মিয়ানমারে জান্তার বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ)’ এর প্রতি নিবেদিতপ্রাণ তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী কো টুত (ছদ্মনাম) একটি সত্যিকারের যুদ্ধের ভার্চুয়াল গেম তৈরি করেছেন। তার তৈরি ভিডিও গেমটির নাম ‘ওয়্যার অব হিরোজ – দ্য পিডিএফ গেম’।
এটি মিয়ানমারে ঘটে যাওয়া ‘সত্যি ঘটনার’ ভিত্তিতে তৈরি। এরই মধ্যে সাফল্য দেখিয়েছে গেমটি। দেশটির সামরিক জান্তার ওপর চাপ বাড়ানোর পাশাপাশি সেনাবিরোধী প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রয়োজনীয় তহবিলও আসছে গেমটি থেকে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই গেমের গল্প। নিরাপত্তার স্বার্থে গেমের নির্মাতার ছদ্মনাম হিসেবে তাকে কো টুত হিসেবে পরিচয় দিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি, এ ছাড়া তার অবস্থানও গোপন রাখা হয়েছে।
বিবিসিকে কো টুত বলেন জান্তা বিরোধী সংগ্রামে নিজের শামিল হওয়ার কথা। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশটিতে গ্রেপ্তার হন তার বন্ধু ও বন্ধুর গর্ভবতী স্ত্রী। এই ঘটনার পর টুত প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। নিজের তথ্যপ্রযুক্তি দক্ষতা কাজে লাগিয়ে দেশটির সামরিক শাসন ধ্বংস করে দেওয়ার লক্ষ্য স্থির করেন তিনি। বানিয়ে ফেলেন সত্যিকারের যুদ্ধক্ষেত্র এবং ঘটনার আদলে একটি ভিডিও গেম। ২০২২ সালে সেটি প্রকাশ করেন তিনি।
গেমটি বিনামূল্যেই ডাউনলোড করা যায়। তবে আর্থিক তহবিল পাওয়ার অংশ হিসেবে গেমারদের গেমের মধ্যে থাকা বিজ্ঞাপনগুলো দেখতে হয়। টুতের অনুমান, এখন পর্যন্ত গেমটি থেকে পাঁচ লাখ আট হাজার ডলারের আর্থিক তহবিল উঠেছে।
টুতের দাবি, তিনি প্রতি মাসে গেমটি থেকে ৭০-৮০ হাজার ডলার পাচ্ছেন আর এই সংখ্যা প্রতি মাসেই বাড়ছে।
গেমের মধ্যে পিডিএফ সেনাদলের ভূমিকায় থাকা গেমাররা মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করেন। আর বাস্তবে সেনাদলটি মিয়ানমারে যে ধরনের মিশন পরিচালনা করে, সেভাবেই কাজ করেন। কো টুতের গেমের চরিত্ররা হলো জান্তার বিরুদ্ধে লড়াইরত হিরো হয়ে ওঠা ডাক্তার, মুসলিম ও এলজিবিটি সম্প্রদায়ের সদস্যরা। কো টুতের লক্ষ্য পিডিএফের জন্য তহবিলের পাশাপাশি দেশটির চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো। তার আক্ষেপ, ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধের চেয়ে মিয়ানমারের পরিস্থিতি তুলনামূলক কম সম্প্রচার পাচ্ছে।
ডিবিটেক/বিএমটি