আজ ১ সেপ্টেম্বর। বাংলাদেশের গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের স্বপ্নদ্রষ্টা প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম সিদ্দিকের দ্বাদশ মৃত্যু বার্ষিকী। মৃত্যুর ১২ বছর পর আজও তিনি বাংলার আকাশে শুক্লপক্ষের দ্বাদশী উত্তীর্ণ পূর্ণিমার চাঁদের মতোই আলো ছড়াচ্ছেন নিজ কর্মগুণে। প্রয়াণের একযুগেও তিনি একাকার হয়ে আছেন সময়ের পরতে পরতে। কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করছেন।
কোনো আয়োজন ছাড়াই এই বীর মুক্তিযোদ্ধা, সমৃদ্ধ বাংলাদেশের কারিগর এবং এলজিইআরডির প্রতিষ্ঠাতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন অগণিত অনুরাগী। অনলাইন সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে স্মরণ করছেন, তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছেন প্রকৌশলী থেকে শুরু করে গুণমুগদ্ধ নতুন প্রজন্ম। প্রকৌঃ কামরুল ইসলাম সিদ্দিক স্যার ফ্যানস্ পেজে নিবেদন করা হচ্ছে অনুরাগীদের অকুণ্ঠ-শ্রদ্ধা।
এদেরই একজন, তার একসময়ের অনুজ সহকর্মী টুটুল সমাজী। নিজের ফেসবুক পেজে সাড়ে ৫ মিনিটের একটি তথ্যচিত্রে স্মরণ করেছেন তথ্য ও প্রযুক্তি ভিত্তিক গ্রামীণ অবকাঠামো প্রতিষ্ঠায় আমৃত্যু কর্মবীর এই কিংবদন্তী প্রকৌশলীকে।
দীর্ঘ স্মৃতিচারণায় তাঁর বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ।
কেবল অনুরাগীই নন, তাঁর অবদানকে স্মরণ করে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে প্রকাশিত ডিজিটাল স্মরণিকায় বলা হয়েছে, ‘মানুষ নির্মাণ করে প্রয়োজনে, সৃষ্টি করে আনন্দে, বুদ্ধির পরিচয় দেয় জ্ঞানে, যোগ্যতার পরিচয় দেয় কৃতিত্বে, নিজের পরিচয় দেয় সৃষ্টিতে’ এই মর্মবাণীর প্রতিবিম্ব ছিলেন কিংবদন্তী প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম সিদ্দিক।
স্মৃতি হাতড়ে এলজিইডির সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. শহীদুল হাসান এক নিবন্ধে লিখেছেন, ১৯৯৯ সালে কামরুল ইসলাম সিদ্দিক এলজিইডি থেকে অবসর নিলেও তার স্বপ্নের প্রতিষ্ঠানকে কখনও ভোলেননি। ১ সেপ্টেম্বর ২০০৮ সালে সুদূর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর আগের দিন নিউজার্সি থেকে এক ই-মেইল বার্তায় তিনি তখন সদ্য অবসরে গমনকারী এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলীকে লিখেছিলেন, ‘এলজিইডি চিফ ইঞ্জিনিয়ার নেভার রিটায়ারস’।
আইইবি স্বর্ণপদক, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী স্বর্ণপদক, শেরেবাংলা স্বর্ণপদক, বাংলা একাডেমি সম্মাননা, মাহাত্মা গান্ধী পিস অ্যাওয়ার্ড এবং জাইকা মেরিট অ্যাওয়ার্ডের মতো ডজন খানেক পুরস্কার জয়ী প্রচারবিমুখ প্রয়াত এই কর্মবীরকে স্মরণ করেছেন সংবিধান প্রণেতা ডঃ কামাল হোসেন, পানি সম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান, সাংবাদিক নইম নিজামের মতো সমাজের নানা স্তরের বিদগ্ধ জনেরা। প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম সিদ্দিকের চিন্তা এখনো সমান প্রাসঙ্গিক বলে মনে করছেন প্রত্যেকেই।