সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠিয়ে জমিসহ ঘর পেলেন মাগুরার প্রতিবন্ধী কলেজছাত্র বাবু মিয়া। শনিবার (০৪ সেপ্টেম্বর) মাগুরা সদর উপজেলার হাজরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে প্রতিবন্ধী বাবু মিয়ার কাছে বাড়ি ও জমির দলিল বুঝিয়ে দেন জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম।
এ সময় মাগুরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইয়াছিন কবীর, হাজরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির হোসেনসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
হাজরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে দুই শতক সরকারি খাস জমিতে সেমি পাকা দুই কক্ষের টিন সেডের ঘরটি নির্মাণ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক ড.আশরাফুল আলম বলেন, প্রতিবন্ধী বাবু মিয়া তার নিজের অসহায়ত্বের কথা প্রধানমন্ত্রীর দফতরে এসএমএস করে জানান। তিনি এসএমএসে লেখেন- ‘আমি প্রতিবন্ধী বাবু মিয়া, আমি মাকে নিয়ে ছোটবেলা থেকে নানাবাড়িতে জীবনযাপন করছি। আমাদের কোনো জমি-জায়গা নেই। মাসহ মোট পাঁচজনের বসবাস। একটি মাত্র ঘর। আমাদের একটি ঘর অতি দরকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের একটি ঘর করে দিলে চিরকৃতজ্ঞ হব।’
‘এরপর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজের দাফতরিক কাজ শেষ করে এসএমএসটি দেখেন। তার নির্দেশনা অনুযায়ী, বাবু মিয়ার খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি ছোটবেলায় তার বাবা মারা যান। মাকে নিয়ে রামনগর নানাবাড়িতে থাকতেন। বাবু মিয়া একজন ভূমিহীন প্রতিবন্ধী কলেজছাত্র। সে বর্তমানে মাগুরা আদর্শ কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র’ যোগ করেন জেলা প্রশাসক। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশক্রমে আজ জেলা প্রাশাসনের পক্ষ থেকে বাবু মিয়াকে ঘর ও জমির দলিল বুঝিয়ে দেওয়া হলো’- যোগ করেন জেলা প্রশাসক।
প্রতিবন্ধী কলেজছাত্র বাবু মিয়া জানিয়েছেন, বাবা মারা যাওয়ার পর মাকে নিয়ে নানাবাড়িতে থেকেন তিনি। তাদের কোনো জায়গা-জমি ছিল না। মাকে নিয়ে কোথায় যাবেন, কোথায় থাকব সারাদিন তাই ভাবতেন। এই চিন্তা থেকেই সাহস করে অনেক কষ্টে প্রধানমন্ত্রীর নম্বর জোগাড় করে মোবাইলে বাড়ি চেয়ে এসএমএস পাঠিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমার এসএমএসটি পড়ে মাগুরা জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন বাড়ি করে দেওয়ার। হাজরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় হাজরাপুর পুরাতন বাজার হাই রোডের পাশে দুই শতক জমিতে আমাকে পাকা ঘর করে দেওয়া হয়েছে। আল্লাহর কাছে দুই হাত তুলে প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করেছি। আল্লাহ যেন তাঁকে সুস্থ রাখেন।
প্রতিবন্ধী বাবু মিয়ার মা হাসনাহেনা বেগম বলেন, চার সন্তানের মধ্যে বাবু সবার ছোট। ছোটবেলা থেকেই সে প্রতিবন্ধী। ঠিকমতো কথা বলতে পারে না। স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে চার সন্তান নিয়ে আমি অনেক কষ্ট করেছি। আমার বাবার বাড়িতে ছোট একটি ঘর, সেখানে সবাইকে নিয়ে বাস করা যায় না। অনেক কষ্ট করে খেয়ে না খেয়ে আমি সন্তানদের মানুষ করেছি। কিন্তু তাদের কোনো জায়াগা জমি নেই। প্রধানমন্ত্রী আমার বাবুর পাঠানো এসএমএস শত ব্যস্ততার মাঝে পড়ে আমাদের জন্যে ঘর তৈরি করে দিয়েছেন। এ জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। আল্লাহ যেন তাকে দীর্ঘজীবী করেন। তিনি আজীবন যেন আমাদের মত অসহায় মানুষের পাশে থাকেন।