বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের আওতাধীন ডিজিটাল অন্ট্রাপ্রেনরশিপ এন্ড ইনোভেশন ইকোসিস্টেম ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের সার্বিক সহায়তায় স্টুডেন্ট টু স্টার্টআপ ভেঞ্চারস লিমিটেড পরিচালিত মাইক্রো কোর্স অন ইন্টেলেকচুয়াল হিস্ট্রি অন স্টার্ট-আপ শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টার রাজশাহীতে শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার এই কর্মশালার সমাপনী ঘোষণা করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এছাড়াও এই পার্কে উদ্যোক্তাদের সামনে এগিয়ে নেবার লক্ষ্যে ওমেন এন্ড ই-কমার্স ট্রাস্ট (উই) রাজশাহীর জয় সিলিকন টাওয়ারে তাদের জন্য বরাদ্ধকৃত ২০০০ বর্গ ফুটের অফিস স্পেস এর অফিসিয়াল উদ্বোধন করেন প্রতিমন্ত্রী। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্ক, রাজশাহীর জয় সিলিকন টাওয়ারে “ওয়ান ফ্যামিলি, ওয়ান সিড” উদ্যোগের আওতাধীন স্টার্টআপ স্টুডিও “স্মার্ট বাংলাদেশ লঞ্চপ্যাড” এর উদ্বোধন করেছেন জুনাইদ আহমেদ পলক।
এসময় রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর; জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ; বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্ক, রাজশাহী এর প্রকল্প পরিচালক এ কে এ এম ফজলুল হক; ডিজিটাল উদ্যোক্তা এবং উদ্ভাবন ইকো-সিস্টেম উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক আবুল ফাত্তাহ মো. বালিগুর রহমান; বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্ক রাজশাহী প্রকল্পের উপ প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুল কবির, উই ট্রাস্ট প্রেসিডেন্ট নাসিমা আক্তার নিশা প্রমুখ।
এ প্রসঙ্গে নিশা জানিয়েছেন, বরাদ্দ প্রাপ্ত স্থানটিতে স্থানীয় ১০০ জন নারী উদ্যোক্তা কো-ওয়ার্কিং স্পেস হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। একইসঙ্গে নিজেদের উৎপাদিত পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করতে পারবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও বেশ কয়েকজন নিজেদের তৈরি নকশি কাঁথা, শাড়ি, পোশাক, খাবার প্রদর্শন করেন। এসময় প্রতিমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি একটি পেইন্টেড স্যুভেনির উপহার দেয়া হয়।
এরপর মাইক্রো কোর্স অন ইন্টেলেকচুয়াল হিস্ট্রি অন স্টার্ট-আপ কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ লঞ্চপ্যাডের সাথে সংশ্লিষ্ট মেন্টর, কোচ, ট্রেইনার ও অন্যান্যরা শুধু হাতে কলমে শিখাবেনই না যে কিভাবে একটি স্টার্টআপ তৈরি বা গড়ে করতে হয় বরং পুরো স্মার্ট বাংলাদেশ লঞ্চপ্যাড প্রত্যেকের জন্য টিম মেম্বার হিসেবে কাজ করবে। জয় সিলিকন টাওয়ার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্ক, রাজশাহী – তে স্থাপিত স্মার্ট বাংলাদেশ লঞ্চপ্যাডটি বিনামূল্যে কোচিং, মেন্টরিং, ও স্টার্টআপ ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসের পাশাপাশি প্রত্যেকের জন্য কো-ওয়ার্কিং স্পেস ও বরাদ্দ প্রদান করবে।
ভবিষ্যৎ স্টার্ট-আপ তৈরীর লক্ষ্যে আয়োজিত এই কোর্সে রাজশাহী জেলার আওতাধীন পাঁচটি ক্যাম্পাস থেকে প্রায় ২৩৯ জন শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করে বলে স্টুডেন্ট টু স্টার্টআপ ভেঞ্চারস লিমিটেড এর সিইও আশিকুর রহমান রুপক জানিয়েছেন। যে পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা অংশ গ্রহণ করেছে সেগুলো হলো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি), রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট), রাজশাহী কলেজ, নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়।
এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য মোট ৩টি সেশন পরিচালিত হচ্ছে আশিকুর রহমান রুপকের সার্বিক তত্ত্বাবধানে। তিনি জানান, একটি কন্সেপ্ট ও কালচার হিসেবে “স্টার্টআপ” এর ইতিহাস, বিবর্তন ও প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত ধারনার পাশাপাশি কেনো এবং কিভাবে একটি স্টার্টআপ গড়ে তুলতে হয় তা সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি প্রদান করা হয় এই মাইক্রো-কোর্সটির মাধ্যমে।
বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) জি এস এম জাফরউল্লাহ্ বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ লঞ্চপ্যাড এর আওতায় ছয় মাসব্যাপী কো-অন্ট্রাপ্রেনরশিপ প্রোগ্রাম আয়োজন করা হবে, যার লক্ষ্য নতুন নতুন স্টার্ট-আপ তৈরি এবং বাজারে লঞ্চ করা। রাজশাহী জেলার অন্তর্গত যে কোনো পর্যায়ের শিক্ষার্থী ও তরুণ-তরুণী যাদের কোনো একাডেমিক প্রোজেক্ট, থিসিস, রিসার্চ বা বিজনেস আইডিয়া আছে যেগুলোকে বাস্তবে একটি বিজনেস ভেঞ্চার হিসেবে গড়ে তুলতে চান তারা এই লঞ্চপ্যাড থেকে সুবিধা পাবেন। এমনকি রাজশাহী জেলার অন্তর্গত যে কোনো পর্যায়ের শিক্ষার্থী ও তরুণ-তরুণী যাদের উপরের কোনোটিই নেই কিন্তু সে ব্যাক্তি হিসেবে একজন দক্ষ উদ্যোক্তা হিসেবে অর্থাৎ কোনো স্টার্টআপ এর ফাউন্ডার বা কো-ফাউন্ডার হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চান তার জন্য এই লাঞ্চপ্যাড হবে নিজেকে গড়ে তোলার আদর্শ জায়গা।
অক্টোবর ২০২৩ – মার্চ ২০২৪ সেশনের ব্যাচে ভর্তিচ্ছু প্রায় ২৫১ জন তরুণ-তরুণী, উদ্যোক্তা ও স্টার্টআপ ইতোমধ্যে রেজিস্ট্রেশন করেছেন। এর আগে গত ২৭ আগস্ট চুয়েটে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ লঞ্চপ্যাড এর উদ্বোধন করা হয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে সকল শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টারে একটি করে লঞ্চপ্যাড স্থাপন করা হবে এবং একেকটি স্মার্ট বাংলাদেশ লঞ্চপ্যাড বছরে ৫০টি করে নতুন স্টার্টআপ তৈরি করে বাজারে লঞ্চ করবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।