আদালতের আদেশ পাওয়ার পর বাংলাদেশে পাবজি, ফ্রি ফায়ারের মত ‘বিপজ্জনক’ ইন্টারনেট গেমের লিংক বন্ধ করেছে বাংলাদেশে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা- বিটিআরসি। তারপরও বাজারে প্রচলিত বিভিন্ন ভিপিএন সফটওয়্যার ব্যবহার করে সরকারি বিধি-নিষেধ পাশ কাটিয়ে গেইমদুটি খেলার সুযোগ থেকেই যায়। ফলে গেম দুটি দেশে একেবারেই বন্ধ করা যে সম্ভব না সেই প্রশ্ন নিয়ে দ্বিমত নেই অধিকাংশ প্রযুক্তি বোদ্ধার মধ্যেই।
এই প্রশ্নকে স্বীকার করে নিয়েই ডিজিবাংলাকে এ থেকে উত্তরণে অভিভাবক ও শিক্ষকদের সচেতনতা ও অভিভাকত্বের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তাহলে অভিভাবকদের কী করণীয় সেই বিষয়টিতেই একটু নজর দেয়া যাক।
এক্ষেত্রে সন্তানকে নিরাপদে রাখতে সহজ কিছু পদক্ষেপ বাতলে দিয়েছে হার্ভার্ডের নিজস্ব প্রকাশনা।শিশু বা কিশোর বয়সী গেমারদের ক্ষেত্রে খানিকটা নজরদারি আর খানিকটা অভিভাবক সুলভ কৌশল খাটানোর পরামর্শ দিয়েছে হার্ভার্ড মেডিকাল স্কুল।
হার্ভার্ডের গবেষণা অনুযায়ী ৫টি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিলে শঙ্কামুক্ত থাকা সহজতর হবে।
ইএসআরবি রেটিং: সন্তানরা যে ভিডিও গেমটি খেলছে অভিভাকদের তার ইএসআরবি রেটিং দেখে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কেননা গেমে কোন ধরনের কন্টেন্ট আছে সেটি জানা যায় ইএসআরবি রেটিং থেকে।
গেমে সন্তানের প্রতিক্রিয়া: গেমের কন্টেন্ট আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য সন্তানের সঙ্গে নিজেও গেম খেলার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বলা হয়েছে, খেলতে খেলতে নজর রাখতে হবে এসময় সন্তানের অভিব্যক্তি বা আচরণে (শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন) দিয়ে তীখ্ন দৃষ্টি রাখা দরকার। এতে গেমটিতে সন্তান কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে তা বোঝা সম্ভব হবে।
উন্মুক্ত স্থানে খেলা: খেলা-ধূলার বিষয়টি মূলত নির্ভর করে উন্মুক্ত প্রান্তর আর পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ওপর। তাই খেলার পরিবেশটাও হওয়া দরকার তেমন। তাই ভিডিও গেম কনসোল বা কম্পিউটার সন্তানের ঘরে না রেখে বাড়ির এমন জায়গায় রাখা দরকার যেন সেটি বাড়ির সবার সামনেই থাকে।
খেলার সময় নির্ধারণ করা: প্রতিটি কাজের জন্য সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই যেমন বিকেল হলেই খেলার একটা আমেজ চলে আসে তারুণ্যের রক্তে। তাই গেম খেলার সময় নির্দিষ্ট করে দেয়া দরকার। আর এই সময়টা দৈনিক দুই থেকে তিন ঘণ্টার বেশি বরাদ্দ থাকা উচিত নয় বলে মত মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।
খেলাধূলায় মাঠের বিকল্প নেই: ভার্চুয়াল আর বাস্তবতার মধ্যে ফারাক বিস্তর। অনুভূতিতেও এখানে রয়ে যায় ফাঁপা একটা অবস্থান। কনসোলের গেমে শারীরিক কসরৎ হয় না একেবারেই। ফলে সন্তানের শারীরিক বিকাশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই সন্তানকে অনলাইনে ব্যস্ত থাকার বদলে মাঠে খেলতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে সবসময়।
ভিডিও গেমের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে বিতর্ক যেমন আছে, তেমনি বিনোদনের উৎস হিসেবেও এই প্রযুক্তি এখন স্বীকৃতও। ক্ষেত্রবিশেষে এর ‘ঝুঁকিপূর্ণ প্রভাবের ভুক্তভোগী’ হওয়ার ঝুঁকি এড়ানোর সুযোগ নেই বললেই চলে। তাই সন্তানের সঙ্গে বন্ধুসুলভ সম্পর্ক রাখা গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছে হার্ভার্ড মেডিকাল স্কুল।