করোনা ভাইরাস বর্তমানে বিশ্বে মহামারী ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। এই ভাইরাসে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। মানুষ কিভাবে এই করোনা ভাইরাস থেকে নিজেদেরকে আগাম সতর্ক করবে তা জানাতে হাজির হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ‘টুমোরোস ওয়ার্ল্ড (কোভিড-১৯)’ নামে নতুন একটি ওয়েব সফটওয়্যার।
এই সফটওয়্যারটি তৈরি করেছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। এরা হলেন ২০১৪-১৫ সেশনের ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আহমেদ কাওছার এবং ২০১৬-১৭ সেশনের বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী এসকে ফয়সাল আহমেদ।
সফটওয়্যারটি নিয়ে আহমেদ কাওছার বলেন, আমাদের কাজটি হচ্ছে করোনা ভাইরাস নিয়ে। এখন করোনা ভাইরাস এত দ্রুত হারে বাড়ছে যে, এর ভবিষ্যত কি হবে কেউ বুঝতেছে না। তাই কয়েকদিন ধরে আমরা ভাবছিলাম সেটির সঠিক রেটটা কিভাবে বের করব। শুরু হলো আমাদের গবেষণা। একে একে অর্ডিনারি মেশিং লার্নিং, ডিপ লার্নিং, স্ট্যাটিস্টিক্যাল এলগোরিদম ব্যর্থ হওয়ার পর একটি নিউ এলগোরিদমের কথা চিন্তা করলাম। যেই চিন্তা সেই কাজ। প্রোপোজড করে ফেললাম একটি নতুন নন-প্যারামেট্রিক স্ট্যাটিস্টিক্যাল এন্ড অনলাইন মেশিং লার্নিং এলগোরিদম। যার নাম দিলাম “লার্নিং ফর টুমোরো”। এই এলগোরিদম নিয়ে সামনে আরও কাজ করা হবে ইনশাল্লাহ।
আহমেদ কাওছার আরও বলেন, আমাদের এলগোরিদমটি মূলত যে কাজটি করবে তা হচ্ছে- আগামী ৭-১০ দিন পর করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কতো হতে পারে, কয়জন মানুষ মারা যেতে পারে, আর কয়জন সুস্থ হতে পারে- এগুলোর ধারনা দিবে। যাতে আমরা সবাই ৭-১০ দিন আগে থেকে সচেতন হতে পারি, আর ভবিষ্যতের জন্য করণীয়গুলো ঠিক করে নিতে পারি। তখন আমরা করনোর বিরুদ্ধে লড়ায় করতেও সক্ষম হবো।
নোবিপ্রবির এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, আমাদের এলগোরিদমটি প্রথমে প্রতিদিনের ডাটার উপর বেস করে লার্নিং করবে। যেমন আজকের ডাটার উপর সে লার্নিং হবে এরপর আগের ডাটার রেটের সাথে একটি সম্পর্ক করবে এবং একটি ফাংশন দাঁড় করাবে। যেটি এমনভাবে তৈরি হবে যাতে ইররটা সবচাইতে কম হয়। তারপর সে প্রেডিকশন করবে ৭-১০ দিনের করোনার অবস্থা কি হবে। এই প্রেডিকশনটা আমাদের পূর্ব প্রস্তুতির জন্য অনেক বেশি সাহায্য করবে। যাতে আমরা করোনা মোকাবেলা করতে সক্ষম হই। আপতত আমরা সেটির ২টি ভার্সন করেছি। একটি পুরো ওয়ার্ল্ডের জন্য অন্যটি বাংলাদেশের জন্য। বাংলাদেশের ক্ষেত্র আমাদের বড় প্রবলেম হচ্ছে ডেটা এত কম যে, মাত্র ২০-২২টা ডেটা দিয়ে ভবিষ্যত বের করা খুবই কঠিন। তবুও আমারা করেছি যাতে প্রতিদিন এলগোরদিমটি লার্নিং করতে পারে।
আর আমরা প্রোগ্রামটি সবার জন্য একটি ওয়েব সফটওয়্যার আকারে ওপেন করে দিয়েছি। যাতে যে কেউ সেখানে গিয়ে ভবিষতের একটি ধারনা পাবে, আর নিজেই পূর্ব প্রস্তুতি নিতে পারে।