষ্কে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ নিয়ে ২০১৬ সাল থেকে কাজ করছে ‘নিউরোলিংক’। প্রাথমিক ভাবে বানরের মস্তিষ্ক নিয়ে গবেষণা শুরু করে তারা। গত বছরই জানা যায়, বানরটি মাথার ভিতরে ওই চিপ বসিয়ে সরু তার দিয়ে মস্তিষ্কের সঙ্গে সেটির যোগসূত্র তৈরি করা হচ্ছে। তার ফলেই বানরটি নিজের মাথাকে কাজে লাগিয়ে দিব্যি ভিডিও গেম খেলতে পারে! একটি বানর অন্য একটি বানরের সঙ্গে কীভাবে মনে মনে যোগাযোগ তৈরি করতে পারে, সেই দিকটি খতিয়ে দেখেই মস্তিষ্কে ওই চিপ বসানো হয়েছে বলে দাবি করেছে নিউরোলিংক।