প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের পাশাপাশি সঙ্কটকালীন সময়ে সকল কাজ চালিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে মিতব্যয়ী নীতি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এক্ষেত্রে অ্যাপ ব্যবহার এবং টেলিকম অপারেটরে জরুরী বার্তা দিয়ে জনসচেতনতায় গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।
বুধবার ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত ‘বিজনেস কনটিনিউটি প্লান ফর পাওয়ার ক্রাইসিস ২০২২’ বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই আহ্বান জানানো হয়। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে উদ্ভানী ও বুদ্ধিদিপ্ত টেকসই সমাধান দিয়ে সঙ্কটে মিতব্যয়ী প্রজন্ম গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রতিমন্ত্রী।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বিদ্যুত ও জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ৩৩৩ কলসেন্টার সংযুক্ত করে নাগরিকদের মধ্যে পরিস্কার তথ্য ও প্রশ্নোত্তর দিতে পারি। এর মাধ্যমে লোডশেডিং পরিকল্পনা বিষয়ে অ্যাপ তৈরি করতে পারি। করোনাকালীন সময়ের মতো এসএমএস, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে জরুরী বার্তা দিয়ে মিতব্যয়ী হতে নাগরকিদের সচেতন করতে পারি।
এসময় প্রতিমন্ত্রী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সঙ্কটকালীন সময় মোকাবেলার পাশাপাশি মিতব্যয়ী একটি জাতি গড়ে তোলার জন্য একটি গাইডলাইন তৈরির নির্দেশনা দেন।
স্টার্টআপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদের সঞ্চালনায় উদ্যোক্তা, গবেষক ও উদ্ভাবকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত ঘণ্টাব্যাপী ভার্চুয়াল সভায় এটুআই এর পক্ষ থেকে ২টি উপস্থাপনা পেশ করা হয়।
এর একটিতে পাওয়ার সেভিং এর ম্যূল্য ও প্রয়োজন বিবেচনায় নিয়ে সাংস্কৃতিক/আচরণগত, আর্থিক কাঠামো এর উপর আলোকপাত করে মানুষ ও মূল্য প্রেক্ষিতে অ্যানার্জি সাশ্রয় নিয়ে দিক নির্দেশনা মূলক একটি উপস্থাপনা দেন এনহেন্সিং ডিজিটাল গভর্নমেন্ট ডিজিটাল অ্যান্ড ইকোনোমি প্রকল্প পরিচালক হাসান বেনাউল। এতে শিশুদের সাশ্রয়ী কার্যক্রমের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে ব্যবহার এবং প্রতিযোগিতা আয়োজনের পরামর্শ দেন তিনি।
উপস্থাপনায় ৩৩৩ নম্বর থেকে বিদ্যুৎ ঘাটতি তথ্য চালু করার তথ্য দিয়ে মোশন ডিটেক্টর, লো কস্ট সেন্সর ব্যবহার ও বিদ্যুত সাশ্রয়ী সম্মাননা প্রদানের পরামর্শ দেন আল ইমরান রুহুল ইসলাম। ‘আমিই সমাধান’ অ্যাপ দিয়ে সচেতনতা কার্যক্রমের ফ্লো চার্ট তুলে ধরেন পূরবী মতিন।’
আইসিটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এনএম জিয়াউল আলমের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল বৈঠকে ব্যক্তিগত পরামর্শ তুলে ধরেন আইসিটি বিভাগের আদনান মোহাম্মাদ দেওয়ান, প্রেনিউর ল্যাব প্রাতিষ্ঠাতা আরিফ নেজামী, আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব মো: আব্দুল বারী, বুয়েটের ইইই বিভাগের অধ্যাপক নাদিম চৌধুরী, হাইটেক পার্ক ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ, কমিউনিকেশন স্টেশালিস্ট অজিত কুমার সরকার, এটুআই প্রকল্প পরিচালক ড. দেওয়ান মোহাম্মাদ হুমায়ুন, গুগল ওমেন টেকমেকার রাখশান্দা রুখাম প্রমুখ।
আলোচনায় স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে জ্বালানি সাশ্রয়ী উদ্ভাবনী প্রস্তাব দেন অংশীজনেরা। তারা যেকোনো সঙ্কটের সময়ে জনসচেতনা ও সংশ্লিষ্টতায় একটি অনন্য ওয়েব প্লাটফর্ম তৈরি, প্রযুক্তির মাধ্যমে বিদ্যুতের ট্রান্সমিশন সিস্টেমলস কমানো, রাস্তার বাতি আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে যাওয়া, বৈদ্যুতিক খরচ বাঁচাতে সাশ্রয়ী সেন্সর বা ইনভার্টার যুক্ত বৈদ্যুতিক গেজেট ব্যবহার, সৌরের পাশাপাশি বায়ু ও জলবিদ্যুৎ এর মতো নবায়নযোগ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো এবং বিদ্যুৎ বিতরণ কৃর্তৃপক্ষের এআই, বট ব্যবহারের মতো নানা প্রযুক্তি, আচরণ ও চেতনাগত মান উন্নয়নে পরামর্শ দেন।