প্রযুক্তি বিশ্বের ৪০ জনের বেশি প্রযুক্তি উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী ও প্রকৌশলীর যুথবদ্ধতার মধ্য দিয়ে আত্মপ্রাকাশ করলো ‘টেক ফর প্যালেস্টাইন’ নামে নতুন জোট। জোট গঠনের পরই যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাতে ইচ্ছুক প্রকৌশলীদের জন্য নতুন ব্যাজ তৈরি করেছে জোটটি, যা ব্যবহার করা যাবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সফটওয়্যার কোম্পানি গিটহাব-এ। এ ছাড়া, যুদ্ধ বিরতির সমর্থন জানানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন ‘এইচটিএমএল স্নিপেট’ও বানিয়েছে নতুন এ জোট। সূত্র : টেকক্রাঞ্চ
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ যখন চরম উত্তেজনাপূর্ণ মুহুর্তে তখন হামাস অধিকৃত ফিলিস্তিনিদের সহায়তায় নতুন এ জোট গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন জোটের প্রতিষ্ঠাতা পল বিগার। মার্কিন সফটওয়্যার কোম্পানি ‘সার্কেলসিআই’ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এই জোটের মাধ্যমে গাজার যুদ্ধ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো, স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো ও যারা ফিলিস্তিনের সমর্থনে প্রকাশ্যে কথা বলতে ভয় পান, তাদের সমর্থন দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করছেন বিগার।
তিনি জানিয়েছেন, ‘টেক ফর প্যালেস্টাইন’ জোটটির শেষ পর্যন্ত ফিলিস্তিনি সংস্থাগুলোর সঙ্গে আরও কাজ করার, পরামর্শ দিয়ে তাদের পাশে থাকার এবং ক্লাউড ক্রেডিট দিয়ে ফিলিস্তিনি স্টার্টআপগুলোকে সহায়তা করার পরিকল্পনা আছে।
এদিকে প্ল্যাটফর্মটি গঠনে সহায়তার জন্য এই জোটে ডিজিটাল আর্থিক লেনদেন সেবা ‘ট্রুবিল’-এর প্রতিষ্ঠাতা ইদ্রিস মোখতারজাদার ও তার অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করেছেন।
প্রসঙ্গত, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ প্রযুক্তি শিল্পেও বিভেদ সৃষ্টি করেছে। বিভিন্ন স্টার্টআপ কোম্পানি থেকে শুরু করে এ খাতের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে শক্তিশালী সমর্থন পেয়ে আসছে ইসরায়েল। অন্যদিকে, যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো ও ফিলিস্তিনের সমর্থনে কথা বলায় অনেক কর্মীরই চাকরি হারিয়েছে বলে খবর দিয়েছে বিশ্বগণমাধ্যমগুলো ।
ফিলিস্তিনি জনসাধারণের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার উদ্দেশ্যে প্রযুক্তি খাতে প্রথম জোট গঠনের ঘটনা নিয়ে টেকক্রাঞ্চ এর খবরে প্রকাশ, এ জোট গঠনের সূত্রপাত ঘটে বিগারের লেখা এক ব্লগ পোস্ট ভাইরাল হওয়ার পর, যেখানে প্রযুক্তি খাতে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন না থাকার বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা করেন তিনি। ব্লগ পোস্টটি লেখার পর হাজার হাজার মানুষ তার কাছে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সমর্থনের কথা জানালেও অনেকেই তাদের চাকরি হারানোর ঝুঁকির কারণে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কথা বলতে ভয় পান। এই উদ্যোগ প্রযুক্তি শিল্পের জন্য ‘টার্নিং পয়েন্ট’ হতে পারে। এর কারণ হিসেবে সাইটটি বলছে, মানুষ আরও বেশি যুদ্ধবিরতির পক্ষে কথা বলতে চায়।
প্রসঙ্গত, যুদ্ধের কারণে ফিলিস্তিনের উদীয়মান প্রযুক্তি খাত ধ্বংস হওয়ার কথা জানিয়ে মুসলিম প্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের জোট ‘মুসলামিক মেকার্স’-এর প্রতিষ্ঠাতা আরফাহ ফারুক জানিয়েছে, গত তিন মাস সবাইকে নানাভাবে বদলে দিয়েছে। একই সময়ে এমন সম্প্রীতি ও প্রতিবাদ দেখা গেছে, যা তিনি আগে কখনও দেখেননি। বিশ্ববাসী আর কিছু না করলেও তাদের ল্যাপটপে ফিলিস্তিনের পক্ষে কাজ করার লক্ষ্যে এক হয়েছেন। একইভাবে তিনিও বিগারের ভাইরাল ব্লগ পোস্ট পড়ার পর ‘টেক ফর প্যালেস্টাইন’ এর সঙ্গে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।