দেশের খাদ্য নিরাপত্তা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার গুরুত্ব অনুধাবন করে ১৯৭০ সালের ১ অক্টোবর রাজধানী শহর ঢাকা থেকে ৩৬ কিলোমিটার উত্তরে গাজীপুরে ৭৬.৮২ হেক্টর জমি নিয়ে স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় পূর্ব পাকিস্তান ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ( ইপিআরআরআই)। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে জয়লাভের পর পরিবর্তিত নাম হয় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। এখান থেকে এরই মধ্যে তিন শতাধিক ধান উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে ব্রি। এই অবস্থার আরও এক ধাপ এগিয়ে নিতে বৃহস্পতিবার এই সংস্থার সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু-পিয়েরে ট্রুডো কৃষি প্রযুক্তি কেন্দ্র উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এরই মধ্যে ৮টি হাইব্রিডসহ মোট ১১১টি উচ্চফলনশীল ধানের জাত ও তিন শতাধিক ধান উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। উদ্ভাবিত জাতগুলোর মধ্যে বন্যা, খরা, জলমগ্নতা, লবণাক্ততা, ঠান্ডা ইত্যাদি প্রতিকূলতা সহিষ্ণু, রোগ প্রতিরোধী, প্রিমিয়াম কোয়ালিটি, জিঙ্ক, আয়রন ও পুষ্টি-সমৃদ্ধ ধানের জাত উল্লেখযোগ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এখন মোবাইল থেকেই কৃষিতথ্য কেন্দ্র থেকে কৃষি বিষয়ক তথ্য পাওয়া যায়। এভাবে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রযুক্তিগত দিক থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের চেয়ে কোন অংশেই পিছিয়ে নেই। আমি আশা করি, সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি আগামী দিনে ধান গবেষণার ক্ষেত্রে নিত্য নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আরও বেশি সচেষ্ট হবে এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তাকে টেকসই করার মাধ্যমে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ তথা জাতির পিতার আজীবন স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ে তুলতে আরো গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
উদ্বোধনের পর তিনি বঙ্গবন্ধু-পিয়েরে ট্রুডো কৃষিপ্রযুক্তি কেন্দ্রের ইনোভেশনস পরিদর্শন করেন। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের পাঁচটি প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, কানাডার গ্লোবাল ইনস্টিটিউট অব ফুড সিকিউরিটির (সিইইউ) নির্বাহী পরিচালক ড. স্টেভিন ওয়েব, ফিলিপাইনের ইন্টারন্যাশনাল রাইস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর জেনারেল ড. জেইন বালিই, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার।