নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শক্তির মাধ্যমে এশিয়া অঞ্চলের জন্য উচ্চ রেজ্যুলেশনের বিস্তারিত জনসংখ্যা ঘনত্বের মানচিত্র তৈরি করেছে সামাজিক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক ফেসবুক। মানচিত্রটি ত্রাণ সংস্থা এবং স্বাস্থ্য সংস্থাগুলোকে প্রয়োজনে মানুষকে সহায়তা করতে খুব ভালোভাবে সাহায্য করবে বলে জানিয়েছেন ফেসবুক রিসার্চ ম্যানেজার এলেক্স পম্পেই।
তিনি জানান, এশিয়ার বৃহৎ পরিসরের সামাজিক, স্বাস্থ্য ও পরিকাঠামো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনকে আরো গতিশীল করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং বিগ ডেটা ব্যবহারের মাধ্যমে ফেসবুক গুরুত্বপূর্ণ এনজিও এবং গবেষণা অংশীদারদের সাথে একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে হালনাগাদ ম্যাপটি ফেসবুক পেজ Humanitarian Data Exchange লিংক থেকে ডাউনলোড করা যাবে।
জানাগেছে, ফেসবুক তার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দক্ষতার সাথে প্রকাশ্য ও বাণিজ্যিকভাবে উপলব্ধ ডেটাসেটগুলোর সমন্বয় করে এই জনসংখ্যা ম্যাপটি তৈরি করেছে যা অন্য যেকোন উত্সের তুলনায় ৩ গুণ বেশি বিস্তারিত। এই উচ্চ রেজুলেশনযুক্ত জনসংখ্যা ঘনত্বের ম্যাপটি ৩০-মিটার গ্রিড টাইলসের মধ্যে বসবাসরত মানুষের সংখ্যা অনুমান করবে এবং পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের পাশাপাশি প্রজননক্ষম মহিলাদের সংখ্যা ও অন্যান্য ডেমোগ্রাফিক নির্ণয় করতে সহায়তা করবে।
উচ্চ রেজ্যুলেশনের স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই প্রচলিত রয়েছে। কিন্তু ফেসবুকের এই ম্যাপিং প্রকল্প আসার আগে স্বেচ্ছাসেবীদেরকে কয়েক লাখ বর্গমাইলের অসংখ্য ছবির মধ্যে ছোট শহর বা বিচ্ছিন্ন গ্রাম খুঁজতে ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যয় করতে হতো।
ফেসবুক টিম এই সমস্যা সমাধান করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ব্যবহার করেছে যা দক্ষতার সঙ্গে পিটাবাইট স্কেলে ডেটা সংগ্রহ করে। উদাহরণস্বরূপ, X দেশে কোন ভবন আছে কি না তা খোঁজার জন্য কম্পিউটার ভিশন সিস্টেম ১১.৫ বিলিয়ন আলাদা ছবি নিরীক্ষণ করে এবং কয়েকদিনের মধ্যেই টিমটি প্রায় ১১০ মিলিয়ন ভবন খুঁজে পায়।
এ বিষয়ে ফেসবুকের রিসার্চ ম্যানেজার এলেক্স পম্পেই বলেন, “যখন থেকে পিস কর্পোরেশনে আমি মানবকল্যানমূলক কাজ নিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করি তখন থেকে আজ পর্যন্ত, এমনকি কিছুদিন আগে ২০১৯ ওয়ার্ল্ড হেলথ এসেম্বলি-তেও আমি বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনায় বিষয়টি উপলব্ধি করেছি যে একটি নির্ভূল জনসংখ্যা পরিসংখ্যান থাকাটা খুবই আবশ্যক। এই ম্যাপগুলো ফেসবুক ও কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মত শীর্ষস্থানীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতার ফলাফল প্রদর্শন করে যা জনগণের তথ্যের উৎস ও মেশিন লার্নিংকে সমন্বিত করে বিশ্বে তথ্যচালিত মানবকল্যানমূলক প্রকল্পগুলোকে সমৃদ্ধ করে।”
প্রসঙ্গত, পৃথিবীর সমগ্র জনসংখ্যার জন্য সবচেয়ে বিস্তারিত ও নিখুঁত একটি ম্যাপ তৈরি করতে ফেসবুক তার শক্তিশালী কম্পিউটিং ক্ষমতা, ডেটা সায়েন্স দক্ষতাকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় ব্যবহার করছে। এছাড়াও ফেসবুক কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল আর্থ সায়েন্স ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক (সিআইইএসআইএন (http://www.ciesin.org/) এর সাথে অংশীদারিত্ব স্থাপন করেছে যেন প্রচেষ্টাটি ফেসবুক ব্যবহারকারী সব দেশগুলোতে সর্বোত্তম প্রশাসনিক তথ্য সরবরাহ করতে পারে।