ই-পেমেন্ট, ই-অকশন ব্যবস্থাকে জালিয়াতি বন্ধের অন্যতম প্রক্রিয়া বলে মনে করছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (মূসক নীতি) মো. মাসুদ সাদিক। তিনি বলেছেন, অতীতে দেখেছি ট্রেজারি চালান জাল করে পণ্য খালাস করা হয়েছে। সেটা ঠেকাতে এখন সরকারি কাজ প্রদানে ই-টেন্ডার পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। কাস্টম হাউসের অকশনও একটা নিয়মিত বিষয়, তাই ডিজিটালাইজেশন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ই-পেমেন্ট সম্পর্কিত সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ ও ই-অকশন কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ই-অকশন শুরু হয়েছে। এর আগে বেনাপোল কাস্টম হাউসে এটা শুরু হয়েছে। অটোমেটিক চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কোড (৩০১) চলে আসবে চালানের নাম্বারের সঙ্গে। অনেক সময় সার্ভার গ্যাপ থাকতে পারে, ইন্টারনেট স্পিড কম থাকতে পারে। কাজ করতে গেলে প্রথমে কিছু সীমাবদ্ধতা থাকবে। সেগুলো অতিক্রম করে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নামে ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে জালিয়াতির চেষ্টা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জালিয়াত চক্র যারা, তারা অতীতে ছিল, বর্তমানে আছে হয়তো ভবিষ্যতেও থাকবে। জালিয়াতির উদ্দেশ্যে তারা নিত্যনতুন টেকনিক অবলম্বন করে। অভিনব পদ্ধতিতে ওয়েবসাইট খুলে জাল সিপি ইস্যু করেছে। দক্ষ কর্মকর্তারা তা উদঘাটন করতে পেরেছেন। চালানটি ছাড় করার আগে আটক করা গেছে।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ১৯৯৪ সাল থেকে অ্যাসাইকুডা সিস্টেম চালু হয়েছে। ধাপে ধাপে অ্যাসাইকুডা প্লাস প্লাস, অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ডে এখন আমরা কাজ করছি। যে সক্ষমতা বিবেচনা করে ২০১৩ সালে সার্ভার কেনা হয়েছে। এখন ২০২০ সাল। আরও আগে আমাদের হার্ডওয়্যার পরিবর্তন করা দরকার ছিল। ইতিমধ্যে টেন্ডার হয়ে গেছে। শিগগির নতুন সার্ভার, অন্যান্য হার্ডওয়্যার পেয়ে যাব। অনেক সময় সাবমেরিন ক্যাবল কাটা পাড়ে। ভেন্ডারের মাধ্যমে কানেকশন আসে। নানা কারণে ইন্টারনেটে বিলম্ব হয়। ট্রেনের টিকিট করতে গেলে অনেক সময় সার্ভারে বিলম্ব হয়। কিন্তু ট্রেন লাখো যাত্রী পরিবহন করে। দেখা যায় দিনে ১০ মিনিট বন্ধ থাকে, সেটিই নিউজ হয়ে যায়। কাস্টম হাউসের বার্ষিক রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৫০ হাজার কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ৩৬ হাজার কোটি টাকা। সার্ভার যদি কাজ না করতো রাজস্ব আদায় হতো না। সমস্যা ওভারকাম করে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা স্টেক হোল্ডারদের সহযোগিতা পাচ্ছি।
আমাদের অফিসারদের বসার জায়গা, ট্রেনিং, হার্ডওয়্যার সেভাবে বাড়েনি। কাজের দক্ষতা বাড়ায় অনিষ্পন্ন থাকছে না। এটা আরও ইমপ্রুভ করার সুযোগ আছে। সে লক্ষ্যে আমাদের ডিজিলাইটেশন। জনবল বাড়ানোর চেয়ে অটোমেশনে জোর দিচ্ছি।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার ড. আবু নূর রাশেদ আহমেদ, যুগ্ম কমিশনার মো. তাফছির উদ্দিন ভূঞা, মুহাম্মদ মাহবুব হাসান, মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদ, মোহাম্মদ বাপ্পী শাহরিয়ারসহ কাস্টম হাউসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একেএম আকতার হোসেন, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক আবদুল্লাহ জহির, বিজিএমইএর পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন, বিকেএমইএর শওকত ওসমানসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার ও বাণিজ্য সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।