তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য উৎপাদন ও আইসিটিতে কর্মসংস্থান সৃষ্টির স্বীকৃতি হিসেবে উইটসা গ্লোবাল আইসিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০১৯ অর্জন করেছে বাংলাদেশ। পাঁচটি বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে গৌরবজ্জ্বল সম্মাননা হিসেবে বিবেচিত চেয়ারম্যান অ্যাওয়ার্ডস পেয়েছে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (৯ অক্টোবর) আর্মেনিয়ার রাজধানী ইয়েরেভ্যানের কারেন ডেমিরচান কমপ্লেক্সে তথ্যপ্রযুক্তির অলিম্পিক খ্যাত ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অব ইনফরমেশন টেকনোলজি’র (ডব্লিউসিআিইটি) ২১তম আয়োজনের অ্যাওয়ার্ড নাইটে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এই অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে।
বাংলাদেশের পক্ষে এই অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, হাই-টেক পার্ক কতৃপক্ষের (বিএইচটিপিএ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম এবং বিএইচটিপিএ এর প্রশাসন ও অর্থ বিভাগের পরিচালক ড. খন্দকার আজিজুল ইসলাম।
উইটসার চেয়ারম্যান ইভোন চু এই অ্যাওয়ার্ডটি প্রদান করেন। এসময় বিসিএস সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর উপস্থিত ছিলেন।
ওয়ার্ল্ড আইটি সার্ভিসেস অ্যালায়েন্স (উইটসা) প্রতিবছর এই সম্মেলনের আয়োজন করে থাকে। বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিশ্ব সংগঠন উইটসা বাংলাদেশী সদস্য। বিসিএস বাংলাদেশ থেকে এ সম্মাননার জন্য বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের নাম প্রস্তাব করে।
চেয়ারম্যান অ্যাওয়ার্ড অর্জন সম্পর্কে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকবলেন, হাই-টেক পার্কের মাধ্যমে আমরা বিদেশি বিনিয়োগের পথকে সহজ করেছি। এই সম্মাননা তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার স্বীকৃতি।
তিনি বলেন, হাই-টেক পার্কের মাধ্যমে দেশে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি, আইটি বিশেষজ্ঞ তৈরিসহ শ্রম শক্তির পাশাপাশি মেধা শক্তিতে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়ে দিতে আমরা বদ্ধ পরিকর।
পলক বলেন, বাংলাদেশের গ্রামে গঞ্জে পৌঁছে গেছে ইন্টারনেট। ইন্টারনেট অব থিংকস, কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি (এআই), রোবট নির্মাণে দেশের তরুণরা অগ্রসর হচ্ছে। ৫ম শিল্প বিপ্লবে আইসিটি হবে বাংলাদেশের অন্যতম হাতিয়ার।
হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম বলেন, হাই-টেক পার্কের এই সফলতায় আমি গর্বিত। আমাদের এই অর্জনের কৃতিত্ব শুধু আমাদের একার নয়। দেশের তরুণ সমাজের স্বপ্নপূরণে হাই-টেক পার্ক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করেছে। আইটি ব্যবসায় প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানরাও হাই-টেক পার্কে নিজেদের পরিধি বৃদ্ধি করতে আগ্রহী। তথ্যপ্রযুক্তিতে তড়িৎ গতির উন্নয়নের এই পদযাত্রা চলমান থাকবে। আমরাই হবো তথ্যপ্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করার সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান।
বিসিএস সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর বলেন, উইটসার একমাত্র সদস্য হিসেবে বিসিএস তথ্য প্রযুক্তিতে অনন্য অবদান রাখার জন্য বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ককে মনোনয়ন দিয়েছিল। এই মনোনয়ন নিঃসন্দেহে সঠিক পদক্ষেপ ছিল। সময় এখন আইসিটিতে সারা পৃথিবীকে নেতৃত্ব দেয়ার। দেশের প্রতিটি কোণে যখন আইসিটির সুবাতাস প্রবাহিত হচ্ছে তখন এই বিশ্বকে আইটিতে নেতৃত্ব দিতে আমাদের চেয়ে যোগ্য আর কেউ হবে না। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে সরকারি বেসরকারি সংস্থাগুলো যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের আইসিটি ক্ষেত্রে সফলতায় সরকারের এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। চেয়ারম্যান অ্যাওয়ার্ডে মনোনীত করার জন্য আমি উইটসাকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
প্রসঙ্গত, ৬ অক্টোবর শুরু হওয়া উইটসার ২১তম সম্মেলন ডব্লিউসিআইটিতে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি এর নেতৃত্বে বিসিএস এর সহযোগিতায় ৩৭ সদস্যের একটি দল অংশগ্রহণ করেছে। জাতীয় সংসদের সদস্য অপরাজিতা হক, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেব, বিসিএস সহসভাপতি ইউসুফ আলী শামীম, পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত সরকারসহ সরকারি বেসরকারি উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সাংবাদিক বৃন্দ এই দলের সদস্য হিসেবে ডব্লিউসিআইটিতে অংশগ্রহন করেন।