বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলোর মধ্যে এখন আর মহাকাশ নিয়ে দেশভিত্তিক প্রতিযোগিতা নেই। এখন প্রতিযোগিতা মূলত বহুমাত্রিক কোম্পানি ও বিলিয়নিয়ারদের মধ্যে। ১৫ বছর সেবা দেয়ার পর মীর স্পেস স্টেশন অরবিট থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। বর্তমানে কার্যকর থাকা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) চলতি দশকেই অবসরে যাবে বলে পরিকল্পনা করা হয়েছে। আগামী দিনের মহাকাশ স্টেশন কোনো দেশ নয়, বরং বিভিন্ন কোম্পানির মালিকানা ও পরিচালনায় থাকবে। বস্তুত সেই প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে।
নাসার প্রশাসক জিম ব্রাইডেনস্টাইন সম্প্রতি সিনেক কমার্স কমিটির স্পেস সাবকমিটির সভায় বলেন, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের পর কী আসতে যাচ্ছে আমরা সেটির জন্য প্রস্তুত নই। একটি স্পেস স্টেশন বানাতে অনেক সময় লাগে, বিশেষ করে এটিকে সেভাবে তৈরি করতে হয় যা আগে অন্য কেউ করেনি।
নাসা ২০১৯ সালেই বাণিজ্যিক এলইও ডেভেলপমেন্টে একটি পরিকল্পনা প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়েছিলো, বিভিন্ন গ্রাহকের কাছ থেকে নাসা লো-আর্থ অরবিটের সেবা গ্রহণ করবে। একটি বাণিজ্যিক স্পেস স্টেশন ইকোসিস্টেম তৈরি করতে প্রয়োজনীয় সকল পরিকল্পনাই ছিলো সিএলডিতে। আর এর ফলেই গত এপ্রিলে স্পেসএক্স আইএসএসে নভোচারী নিয়ে যেতে পেরেছে। বাণিজ্যিক কাজের জন্যও প্রাইভেট কর্পোরেশনগুলো আইএসএসের রিসোর্স কিনতে পারবে, যেমন স্টেশনের জায়গা লিজ নিয়ে বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালাতে পারবে।
অলাভজনক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন ইউএস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির সাথে ইতিমধ্যেই অর্ধশতাধিক কোম্পানি চুক্তি করেছে। এসব প্রতিষ্ঠান মহাকাশে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
ইতিমধ্যে একাধিক কোম্পানি তাদের নিজস্ব বাণিজ্যিক মহাকাশ স্টেশন তৈরি ও মহাকাশে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনায় কাজ করছে। এর মধ্যে এক্সিওমের আইএসএস গ্রোন স্পেস স্টেশন, ন্যানোর্যাকসের স্টারল্যাব, ব্লু অরিজিনের অরবিটাল রিফ, নর্থরফ গ্রুমানের সিগন্যাস-ভিত্তিক স্পেস স্টেশন উল্লেখযোগ্য। ফলে সেদিন খুব বেশি দূরে নয় যে, মহাকাশে বাণিজ্যিকভাবে ফ্লাইটে ভ্রমণ করতে পারবেন সাধারণ যাত্রীরা। কিংবা যেকোনো কোম্পানি বা দেশ মহাকাশে তাদের গবেষণা কার্যক্রম চালাতে পারবে!
ডিবিটেক/বিএমটি