আগামী বছরের মধ্যে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ইন্টারনেটের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি বলেছেন, আগামী বছরের মধ্যে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ইন্টারনেটের আওতায় আনা হবে। তার জন্য এরই মধ্যে শতভাগ প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রাক প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে আসছি আমরা।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৫টায় ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) ১৯তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী। গাজীপুর মহানগরের ডুয়েট ক্যাম্পাসের শহীদ আহসান উল্লাহ অডিটরিয়ামে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে যে উচ্চশিক্ষা সেখানেও আমরা ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে আসছি’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লব অমিত সম্ভাবনা নিয়ে আসছে। এটাকে আমরা কাজে লাগাতে চাই। আজকে যারা প্রাথমিকে ঢুকছে তারা যখন কর্ম জগতে ঢুকবে তখনকার ৬৫ ভাগ কাজ একেবারেই থাকবে না। কিন্তু অন্য কাজ তো থাকবে। সে কাজের জন্য তাদের তৈরি করতে হবে।’
সব মিলিয়ে ‘আমাদের নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষাটা হবে আনন্দময়’ বলে মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী।
ডুয়েটের শিক্ষার্থীদের চাকরির সার্কুলারে যে সমস্যা আছে সেটা আমরা দেখবো। ডিপ্লোমা পাসের পর শিক্ষার্থীরা যেন শুধু ডুয়েট নয়, অন্যান্য প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়াশোনার সুযোগ পান; সে বিষয়ে আলোচনা চলছে।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি আরও বলেন, ডিপ্লোমা পাসের পর শিক্ষার্থীরা যেন শুধু ডুয়েট নয়, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও যেন পড়াশোনার সুযোগ পান, সেটির বিষয়ে কথা চলছে। এ সময় ডুয়েটের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২৫ একর জায়গা কম বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী। এটির পরিধি কীভাবে আরও বৃদ্ধি করা যায়, এ বিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো হবে আনন্দ নিকেতন। সেখানে অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন হবে, সক্রিয় শিখন হবে। শিক্ষার্থীরা ধরে ধরে শিখবে। আমরা এখন আর থিওরি মুখস্থ করাবো না। প্র্যাকটিক্যাল জিনিসগুলো শিখাবো। কি করে হয়, কেন হয়, কীভাবে হয় সেটি শিখাবো। তবে মুখস্থ করার দরকার নেই। এসব এমনিতেই মনে থাকবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞানমনস্ক হবে। আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তিবান্ধবই শুধু নয়, প্রযুক্তি উদ্ভাবনে এবং প্রযুক্তি ব্যবহারেও দক্ষ হবে। তারা শৃজনশীল হবে, মানবিক হবে। তারা শুধু শিখার মধ্যেই নয়, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তা প্রয়োগ করবে। তারা ভালোভাবে শিখবে এবং শিক্ষাগ্রহণ শেষে শুধু চাকরি খুঁজবে না, তারা উদ্যোক্তাও হবে। তাদের কাছে আমরা অনেক কিছু চাই। এজন্য তাদের সুনাগরিক হতে হবে। তারা দক্ষ নাগরিক হবে- সেই প্রত্যাশা আমাদের।
শিক্ষামন্ত্রীর উপস্থিতিতে ডুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তাইবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক বিনয় ব্যানার্জী বক্তব্য দেন। ডুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোনো অনুষ্ঠানে সব পক্ষ থেকে একজন করে প্রতিনিধিত্ব করেন। ছাত্রলীগেরও একজনের প্রতিনিধিত্ব করা ঐক্যের প্রতীক হিসেবে দেখা যেতে পারে। এখানে সেই ঐক্যের কিছুটা ঘাটতি আছে বলে দু’জনকে বক্তব্য রাখতে হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন- ডুয়েটের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুর রশীদ, পরিচালক ছাত্রকল্যাণ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নজরুল ইনলাম, রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্বে) অধ্যাপক ড. হিমাংশু ভৌমিক, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. উৎপল কুমার দাস, ডুয়েট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন মোল্লা, কর্মচারী সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন প্রমুখ।