ডিজিটাল ট্রান্সমিশন দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে, সেখানে ভুল তথ্য ও অপতথ্যের সঙ্কট রাজধানী থেকেও গ্রামীণ এলাকায় আরো বেশি । মূলত সীমিত মিডিয়া-সাক্ষরতা এবং যাচাইকৃত তথ্যে প্রবেশের সীমাবদ্ধতায় সোশ্যাল মিডিয়া হয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে মিস ইনফরমেশন । যুব-যুব নারীদের এসব বিপদ সম্পর্কে সচেতন ও সজাগ থাকতে হবে এবং সে অনুযায়ী নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। ভুল তথ্য গণতন্ত্র, স্বচ্ছতা এবং নিরাপত্তার জন্য একটি বড় হুমকিস্বরূপ । এটি ঘৃণাসূচক বক্তব্য, বৈষম্য, সহিংসতা এবং লিঙ্গ বৈষম্য মোকাবেলায় বিভিন্ন স্তরে বাংলাদেশের সমাজকে প্রভাবিত করে৷
ভুল তথ্য সম্পর্কে যুব ও যুব নারীদের সচেতনতা নিয়ে সোমাবার রেডিও নলতার হলরুমে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় এমনটাই তুলে ধরেন বক্তারা। কর্মশালায় প্রশিক্ষানার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করেন সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার তারালি ও চম্পাফুল ইউনিয়নের ৩৬ জন যুব ও যুব নারী।
দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের সহায়তায় বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও অ্যান্ড কমিউনিকেশন, সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে “ইয়ুথ রেজিলিয়েন্ট টু মিসইনফরমেশন: বিল্ডিং লোকাল এনগেজমেন্ট অ্যান্ড মিডিয়া ডেভেলপমেন্ট” এর ওপর একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিচালনা করেনযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ রেহান উদ্দিন আহমেদ রাজু ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মিনহাজ উদ্দিন। এতে দি এশিয়া ফাউন্ডেশন থেকে প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোঃ তাহেরুল ইলাম ও প্রোগ্রাম এসোসিয়েট সানজিদা আক্তার এবং রেডিও নলতার পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন স্টেশন ম্যানেজার সেলিম শাহরীয়ার।
এই প্রেক্ষাপটে, “ইয়ুথ রেজিলিয়েন্ট টু মিসইনফরমেশন: বিল্ডিং লোকাল এনগেজমেন্ট অ্যান্ড মিডিয়া ডেভেলপমেন্ট” একটি অনন্য এবং উদ্ভাবনী প্রয়াস, যা সামাজিক এবং অন্যান্য মিডিয়াতে ক্রমবর্ধমান ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে যুব ও যুব নারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য হাইপার লোকাল প্রতিনিধি হিসেবে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের নিয়ে কাজ করে। প্রকল্পটি মূলত ভুল তথ্য, লিঙ্গগত ভুল তথ্যকে প্রতিরোধ করতে যুব ও যুবনারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে এবং সমন্বিতভাবে তথ্য সততার ইকোসিস্টেমের স্বার্থে টেকসই সমাধান গড়ে তুলবে।
এই ধারাবাহিকতায় , প্রকল্পটি হাইপারলোকাল পদ্ধতির মাধ্যমে গ্রামীণ যুবদের সাথে কাজ করার জন্য ফেসবুক পেজ প্রণয়ন এবং বাংলাদেশের সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে এবং জাতীয় পর্যায়ে ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ফেসবুক প্ল্যাটফর্মের সাথে যুক্ত হওয়ার জন্য ১০৮ জন ফেসবুক ব্যবহারকারীকে বাছাই করে। স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ-প্রক্রিয়া চিহ্নিত করতে স্টেকহোল্ডারদের বিদ্যমান প্রচেষ্টাকে শক্তিশালী ও তীব্র করার লক্ষ্যে অবদান রাখার জন্য এই প্রক্রিয়ার সূচনা।
এই লক্ষ্যে, নেতৃত্বের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং উন্নত শাসন প্রক্রিয়ায় যুব ও যুব নারীদের অংশগ্রহণ এবং বাংলাদেশে ভুল তথ্য প্রতিরোধের ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য স্টেকহোল্ডারদের সম্পৃক্ততা জরুরি। ফলে, পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের কাছে এবং সাংবাদিকদের কাছে ‘ফেক নিউজ এন্ড ডিসইনফরমেশন হ্যান্ডবুক’ বিতরণ করা, মিডিয়া প্রফেশনাল প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটগুলির সাথে সংলাপ আয়োজন করা এবং একটি রিসোর্স পুল তৈরির জন্য ‘ফেক নিউজ এন্ড মিসইনফরমেশন’ বিষয়ে প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণের আয়োজন করা – এ সবই এর পরবর্তী পদক্ষেপ।
“ইয়ুথ রেজিলিয়েন্ট টু মিসইনফরমেশন: বিল্ডিং লোকাল এনগেজমেন্ট অ্যান্ড মিডিয়া ডেভেলপমেন্ট” প্রকল্প পরিচালনায় আছেন হীরেন পন্ডিত এবং এএইচএম বজলুর রহমান। প্রকল্প কর্মসূচী বাস্তবায়ন দলের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন বিএনএনআরসি থেকে জনাব নাঈমুন নাহার ইসলাম এবং জনাব প্রতীভা ব্যানার্জি ।