অনশন শুরুর সপ্তম দিনেও অনশন ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন না করার কথা জানিয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনশনকারীরা। অনশন ও অবস্থান কর্মসূচিসহ নানা কর্মকাণ্ডের মাধ্যমেই নিজেদের দাবিতে অনড় শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার রাতে দুই ঘণ্টার শিক্ষার্থীদের দুটি পক্ষের আলোচনায় মতৈক্য না হওয়ায় এই কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধানে অনড় তারা। রাত ৯টা ২৫ মিনিটে অনশন পালনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তাদের মুখপাত্র পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র শাহরিয়ার আবেদিন।
তিনি বলেন, ‘উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরা অনশন চালিয়ে যাবো।’
এরআগে আন্দোলনরতদের একটি দল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে সমবেত হয়ে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার শপথ নেন। সে সময় তারা অনশনকারীদের অনশন ভাঙার অনুরোধ জানান। এ দলের নেতৃত্বে ছিলেন মোহাইমিনুল বাশার রাজ।
টানা ছয় দিনেরও বেশি সময় (প্রায় ১৫০ ঘণ্টা) ধরে চলা অনশনে বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ও কয়েকজন অনশনস্থলেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবু অনশন ভাঙেননি একজনও। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে শুরু থেকেই অবস্থান নিয়ে আছেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বিকাল ৫টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে অনশন পালন করছেন ৯ শিক্ষার্থী। সেই সঙ্গে অনশন পালন করতে গিয়ে অসুস্থ হওয়ায় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন আরও ১৯ শিক্ষার্থী।
অনশনকারীরা কর্মসূচিতে অটল থাকার ঘোষণা দেয়ার পর রাজ বলেন, ‘আমরা তাদের শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে তাদের অনশন ভাঙার অনুরোধ করেছিলাম। কারণ তাদের জীবনের চেয়ে মূল্যবান কিছু নেই। আমরা আমাদের কোনো সহযোদ্ধা হারাতে চাই না। তবে তাদেরকে জোড় করার কিছু নেই। তাদের ওপর কিছু চাপিয়ে দেব না। আমরা তাদের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাই।
‘এর পরেও আমরা অনশন থেকে সড়ে এসে আন্দোলনের বিকল্প পথ খোঁজা যায় কি না এ ব্যাপারে তাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাব।’
শাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শুরু ১৩ জানুয়ারি। ১৯ জানুয়ারি দুপুর ৩টা থেকে উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী।
তাদের মধ্যে একজনের বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি অনশন শুরুর পরদিনই বাড়ি চলে যান। ২৩ জানুয়ারি আরও চারজন ও ২৪ জানুয়ারি একজন শিক্ষার্থী অনশনে যোগ দেন।