ইসরায়েলের সঙ্গে গাজার সংঘাত শুরুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফিলিস্তিনবিরোধী ও ইসলামবিদ্বেষী ভুয়া তথ্য বেশি ছড়ানো হচ্ছে প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে। বিশেষ করে ইলন মাস্কের ‘এক্স’–এ (সাবেক টুইটার) হামাস কর্তৃক শিশু অপহরণ, ট্রাকের পেছনে ইসরায়েলি তরুণের শিরশ্ছেদ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে হামাস মনস্তাত্ত্বিক লড়াই চালাচ্ছে- এমন ভুয়া তথ্য বেশি ছড়ানো হচ্ছে। আর এসব মিথ্য তথ্য ছড়াতে ব্যবহৃত হচ্ছে ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট।
অসংখ্য ভারতীয় ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট এই তথ্য দিয়েছে ভারতের অন্যতম ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান ‘বুম’। একইভাবে অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক ইসলামিক কাউন্সিল অব ভিক্টোরিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামবিদ্বেষী বেশির ভাগ টুইট ভারত থেকে করা হচ্ছে বলে শনাক্ত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ফিলিস্তিনিদের দুর্দশার মধ্যে ইসলামবিদ্বেষ সামনে চলে এসেছে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এটি বেশি দেখা যাচ্ছে। অনলাইনে এসব ঘৃণ্য বক্তব্য ‘বিজেপির আইটি সেল’ থেকে প্রচার করা হচ্ছে। এই সেল থেকে আগেও ঘৃণ্য বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে।
এছাগাও বুমের অনুসন্ধান বলছে, হামাস নিয়ে ভুয়া তথ্য ছড়ানো অ্যাকাউন্ট যারা পরিচালনা করেন, তাদের বেশির ভাগই উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে এক্স-থেকে ছড়ানো ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা তরুণীদের যৌনদাসী বানাতে অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছে ভুয়া ভিডিওটি দেখেছেন প্রায় ৬০ লাখ ব্যবহারকারী। বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, যেসব অ্যাকাউন্ট থেকে এসব ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে বা যারা দেখেছেন, তাদের বেশির ভাগই ভারতের নাগরিক। এমনকি এই ভিডিও ‘অ্যানগ্রি স্যাফ্রন’ বা ‘ওএসআইএনটি’ নামক টেলিগ্রাম চ্যানেলেও শেয়ার করা হয়েছে। এসব চ্যানেলও ভারত থেকে পরিচালনা করা হচ্ছে।
ফ্যাক্ট চেক করে বুমের অনুসন্ধান প্রতিবেদন বলছে, সোশ্যাল মিডিয়া শীর্ষে থাকা ভুয়া ১০টি ভিডিওর মধ্যে ৭টিই ভারতভিত্তিক অ্যাকাউন্ট থেকে ছড়ানো হয়েছে। এসব ব্যবহারকারীর অনেকে তাদের প্রোফাইল ছবি হিসেবে ভারতের পতাকা দিয়ে রেখেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স–এ এই ৭টি ভিডিও ৩০ লাখের বেশি ব্যবহারকারী দেখেছেন। এই ভিডিও গত সেপ্টেম্বরে ধারণ করা হয়েছিল। গাজায় আদৌ এ ধরনের কোনো অপহরণের ঘটনা ঘটেনি। সূত্রমতে, ভিডিওটি অ্যাংরি স্যাফ্রনের টেলিগ্রাম চ্যানেলেও শেয়ার করা হয়েছিল। এটি একটি আপাত ওপেন-সোর্স ইন্টেলিজেন্স বা ওএসআইএনটি চ্যানেল, যা ভারত থেকে পরিচালিত হয়।