দেশের শতভাগ চাহিদা মিটিয়ে ২০২২ সালের মধ্যে স্মার্টফোন রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে আনুষ্ঠানিক ভাবে নাম লেখাতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কেননা ইতিমধ্যেই দেশে কারখানা স্থাপন করে উৎপাদন শুরু ৯টি বিদেশী ব্র্যান্ডের মধ্যে ৫টি ব্র্যান্ড হ্যান্ডসেট আমদানি করা বন্ধ করে দিয়েছে। শীর্ষ প্রতিটি ব্র্যান্ডেই এ দেশে উৎপাদিত হ্যান্ডসেট দিয়েই স্থানীয় বাজার চাহিদা মেটাচ্ছে। উৎপাদকরা মনে করছেন, আগামী বছরের মধ্যেই স্মার্ট ফোনোর স্থানীয় চাহিদার ৯৫ শতাংশই দেশ থেকেই মেটানো সম্ভব হবে।
বাজার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছরে প্রায় ৫৪ লাখ স্মার্টফোন দেশেই উৎপাদন করেছেন স্থানীয় উৎপাদকেরা। বাজার চাহিদার বাকি ২৪ লাখ ফোন আমাদানী বা অবৈধ পথে দেশে প্রবেশ করেছে। ২০১৯ সালে আড়াই কোটি ফিচার ফোন সহ মোট ৩ কোটি ২৮ লাখ ইউনিট হ্যান্ডসেট বিক্রি হয়েছে।
হিসাব অনুযায়ী, বিদায়ী বছরে ফিচার ফোন বিক্রি হয়েছে ২ কোটি ৫১ লাখ ইউনিট। এর মধ্যে স্থানীয় ভাবে সংযোজিত হ্যান্ডসেটের সংখ্যা ছিলো এক কোটি ৪২ লাখ ইউনিট। আমদানি করা হয়েছে এক কোটি ২৫ হাজার ইউনিট এবং অবৈধ পথে দেশে প্রবেশ করেছে ৬২ লাখ ইউনিট হ্যান্ডসেট। এসব ফোনগুলোর মধ্যে বেসিক ফোনের গড় মূল্য ছিলো এক হাজার ৩৯৪ টাকা। এবং স্মার্টফোনের গড় মূল্য ছিলো ৮ হাজার ৪৬৯ টাকা।
স্মার্টফোনের মধ্যে ৬ হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে ২৩.৮০ লাখ ইউনিট। ৬-৮ হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে ১৯.২০ ইউনিট এবং ১২ হাজার টাকার ওপরের ফোন বিক্রি হয়েছে ১৭.৭০ ইউনিট।
এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই স্মার্টফোন রপ্তানি করছে বাংলাদেশ। ইতিমধ্যেই ওয়ালটন ১ লাখ ডলারের ফোন আমেরিকা রপ্তানী করেছে।
বাজার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর দেশে ফিচার ফোনের উৎপাদন বেড়েছে মাত্র ২০ শতাংশ। এই উৎপাদন চলতি বছরে বড়জোর ৩০ শতাংশে পৌঁছবে। ৬ ডলার মূল্যের একটি ফিচার ফোনের সরঞ্জাম আমদানিতেই যেহেতু ২ ডলারের মতো শুল্ক গুনতে হয় এবং বাজার চাহিদা যেহেতু ক্রমেই কমছে সে ক্ষেত্রে সামনের সময়ে দেশে উৎপাদিত ফিচার ফোন খুব একটা বাড়বে না বলেই মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মোবাইল ইম্পোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন (বিএমপিআইএ) জয়েন্ট সেক্রেটারি মোহাম্মাদ মেসবাহ উদ্দিন ডিজিবাংলা-কে বলেন, গত বছর দেশের বাজারে ৭০ লাখ স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে ৫৫ লাখ স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত হয়েছে। অপরদিকে মোট বিক্রিত আড়াই কোটি হ্যান্ডসেটের মধ্যে মধ্যে এক কোটি ৮০ লাখ ফিচার ফোন বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে দেশে উৎপাদিত হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজারের মতো।
তিনি জানান, দেশে এখন ৪টি কোম্পানি বড়জোর ৫ লাখের মতো ফিচার ফোন উৎপাদন করছে। চলতি বছরে নতুন প্লান্ট স্থাপন হলেও এই উৎপাদন ২০ শতাংশ থেকে বড়জোর ৫০ শতাংশে উন্নীত। তবে
শাওমি এ বছর প্রোডাকশন শুরু করার পর স্থানীয় চাহিদার ৯৫ শতাংশ স্মার্টফোনের যোগান দিতে সক্ষম হবে স্থানীয় উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলো। এ বছরের মধ্যেই দেশের চাহিদার ৮০ শতাংশ স্মার্টফোনের চাহিদা দেশে উৎপাদিত ফোনের মাধ্যমেই যোগান দেয়া সম্ভব হবে।