গত এক বছরে দেশের ই-কমার্স খাতে গড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭০ শতাংশ। তবে নিত্য পণ্য বিপননে এই প্রবৃদ্ধির হার ছিলো ৩০০ শতাংশ। আর এই মাধ্যমে বার্ষিক লেনদেন হয়েছে ১৬ হাজার কোটি টাকা। একই ভাবে ই-কমার্সে ডিজিটাল লেনদেন ১০ শতাংশ বেড়ে মোট লেনদেনের ১৫ শতাংশই হচ্ছে ডিজিটালি। এই খাতকে সুসংহত করতে শিগগিরি দুইটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে যাচ্ছে ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-কমার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ- ই-ক্যাব।
বৃহস্পতিবার‘ঘরে থাকাই নিরাপদ, ই-কমার্সই ভবিষ্যৎ’সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সারের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে ই-কমার্স ব্যবসার বিভিন্ন দিক ও ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে গৃহিত বিভিন্ন পদক্ষেপ এতে তুলে ধরা হয়।
ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করোনা সংক্রমণ রোধে সর্বসাধারণকে অনলাইনে কেনাকাটার ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন। আমরা জানি, বিগত বছর করোনার আপদকালীন সময়ে সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিত্যপণ্য ই-কমার্সের মাধ্যমে সচল রাখার নির্দেশনা দিয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরও একইভাবে অনলাইনে নিরাপদে পণ্য ও সেবা সচল রাখার ব্যাপারে পরিপত্র জারি করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে আবেদনের মাধ্যমে ইতোমধ্যে ই-কমার্স ডেলিভারীর সময়সীমা সন্ধ্যা ৬টা থেকে বর্ধিত করে রাত ১২টা পর্যন্ত করা হয়েছে।
ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, চলতি বছর ই-ক্যাব চারটি মূখ্য বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা তৈরী করেছে। বিষয়গুলো হলো গ্রামীণ ই-কমার্স, ক্রস বর্ডার ই-কমার্স, সোস্যাল মিডিয়া কমার্স ও ই-কমার্সে অভিযোগ ব্যবস্থাপনা। তারই ভিত্তিকে আগামী ১১ এপ্রিল ‘‘রুরাল টু গ্লোবাল’’ শিরোনামে একটি পলিসি কনফারেন্স এর আয়োজন করা হচ্ছে। ধারাবাহিকভাবে অন্যান্য বিষয়েও পলিসি সংক্রান্ত কর্মসূচী গ্রহণ করা হবে। এছাড়া সরকারের ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা বাস্তবায়নসহ পরিস্থিতির আলোকে বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে করনীয় পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করবে ই-ক্যাব।
ই-ক্যাবের ডিরেক্টর আসিফ আহনাফ এর সঞ্চালনায় ই-ক্যাবের অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল হক অনু সংবাদ সম্মেলনে ই-কমার্সের বিভিন্ন দিক এবং ই-ক্যাবের কার্যক্রম তুলে ধরেন।
অর্থ সম্পাদক বলেন, শুধুমাত্র নিত্যপণ্যে ২০২০ সালের শেষ ৮ মাসে লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার কোটি টাকা, বর্তমানে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজারের বেশী ডেলিভারি হচ্ছে প্রতিদিন, ৫০ হাজার নতুন কর্মসংস্থান, ৬ হাজার তরুণদের প্রশিক্ষণ, ১৬ হাজার কোটি টাকার সার্বিক ডিজিটাল লেনদেন । ই-কমার্সে বিগত বছর সমূহে যেখানে ২৫% প্রবৃদ্ধি ছিল গত বছর তা ৭০-৮০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে এবং ক্ষেত্র বিশেষে ৩০০% প্রবৃদ্ধিও ঘটেছে, বিশেষ করে নিত্যপণ্য ও খাদ্য ব্যবসায়।
তিনি আরো বলেন, করোনা চলাকালীন সময়ে সদস্যদের অর্থসংকট মোকাবিলায় ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে যোগযোগ করা হয়। ই-ক্যাবের এই প্রচেষ্টায় প্রাইম ব্যাংক ও সিটি ব্যাংকের সাথে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে মোট ১৩ টি প্রতিষ্ঠানকে জামানতবিহীন বিভিন্ন মেয়াদী ঋণের ব্যবস্থা করা হয়। আরো ১৩৭টি প্রতিষ্ঠানের আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
ই-ক্যাবের জয়েন্ট সেক্রেটারী ই-ক্যাবের ডিরেক্টর জনাব আশীষ চক্রবর্তী, জিয়া আশরাফ, নাসিমা আক্তার নিশা এবং ডিরেক্টর সাইদ রহমান, জেনারেল ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম শোভন, ডেপুটি ম্যানেজার মাহমুদ উর রহমান উপস্থিত ছিলেন।