ই-কমার্স নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ভুল ধারণা এবং বাজেটে অস্পষ্ট সঙ্গায়নের পরিবর্তে গেজেটে বিদ্যমান সঙ্গাকে আমলে নেয়ার দাবি জানিয়েছেন ই-ক্যাব সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ তমাল।
তিনি বলেন, আমরা সরকারকে কর দেয়ার বিপক্ষে নয়। কেবল অনলাইনে ভার্চুয়াল শপ থেকে যেসব উদ্যোক্তা পণ্য ও সেবা দিয়ে আসছেন তাদেরকে যেন দ্বৈত করের ফাঁদে ফেলা না হয় সে জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। আমরা বলছি, যারা শুধু অনলাইন মার্কেট প্লেসে আছে, যাদের বাজারে কোনো দোকান নেই তাদের জন্য ছাড় চাইছি। কেননা তারা বাজার থেকে ভ্যাট পরিশোধ করেই পণ্য কিনে তা অনলাইনে বিক্রি করে থাকে। এরপরও যদি তাদের সাড়ে ৭ শতাংশ করের অধীনে আনা হয় তাবে তা দ্বৈত কর সহ অতিরিক্ত করচাপে পিষ্ট হতে হবে। এর চাপ গিয়ে পড়বে প্রান্তিক গ্রাহকের ওপর। তখন ডিজিটাল মাধ্যমে পণ্য ও সেবা নেওয়া থেকে আগ্রহ হারাবেন প্রান্তিক ভোক্তা।
বুধবার (১৯ জুন) ই-কমার্স খাতের ব্যবসায়ী এবং ই-কমার্স ইকোসিস্টেমসের অংশিজনদের নিয়ে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস-বেসিস আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।
বেসিস ডিজিটাল কর্মাস স্থায়ী কমিটির উদ্যোগে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে বেসিস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এ গোলটেবিল বৈঠকে গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর। এসময় উপস্থিত ছিলেন ই-কর্মাস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর সাধারণ সম্পদক মো. আবদুল ওয়াহেদ তমাল। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বেসিস’র জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ফারহানা এ রহমান, পরিচালক এবং বেসিস ডিজিটাল কর্মাস স্থায়ী কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালক জনাব দিদারুল আলম।
উপস্থিত ছিলেন বেসিস ডিজিটাল কর্মাস স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, কো-চেয়ারম্যান জনাব আশিকুল আলম খান, কো-চেয়ারম্যান জনাব জিসান কিংশুক হক। বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশ, রকেট, উবার, পাঠাও, আইপে, সূর্যমুখী, প্রিয়শপ ডট কম, বাগডুম ডট কম, আজকের ডিল ডট কম, অথবা ডট কম, চালডাল ডট কম, হাংরিনাকি ডট কম, রকমারি ডট কম, পিকাবু ডট কম, সেবা এক্সওয়াইজেড, আইফ্যারি ডট কম, ই-ভ্যালি, ডেলিগ্রাম, প্রোপার্টি বাজার লিমিটেডের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে ভার্চুয়াল বিজনেস তথা ডিজিটাল কমার্স এর উপর ভ্যাট ০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭.৫ শতাংশ হয়েছে যা বিকাশমান এই খাতের অগ্রগতির জন্য অন্তরায়। আমরা তাই বিকাশমান এই খাতের জন্য অন্তত আগামী ৫ বছরের জন্য পুনরায় ভ্যাট অব্যাহতির দাবি জানান বেসিস সভাপতি।
বেসিস’র জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ফারহানা এ রহমান বলেন, আমাদের ই-কমার্স খাত অগ্রসরমান একটি খাত। ক্রমবর্ধমান এই খাতে শূন্য থেকে সাড়ে সাত শতাংশ ভ্যাট আরোপ এ খাতের অগ্রগতি ব্যাহত করবে। আমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য অনুরোধ করছি।
বেসিস পরিচালক এবং বেসিস ডিজিটাল কর্মাস স্থায়ী কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালক দিদারুল আলম বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে সরকার প্রাধিকার প্রদান করছে। একইসাথে ই-কমার্স খাতে ভ্যাট আরোপ এ খাতকে অগ্রসর হতে দেবে না।
বেসিস ডিজিটাল কর্মাস স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল বলেন, আমাদের দেশের মানুষ অনলাইনে কেনাকাটায় অভ্যস্ত হতে শুরু করেছে। অনলাইনে কেনাকাটায় ভ্যাট আরোপ করলে বেশি দামে মানুষ আর অনলাইনে কেনাকাটা করতে চাইবে না। ই-কমার্স গ্রাহক হারাবে। ক্রমবর্ধমান এ খাত স্থবির হয়ে পড়বে।