রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সার্ভার থেকে প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহকের নথি গায়েব হওয়ার পর ২৬ হাজার ৭৭৭টি নথি উদ্ধার হয়েছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে রাজউক। একইসঙ্গে ওই ৩০ হাজার নথি হ্যাকাররা হ্যাক করেছিল বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ মে) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি শওকত আড়ী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ তথ্য জানিয়েছেন রাজউকের আইনজীবী ইমাম হাসান।
তিনি বলেন, ৩০ হাজার নথি হ্যাক করেছিল হ্যাকাররা। তার মধ্যে ২৬ হাজার ৭৭৭ নথি উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে গত ২ জানুয়ারি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সার্ভার থেকে প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহকের নথি গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনায় ব্যাখ্যা তলব করেন হাইকোর্ট। ৩০ দিনের মধ্যে রাজউকের চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দাখিল করতে নির্দেশ দেন আদালত। এ বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত তৎকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
একইদিন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। এসময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ৬ ডিসেম্বর রাজউকের সার্ভার থেকে ভবন নির্মাণের অনুমোদনসংক্রান্ত প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহকের আবেদনের নথিপত্র গায়েব হয়ে যায়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সার্ভার থেকে প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহকের নথি গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ-১) মো. অলিউল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে রাজউককে একটি কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। এই কমিটি সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেবে।’
মন্ত্রণালয় সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘নথি গায়েবের ঘটনায় সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে কিনা, তদন্ত কমিটি তা বের করবে। একই সঙ্গে এ ঘটনায় কারা জড়িত কিংবা কোনও কারিগরি ত্রুটি ছিল কিনা, সেটি অনুসন্ধান করবে কমিটি। পাশাপাশি কেউ ষড়যন্ত্র করে এ ঘটনা ঘটিয়েছে কিনা, সেটিও দেখা হবে।’
এদিকে ৩০ হাজার গ্রাহকের নথি গায়েবের ঘটনা অনুসন্ধানে ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের পরিচালক (সিস্টেম অ্যানালিস্ট) মো. রাজিব হাসানের নেতৃত্বে কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন, দুদকের উপ-পরিচালক সুভাষ চন্দ্র দত্ত এবং সহকারী পরিচালক মো. আশিকুর রহমান। উক্ত কমিটি নথি গায়েবের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে জানিয়েছে দুদক।