ধর্ম অবমাননা ও প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় আলোচিত সেফাত উল্লাহ ওরফে সেফুদাকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (০৭ নভেম্বর) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত এই রায়ের আদেশ দেন।
রায়ে বলা হয়, আসামির পক্ষে অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেননি বাদীপক্ষ। এ কারণে আসামিকে খালাস দেওয়া হলো।
ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম জানিয়েছেন, এই মামলায় দীর্ঘদিন ধরে কোনো সাক্ষী না আসায় আদালত ফৌজদারি কার্যবিধি ২৬৫ (ঝ) ধারায় তাকে মামলা থেকে খালাস দেন।
গত বছর ২৩ নভেম্বর এই মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়। মামলাটি করেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য আলীম আল রাজী জীবন। ট্রাইব্যুনাল পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এরপর মামলার অভিযোগ তদন্ত শেষে একই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের উপপরিদর্শক পার্থ প্রতিম ব্রহ্মচারী সেফুদার বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় প্রতিবেদন দাখিল করেন।
ট্রাইব্যুনাল তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে ২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সেফুদার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। পরবর্তীতে ২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি সেফায়েত উল্লাহ অনলাইনে একাধিকবার বিভিন্নভাবে ভিডিও আপলোড করেছেন, যা ভাইরাল হয়েছে। তিনি এসব ভিডিওর মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অনেকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ, অশ্লীল ও আক্রমণাত্মক অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। এতে আক্রমণাত্মক, মিথ্যা বা ভীতি প্রদর্শক তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ, মানহানিকর তথ্য প্রকাশ এবং একাধিক গোষ্ঠীর মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি করেছেন। ফলে দেশের আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে। যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অপরাধ।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল বাদী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখতে পান যে, অস্ট্রিয়া প্রবাসী সিফাত উল্লাহ ফেসবুক লাইভে এসে পবিত্র কোরআন সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের বাজে কথা বলছেন এবং আল কোরআনকে অবমাননা করছেন, যা সমগ্র ইসলামী বিশ্বকে মারাত্মকভাবে আহত করছে। লাইভটি ভাইরাল হওয়ায় প্রতিবাদের ঝড় উঠে।
অস্ট্রিয়া প্রবাসী সেফাত উল্লাহ সেফুদা চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি থানার চেরিয়ারা গ্রামের মৃত আলী আকবর মজুমদারের ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় অবস্থান করে ফেসবুকের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনীতি, ধর্মসহ বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য প্রচার করে ভাইরাল হন।