বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির ভৌত সুবিধা উন্নয়নে বার্ড-এর প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপনায় যুক্ত হলো প্রযুক্তির ছোঁয়া। এটুআই-এর ডিজিটাল সার্ভিস এক্সিলারেটরের সহযোগিতায় মঙ্গলবার উদ্বোধন করা হলো ‘বার্ড- প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপনা সিস্টেম সফটওয়্যার’। অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে সফটওয়্যারের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য।
অনুষ্ঠানে আরো যুক্ত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মোঃ রেজাউল আহসান।
বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড) এর মহাপরিচালক মোঃ শাহজাহান-এর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক ড. মোঃ আব্দুল মান্নান, চীফ ই-গভর্নেন্স স্ট্যাটিজিস্ট ফরহাদ জাহিদ শেখ, বার্ড-এর যুগ্ন পরিচালক রঞ্জন কুমার গুহ, সফটওয়্যার টেকনিক্যাল টিম ব্রেইন স্টেশন-২৩ এর চীফ অপারেটিং অফিসার এম জে ফেরদৌস, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ফাউন্ডেশন (বিয়াম)-এর মহাপরিচালক ড. এম মিজানুর রহমান, পল্লী উন্নয়ন একাডেমী (আরডিএ) বগুড়া-এর মহাপরিচালক খলিল আহমেদ এবং বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বাপার্ড) গোপালগঞ্জ-এর মহাপরিচালক শেখ মোঃ মনিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, বিজয়ের মাসে আমরা এই সফটওয়্যারের উদ্বোধন করতে পারছি, এটা অনেক আনন্দের। জাতির পিতার দর্শন ছিলো শোষণহীন আধুনিক সমাজব্যবস্থা। এই দর্শনকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে স্বাধীনতার ৫০ বছরের মধ্যেই দেশের সকল অবকাঠামো এবং সেবা ডিজিটাল করার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বার্ড-এর এই উদ্যোগ। বর্তমান দৃশ্যপট থেকে আমরা বুঝতে পারি যে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মাধ্যমে যতো বেশি এগিয়ে থাকবেন, সে বা তারা ততো বেশি সমৃদ্ধ হবেন। এসময় তিনি বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ায় বার্ড-এর ভূমিকার প্রশংসা করেন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ-এর নির্দেশনা ও আন্তরিকতার কারণে এ মডিউলগুলোর কার্যক্রম দ্রুত গতিতে বাস্তবায়িত হচ্ছে। তিনি এ সময় বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ায় দায়িত্বশীল সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ গ্রহণের উপর গুরুত্বারোপ করেন। এক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এ সফটওয়্যারটি বিশেষ কার্যকরি বলে মতামত ব্যক্ত করেন। কেননা, এর মাধ্যমে প্রশিক্ষণ মডিউল এবং মনিটরিং-এর কাজ বেশ সহজে এবং নির্ভুলভাবে করা যায়।
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মোঃ রেজাউল আহসান বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতেই আমরা এ সফটওয়্যারটির কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছি, এটা আমদের জন্য বেশ গর্বের। ২০১৭ সালের একটি প্রকল্পের মাধ্যমে এর যাত্রা শুরু হয়, যার উদ্দেশ্য ছিলো বার্ডের ভৌত সুবিধার উন্নয়ন। এ সময় তিনি এ সিস্টেম ব্যবহার করে সুবিধা গ্রহণের জন্য অন্যান্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের প্রতিও আহ্বান জানান। এর মাধ্যমে তাদের নতুন করে সফটওয়্যার নির্মাণ ব্যয় ও সময় সুরক্ষিত থাকবে। এসময় তিনি অন্যান্য মডিউলগুলো বাস্তবায়ন করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, বার্ড পল্লী উন্নয়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন মডেল উন্নয়নসহ দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করে আসছে। এই প্রেক্ষিতে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বার্ডের ভৌত সুবিধাদি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বার্ড অটোমেশন সংক্রান্ত একটি ইআরপি সফটওয়্যার উন্নয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। এই ইআরপি সফটওয়্যার-এর আওতায় ৯টি মডিউলের কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি (TMS) মডিউলটি ইতোমধ্যে পাইলটিং করা হয়েছে। সফটওয়্যারটির মাধ্যমে মূলত প্রশিক্ষণার্থী, কোর্স ব্যবস্থাপনা টিম এবং এবং প্রশিক্ষণ বিভাগ টিম এই তিন শ্রেণীর স্টেকহোল্ডারগণ সেবা লাভ করবে। এই সফটওয়্যার-এর মাধ্যমে প্রশিক্ষণার্থীগণ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে সহজেই রেজিস্ট্রেশন থেকে শুরু করে সার্টিফিকেট উত্তোলন পর্যন্ত নির্ভুল ও ঝামেলাবিহীনভাবে সকল কাজ সম্পন্ন করতে পারবে। এর ফলে তাদের শতকরা ৭০ ভাগ সময় বাঁচবে এছাড়াও আর্থিক সাশ্রয় হবে শতকরা ৪৫ ভাগ পর্যন্ত।
বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড) এর মহাপরিচালক মোঃ শাহজাহান-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বার্ড-এর যুগ্ন পরিচালক রঞ্জন কুমার গুহ, সফটওয়্যার টেকনিক্যাল টিম ব্রেইন স্টেশন-২৩ এর চীফ অপারেটিং অফিসার এম জে ফেরদৌস, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ফাউন্ডেশন (বিয়াম)-এর মহাপরিচালক ড. এম মিজানুর রহমান, পল্লী উন্নয়ন একাডেমী (আরডিএ) বগুড়া-এর মহাপরিচালক খলিল আহমেদ, বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বাপার্ড) গোপালগঞ্জ-এর মহাপরিচালক শেখ মোঃ মনিরুজ্জামানসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিগণ।