কম্পিউটারের জন্য একটি আরবি-ভাষা অপারেটিং সিস্টেম তৈরির প্রথম ব্যক্তি ও কুয়েতি টেক উদ্যোক্তা মোহাম্মদ আব্দুল রহমান আল-শেরেখ ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না নিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইজি রাজেউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। শোখর সফটওয়্যার কোম্পানির এই প্রতিষ্ঠাতার মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন দুবাইয়ের রাজা শেখ হামদান বিন মোহাম্মাদ বিন রশীদ আল মাখদুম। সূত্র: সাউদি গেজেট ও গালফ নিউজ।
এছাড়াও কুয়েতের ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর কালচার, আর্টস অ্যান্ড লেটারস এক্স-এ বলেছে, তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আরবি সফটওয়্যার প্রবর্তক মোহাম্মদ আল-শেরেখের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। জাতীয় সংস্কৃতি, শিল্প ও সাহিত্য পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল রহমান বাদাহ আল-মুতাইরি এবং পরিষদের নেতা ও কর্মচারীরা আল-শেরেখের মৃত্যুতে তার পরিবার ও স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
১৯৮০ সালের দিকে বেশিরভাগ কম্পিউটার শুধুমাত্র ইংরেজি ভাষাভাষীদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল, যারা অন্যান্য ভাষায় কথা বলে তাদের জন্য এটি একটি বাধা হয়ে দাঁড়ায়। আল-শেরেখ এটিকে একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখেন এবং সমাধান খোঁজার জন্য গবেষণা চালিয়ে যান।
কয়েক বছর গবেষণা করে তিনি কম্পিউটারের জন্য প্রথম আরবি ভাষার ইন্টারফেস তৈরি করেন।
১৯৮০ সালে তিনি কুয়েতের সদর দপ্তরসহ আল-আলামিয়া গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন, ১৯৮২ সালে শাখর সফ্টওয়্যার কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন, যা আরবি-ভাষা প্রক্রিয়াকরণে গবেষণা ও উন্নয়নে পথিকৃৎ হিসেবে আবির্ভূত হয়।
আল-শেরেখের কোম্পানি কম্পিউটারে আরবি ব্যবহারের সঙ্গে সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি পেটেন্ট অর্জন করেছে। এসএসসি মধ্যপ্রাচ্য উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলের একমাত্র কোম্পানি যা এ ক্ষেত্রে তিনটি মার্কিন পেটেন্ট ধারণ করে।
১৯৮৬ সালে তার কোম্পানিটি মাইক্রোসফটে আরবি ভাষা ব্যবহারের পরিষেবা প্রদানকারী হয়ে ওঠে।
আল-শেরেখের কাজ কেবল আরব বিশ্বে যোগাযোগ এবং সহযোগিতার সুবিধাই দেয়নি বরং প্রযুক্তিবিদদের একটি নতুন প্রজন্মকে প্রযুক্তিতে ভাষাগত বৈচিত্র্যের সীমানাকে এগিয়ে নিতে অনুপ্রাণিত করেছে।
২০২১ সালে তিনি ইসলাম, ইসলামিক অধ্যয়ন, আরবি ভাষা ও সাহিত্য, চিকিৎসা ও বিজ্ঞানের অসামান্য অবদানের জন্য মর্যাদাপূর্ণ কিং ফয়সাল আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হন।
আল-শেরেখ কুয়েতের ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর কালচার, আর্টস অ্যান্ড লেটারস থেকে ২০১৮ সালে রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পান। এর আগে তিনি ২০০৭ সালে ওয়ার্ল্ড সামিট অ্যাওয়ার্ডস এবং ই-ইনক্লুশন অ্যাওয়ার্ড পান।
২০০২ সালে তিনি অ্যারাবিয়ান বিজনেসের ই-ভিশনারি অব দ্য ইয়ার পুরস্কার জিতেন। ১৯৯৮ সালে তিনি কমডেক্সের প্রদর্শনীতে ‘সেরা পণ্য’ পুরস্কার পান।