বাংলাদেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও রবোটিকস ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি, অবকাঠামো, গাড়ির যন্ত্রাংশ, কেমিক্যাল, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণসহ বেশকিছু খাতে সৌদি আরবের বিনিয়োগ সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছে আরবে জেদ্দা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নেতারা। এই সুযোগ গ্রহণের পাশাপাশি বাংলাদেশের তরুণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ তরুণ জনশক্তিকে সৌদি আরবে নিয়োগে দেশটির ব্যবসায়ী নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সই করতে প্রস্তাব করেছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম।
সোমবার (৬ নভেম্বর) সৌদি আরবে জেদ্দা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে এফবিসিসিআই’র ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের বৈঠকে এই প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। সূত্রমতে, বৈঠকে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণের স্বার্থে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সইয়ের প্রয়োজনীয়তার কথা উত্থাপন করে এফবিসিসিআই।
এ নিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘সারা বিশ্বেই ব্যবসা-বাণিজ্যের ধরন পরিবর্তন হচ্ছে। সেই সঙ্গে সামনে আসছে নিত্য নতুন চ্যালেঞ্জ। ২০২৬ সালনাগাদ এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর বাংলাদেশও বেশকিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। এমন অবস্থায়, সমন্বিত সাপ্লাই চেইনের সুফলকে কাজে লাগিয়ে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবকে এখনই এফটিএ (মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি) সইয়ের উদ্যোগ নিতে হবে।’
এ সময় এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি মো. খায়রুল হুদা চপল, মো. রাশেদুল হোসেন চৌধুরী রনি, মো. মুনির হোসেন, পরিচালক মো. হাবিব উল্লাহ ডন, হাসিনা নেওয়াজ, খন্দকার রুহুল আমিন, মূনাল মাহবুব, মো. আলী হোসেন শিশির, মো. এনায়েত উল্লাহ, বি এম সোহেব, সহিদুল হক মোল্লা, ফখরুস সালেহীন নাহিয়ান, সালমা হোসেন এশ, মো. আমীর হোসাইন নুরানী, মো. ফায়জুর রহমান ভূঁইয়া, সৈয়দ মোহাম্মদ বখতিয়ার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সৌদি আরব বাংলাদেশের শ্রমশক্তি রফতানির অন্যতম গন্তব্য উল্লেখ করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘সৌদি আরব বর্তমানে হাই-টেক ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট এবং শিল্প বহুমুখীকরণের জোড়ালো পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এই মুহূর্তে তাদের বিপুল দক্ষ কর্মী বাহিনীর দরকার হবে। এদিকে বাংলাদেশ এখন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড সুবিধার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ দেশে বিপুল সংখ্যক কর্মক্ষম, অভিজ্ঞ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ তরুণ জনশক্তি রয়েছে। সৌদি সরকারকে আহ্বান জানাই, বিভিন্ন সেক্টরে বাংলাদেশের দক্ষ তরুণ কর্মীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ আরও প্রসারিত করুন।’
বৈঠকে সৌদি আরবের ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে প্রস্তাবিত সৌদি অ্যারাবিয়া বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের আহ্বান জানান মাহবুবুল আলম। একই সঙ্গে দেশের অন্যান্য অর্থনৈতিক অঞ্চলেও সৌদি বিনিয়োগকারীদের শিল্প স্থাপনে আমন্ত্রণ জানান তিনি।
এ সময় বন্দর ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে বাংলাদেশকে সহযোগিতার আশ্বাস দেয় জেদ্দা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি। পাশাপাশি সৌদি আরবে বাংলাদেশি পণ্যকে পরিচিত করতে ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ এক্সপো আয়োজনেও সহায়তা দেবে বলেন জানান তারা।